Pluto Supervolcano: হুবহু আগ্নেয়গিরি, কিন্তু আগুন বা লাভা নয়, মুখ খুললেই বেরোয় বরফ-কাচ, প্লুটোয় এ কেমন সৃষ্টি!
Science News: আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থার নিউ হরাইজন্স মিশনের আওতায় কৃত্রিম উপগ্রহের তোলা ছবিতে ওই ‘তুষারগিরি’র সন্ধান মিলেছে বলে জানা গিয়েছে।
নয়াদিল্লি: একসময় গ্রহ বলে ধরা হলেও, পদাবনতি হয়েছে প্লুটোর। গ্রহ বলে আর গন্য করা হয় না তাকে। তাই বলে প্লুটোকে নিয়ে কৌতূহলে ঘাটতি নেই। আজও তাকে নিয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। আর তাতেই নতুন তথ্য উঠে এল। প্লুটোর বুকে Ice Volcano রয়েছে বলে ইঙ্গিত পেলেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, প্লুটোর বুকে আগ্নেয়গিরির মতো পাহাড় রয়েছে। তবে তার জ্বালামুখ থেকে উত্তপ্ত, গলিত পাথর, ছাই বা গ্যাস বেরিয়ে আসে না, বরং বেরিয়ে আসে বরফ, জল এবং কাচের মতো স্বচ্ছ পদার্থ। (Pluto Supervolcano)
আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থার নিউ হরাইজন্স মিশনের আওতায় কৃত্রিম উপগ্রহের তোলা ছবিতে ওই ‘তুষারগিরি’র সন্ধান মিলেছে বলে জানা গিয়েছে। কিলাদজ ক্যালডেরা নামের ওই পাহাড়টিকে এতদিন বৃহদাকার গহ্বর বলেই মনে করতে বিজ্ঞানীরা। কিন্তু সম্প্রতি আরও ভাল করে নিরীক্ষণ করতে গিয়ে দেখা যায়, সেটি আসলে আগ্নেয়গিরির মতো একটি পাহাড়। বহু বার সেটি থেকে নানা পদার্থের উদগীরণ ঘটেছে। তবে গলিত লাভা নয়, মূলত বরফের উদগীরণ ঘটেছে। (Science News)
এই ধরনের প্রাকৃতিক সৃষ্টিকে বলা হয় Cryovolcanoes অথবা Ice Volcanoes.আমাদের সৌরজগতের মুষ্টিমেয় কিছু অঞ্চলেই এর অস্তিত্ব রয়েছে। মূল গ্রহাণু বলয়ের অন্তর্গত বামনগ্রহ সিয়ারিজে এই ধরনের পাহাড় রয়েছে। মহাকাশযান ক্যাসিনি থেকে শনির উপগ্রহ এনসেলাডাসকে ঘিরে থাকা পালকের মতো যে ছটা চোখে পড়ে, তাও আসলে এমন পাহাড় থেকে নির্গত বরফ এবং জল। এর পাশাপাশি, প্লুটোর বুকেই এমন আরও দু’টি পাহাড় রয়েছে, Wright Mons এবং Piccard Mons.
আরও পড়ুন: NASA's Kepler Mission: ৭ গ্রহের পৃথক 'সৌরজগতের' সন্ধান, আয়তনে পৃথিবীর থেকে বড় সবকটিই !
চন্দ্রপৃষ্ঠে বৃহদাকার গহ্বরগুলির সৃষ্টির নেপথ্যে গ্রহাণু আছড়ে পড়াকে দায়ী করা হয়। প্লুটোর বুকে তৈরি হওয়া কিলাদজের সৃষ্টি নিয়েও একাধিক তত্ত্ব উঠে আসছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, কিলাদজ আকারে খানিকটা উদ্ভট, তাই একে গহ্বর বলা যায় না। এর চতুর্দিক ঘেরা জলীয় বরফে, সাধারণত যা মিথেনের স্তরের নীচে লুকনো থাকে। আবার মাটির নীচে, পাতের ফাটলের মধ্যেও চোখে পড়ে।
প্লুটোর বুকে কিলাদজের চারিদিকে থাকা বরফের মধ্যে অ্যামোনিয়া থাকার প্রমাণও পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। অ্যামোনিয়া জলকে বরফ হিসেবে জমতে দেয় না, ফলে তরল আকারে, বরফের-লাভা হিসেবে বয়ে যেতে পারে। শুধু তাই নয়, অ্যামোনিয়া থেকেই অ্যামিনো অ্যাসিডের উৎপত্তি, যা প্রাণসৃষ্টির অন্যতম মূল উপাদান। ফলে প্লুটোর বুকে এই নয়া আবিষ্কার ঘিরে কৌতূহল বাড়ছে।
কিলাদজের চতুর্দিকে যে জলীয় বরফ রয়েছে, তা থেকে বিজ্ঞানীদের ধারণা, অতি সম্প্রতি ফের উদগীরণ ঘটেছে সেখানে। কিলাদজের বয়সও খুব বেশি নয় বলে মত তাঁদের। বরফের উদগীরণ কোথা থেকে ঘটছে, এই মুহূর্তে তা-ই ভাবিয়ে তুলেছে বিজ্ঞানীদের। প্লুটোর বুকে একসময় সাগরের অস্তিত্ব ছিল। সেটি জমে গিয়ে প্লুটোর মাটির নীচে চাপা পড়ে গিয়ে থাকলেও, তার কিছু অংশ এখনও তরল অবস্থায় রয়েছে এবং সেই তরলই কিলাদজের মাধ্যমে উপরে উঠে আসছে বলে মত বিজ্ঞানীদের একাংশের।