Mohun Bagan: লাল কার্ডের ধাক্কায় রক্ষণ টলমল, সমর্থকদের আশ্বস্ত করছেন মোহনবাগান কোচ
ISL: গত ম্যাচে দলের তিন-তিনজন নির্ভরযোগ্য সদস্য লাল কার্ড দেখায় এই ম্যাচ থেকে ছিটকে গিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে উইঙ্গার লিস্টন কোলাসো ছাড়াও বাকি দু’জনই রক্ষণের ভরসা। একজন আশিস রাই, অন্যজন হেক্টর ইউস্তে।
কলকাতা: তিন দিন আগেই মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে ম্যাচে দলের তিন নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড় লাল কার্ড দেখে পরের ম্যাচ থেকে ছিটকে গেলেও, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে রাজি নন মোহনবাগানের হেড কোচ হুয়ান ফেরান্দো (Juan Ferrando)।
মরশুমের শুরু থেকে চোট-আঘাতে জর্জরিত মোহনবাগান (Mohun Bagan) শিবির ক্রমশ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছিল আহত খেলোয়াড়রা ক্রমশ ফিরে আসতে শুরু করায়। কিন্তু এর মধ্যেই ফের বিপত্তি। গত ম্যাচে দলের তিন-তিনজন নির্ভরযোগ্য সদস্য লাল কার্ড দেখায় এই ম্যাচ থেকে ছিটকে গিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে উইঙ্গার লিস্টন কোলাসো ছাড়াও বাকি দু’জনই রক্ষণের ভরসা। একজন আশিস রাই, অন্যজন হেক্টর ইউস্তে। এই অবস্থায় শনিবার এফসি গোয়ার আক্রমণের ঝাঁঝ রুখবেন কে, এই প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে।
কিন্তু সমর্থকদের আশ্বাস দিয়ে কোচ জানিয়ে দিলেন, “আমাদের রক্ষণে কোনও সমস্যা হবে বলে মনে হয় না। আমরা অন্য পরিকল্পনা করে রেখেছি। সমস্যা হল সময় কম পেয়েছি। সমস্যার সমাধান করাই আমাদের কাজ। এই নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন নই।”
বিকল্প ডিফেন্ডার হিসেবে রবি রানা ও সুমিত রাঠির কথা ভাবা হলেও তাঁরা দুজনেই চলতি লিগে মাত্র আট মিনিট করে মাঠে থেকেছেন। কিন্তু শনিবারের ম্যাচে তাঁদের ওপরও আস্থা রয়েছে ফেরান্দোর। বলেন, “রানা, সুমিত মাজিয়ার বিরুদ্ধে খেলে এসেছে। কলকাতা লিগে, ডুরান্ড কাপেও খেলেছে। ওরা প্রায় আড়াই বছর ধরে আমার তত্ত্বাবধানে রয়েছে। ওদের ওপর আমার যথেষ্ট আস্থা আছে। গত মরশুমে সুমিত কোনও ম্যাচেই তেমন না খেললেও ফাইনালে খেলেছিল। ওদের মানে ফারাক থাকলেও ওরা দলকে সাহায্য করতে প্রস্তুত। আগে কত মিনিট খেলেছে, সেটা বড় কথা নয়। ওরা ভবিষ্যতের তারকা। ওদের আরও সময়, আত্মবিশ্বাস দেওয়া প্রয়োজন”।
প্রতিপক্ষ এফসি গোয়া চলতি লিগে অপরাজিত রয়েছে। গত পাঁচটি ম্যাচে কোনও গোল খাননি সন্দেশ ঝিঙ্গনরা। তাদের নিয়ে গোয়ার প্রাক্তন কোচ বলছেন, “এফসি গোয়া মরশুম শুরুই করেছে খুব ভাল ভাবে। ওদের পারফরম্যান্স ও ফল খুবই ভাল। ওরা এই মরশুমে কয়েকজন ভাল খেলোয়াড়কে সই করিয়েছে। ম্যাচটা কঠিন। তবে আমাদের কাছে এটা বড় চ্যালেঞ্জ। এই ধরনের দলের বিরুদ্ধে নামলে নিজেদের ভাল পারফরম্যান্স দেখানোর সুযোগ পাওয়া যায়। ওদের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। তবে এখন, এই পরিস্থিতিতে প্রতিপক্ষের চেয়ে নিজেদের নিয়েই বেশি ভাবছি আমরা”।
দলে চোট, কার্ড সমস্যা যত সমস্যাই থাক, কোনও ম্যাচে জয়ের কথা ছাড়া অন্য কিছু ভাবেন না বলেই জানান ফেরান্দো। তিনি বলেন, “আমরা বড় ক্লাব। সব ম্যাচেই তিন পয়েন্টের লক্ষ্যেই নামি। আমাদের মানসিকতাও সে রকমই থাকে। দুঃসময়ে চারিত্রিক দৃঢ়তা দেখানোই আমাদের কাজ। এক পয়েন্ট পেলে খুশি হই না আমরা। তা ছাড়া ঘরের মাঠে খেলছি আমরা। জানি পরিস্থিতি কঠিন। সে জন্য কিছু খুঁটিনাটি ব্যাপারে পরিবর্তন করতে হবে আমাদের। কারণ, একটা অন্য লাইন-আপ মাঠে নামাতে হবে আমাদের। তবে এ সব ফুটবলের অঙ্গ। আমাদের দলে ২৪ জন খেলোয়াড় রয়েছে। ওরা সব সময়ই মাঠে নামার জন্য তৈরি। কার্ড সমস্যা, চোট-আঘাত থাকবেই। কিন্তু সব সমস্যারই সমাধান করতে হবে আমাদের”।
ঘরের মাঠে খেলার সুবিধাও এই ম্যাচে কাজে লাগাতে চান সবুজ-মেরুন কোচ। বলেন, “আমরা ঘরের মাঠে খেলছি, এটা একটা বড় সুবিধা। কারণ, আমাদের সঙ্গে আমাদের সমর্থকেরা থাকবেন। গ্যালারি থেকে আমাদের জন্য অনেক উৎসাহ দেওয়ার মন্তব্য ভেসে আসবে। সবাই আমাদের জন্য চিৎকার করবেন, এগুলোই এখন বেশি গুরুত্বপূর্ণ”।
গত ম্যাচে কার্ডের বন্যা বয়ে গিয়েছে বলে এই ম্যাচে সেই আতঙ্ক নিয়ে মাঠে নামতে রাজি নন ফুটবলাররাও। এই ব্যাপারে কোচের সঙ্গে একমত কিয়ান নাসিরি বলেন, “কার্ডের ভয় নিয়ে খেলতে রাজি নই আমরা। যে কোনও ট্যাকল বা ড্রিবলই আমরা নির্ভয়ে এবং সর্বশক্তি দিয়ে করব। এটা আমাদের কাছে কোনও সমস্যা নয়”।