(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
Science News: নোনাজলে ভিজত লালগ্রহের মাটি, অশান্ত সমুদ্র ছিল মঙ্গলের বুকেও, উঠে এল গবেষণায়
Space Science: খুব বেশিদিন নয়, মাত্র ৪ লক্ষ বছর আগেও হয়ত মঙ্গলে জলের স্রোত বইত।
কলকাতা: খুব বেশিদিন নয়, ৪ লক্ষ বছর আগেও মঙ্গল গ্রহে জলের অস্তিত্ব ছিল হয়ত। নয়া গবেষণায় এ বার এমনই তথ্য উঠে এল। মঙ্গলের এবড়ো খেবড়ো ভূমি, বালিয়াড়ি এবং সর্বোপরি ভৌগলিক চরিত্র তারই জানান দিচ্ছে বলে মত বিজ্ঞানীদের (Space Science)। তাঁদের দাবি, মঙ্গলের বুক চিড়ে একসময় সমুদ্রের নোনাজল বইত (Science News)।
'সায়েন্সেস অ্যাডভান্সেস' জার্নালে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে
চিনের ঝুরং রোভার মঙ্গলের যে ছবি পাঠিয়েছে, তা খতিয়ে দেখেই এমন দাবি করছেন বিজ্ঞানীরা। সেই নিয়ে বিশদ একটি গবেষণাও প্রকাশিত হয়েছে। গত ২৮ এপ্রিল 'সায়েন্সেস অ্যাডভান্সেস' জার্নালে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, মঙ্গলের বালিয়াড়ি, মাটির গঠন এবং খানা-খন্দের গঠন দেখে বোঝা যাচ্ছে, এক সময় তরল, নোনা জল বইত সেখানে।
রাসায়নিক বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা আরও একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। আর তা হল, খুব বেশিদিন নয়, মাত্র ৪ লক্ষ বছর আগেও হয়ত মঙ্গলে জলের স্রোত বইত। আগামী দিনে এই গবেষণা মঙ্গলের প্রাণের খোঁজ চালানোর ক্ষেত্রে আরও সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বেজিংয়ের চাইনিজ অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস-এর ভূবিজ্ঞানী ঝিয়াওগুয়াং কিং এর বিশদ ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাঁর মতে, আজ থেকে ৪ লক্ষ বছর আগে মঙ্গলগ্রহের ভৌগলিক পরিবেশ বর্তমান দিনের পৃথিবীর মতোই ছিল। ফলত সেই সময় মঙ্গলেও জল তরল অবস্থাতেই ছিল। গ্রহের নিম্নতর অক্ষাংশে নোনাজল বয়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: Saturn News Moons: আয়তনে শপিং মলের চেয়েও ছোট কোনও কোনওটি, শনির আরও ৬২টি উপগ্রহের সন্ধান মিলল
যে ঝুরং রোভার থেকে প্রাপ্ত তথ্যে ভর করে এই নয়া গবেষণা, সেটি চিনের প্রথম রোভার। ২০২১ সালে মে মাসে মঙ্গলের মাটি ছোঁয় সেটি। মঙ্গলের বিষুবরেখার উত্তরের ইউটোপিয়া প্ল্যানিশিয়া অঞ্চলে সেটি পদার্পণ করে। তার পর ন'মাস ধরে ছবি তোলা থেকে, মঙ্গলের মাটির রাসায়নিক গঠন নিরীক্ষণ, ভূমির ফাটলের পরিমাপও সংগ্রহ করে গিয়েছে সেটি।
ঝুরং রোভারের পাঠানো ছবি প্রথম বার যখন দেখেন ঝিয়াওগুয়াং, কার্যতই চমকে উঠেছিলেন তিনি। কারণ প্রথম ছবিতেই জলের কার্যকলাপের সাক্ষর চোখে পড়ে বলে জানিয়েছেন। শুধুমাত্র বাতাসের পক্ষে ওই ধরনের ভূতাত্ত্বিক চিহ্ন রেখে যাওয়া সম্ভব নয় বলে অনুধাবন করেন তিনি। উল্কাপাতের ফলে মঙ্গলের বুকে সৃষ্ট গহ্বরও পরীক্ষা করে দেখা হয়। তাতে দেখা যায়, সেটি ১৪ থেকে ৪ লক্ষ বছর আগে সৃষ্টি হয়। তাই কোটি কোটি নয়, কয়েক হাজার বা লক্ষ বছর আগেও মঙ্গলের বুকে জলের অস্তিত্ব ছিলে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
নাসা মঙ্গলে বরফ থাকার প্রমাণ পেয়েছিল আগেই
নাসার গ্রহবিজ্ঞানী আদিত্য খুল্লার জানিয়েছেন, আগেও এই ধরনের চিহ্ন পেয়েছেন তাঁরা। তবে সেগুলি মূলত অনেক পুরনো ছিল। এর আগে, আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা মঙ্গলে বরফ থাকার প্রমাণ পেয়েছিল। গ্রহের উত্তর অক্ষাংশে জলের অস্তিত্বে থেকে থাকতে পারে বলে জানিয়েছিল নাসা। তবে ওই এলাকা বসবাসের পক্ষে অত্যন্ত শীতল বলে দাবি করেছিল তারা। কিন্তু নয়া গবেষণায় যে তথ্য উঠে এসেছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে, নিম্নতর অক্ষাংশে তাপমাত্রার হার যা, তা প্রাণ ধারণের পক্ষে উপযোগী।