FIFA WC 2022: সবুজ মেরুন পাঞ্জাবি, শাড়ি পরে কাতারে গ্যালারি মাতাতে প্রস্তুত বঙ্গ দম্পতি
Bengali Couple In Qatar: ব্রাজিল বনাম ক্যামেরুন, ইংল্যান্ড বনাম ওয়েলশ, উভয় ম্যাচেই মাঠে উপস্থিত থাকবেন মোহনবাগান সমর্থক দম্পতি।
কলকাতা, আবীর দত্ত: ব্রাজিল বনাম ক্যামেরুন। গ্যালারিতে বসে সবুজ মেরুন শাড়ি পড়া বঙ্গ তনয়া। আর সবুজ মেরুন পাঞ্জাবি পড়া বাঙালি যুবক। হাতে থাকবে তেরেঙ্গা আর মোহনবাগানের পতাকা। ভাবছেন স্বপ্ন? একদম নয়। এটাই হতে চলেছে কাতারে। ইংল্যান্ডের সঙ্গে ওয়েলশর খেলাও দেখবেন তাঁরা। সৌভিক সেন (Souvik Sen) ও তার স্ত্রী সোহিনী রায় সেন। যাচ্ছেন কাতারে, বিশ্বকাপ (FIFA WC 2022) দেখতে। সৌভিক পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য দফতরে কাজ করেন। আর তাঁর স্ত্রী কর্মরত আইআইটি খড়গপুরে। ২৭ নভেম্বর যাচ্ছেন দিল্লি। সেখান থেকে পরের দিন সকালে আবু ধাবি আর তারপর দোহা।
সৌভিকের প্রতিজ্ঞা
এমবাপেদের সঙ্গে লুকা মদ্রিচেদের রাশিয়া বিশ্বকাপ ফাইনাল। মদ্রিচের দল জিতুক মনে প্রাণে চাইলেও আর পাঁচজন পৃথিবীবাসীর মতো বাগুইআটিতে বসে দেখেছেন পেরিসিচদের পরাজয়। ফাইনালে পোগবা, গ্রিজম্যান, কঁতে, এমবাপেকে সামনে রেখে ফ্রান্সের বিশ্বজয়ের সাক্ষী থেকেছেন। কিন্তু প্রিয় দল হেরে গেলেও তৈরি হলো জেদ। না এবার আর টিভিতে নয়, সোজা মাঠে গিয়ে দেখতে হবে বিশ্বকাপ। প্রিয় দল ব্রাজিল আর ইংল্যান্ডের ম্যাচ মাঠে বসেই দেখবেন, স্ত্রী সোহিনী রায় সেনকে সাফ জানিয়ে দেন সৌভিক সেন।
বাগুইআটি থেকে লুসিইল স্টেডিয়ামে পৌঁছনোর সফর শুরু জানুয়ারি মাস থেকে। একবার শুধু বিশ্বকাপের মঞ্চে পৌঁছানোর লড়াই। গ্যালারিতে বসে নিজের চোখে বিশ্বকাপের ম্যাচ দেখতে বদ্ধপরিকর ছিলেন মোহনবাগানের অন্ধভক্ত এই দম্পতি। টিকিটের জন্য খোলা প্রথম লটারিতে কোনো দল নেওয়া যায়না। ম্যাচ নম্বর নেওয়া যায়। তাঁরা নিয়েছিলেন 32 নম্বর। সেখানেই কপালের খেলায় পেয়ে গেলেন ব্রাজিল ম্যাচ। বাকি টিকিট কাটতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি।
সৌভিকের মন্তব্য
সৌভিক জানান, "২০১৮ বিশ্বকাপ যাওয়ার পরিকল্পনা করেও সফল হয়নি। ঠিক আগের বছর বিয়ে হয়। আমার স্ত্রী আর আমি, দুইজনেই ফুটবল পাগল। শুধু শিলিগুড়ির একটা ম্যাচ আর নবীর আহত হওয়া সেই ম্যাচ ছাড়া মোহনবাগানের সমর্থক হিসেবে কোনোদিনও বড় ম্যাচ মিস করিনি। আমরা ফুটবল ভীষণ ভালোবাসি আর ভীষণ পরিমানে খরচও করি, যার ফলে রাশিয়া যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করতে হয়। আর সেদিনই আমার স্ত্রীকে প্রমিস করে দিলাম এশিয়া তে বিশ্বকাপ তোমার চোখে তোমাকে দেখানোর প্রতিজ্ঞা আমার!" সৌভিক আরও বলেন,"মাঠে আমি সবুজ পাঞ্জাবি আর ও মেরুন শাড়ি পরে যাব। হাতে দেশের পতাকাও থাকবে।"
সৌভকপত্নী সোহিনীর তো এখনও বিশ্বাসই হচ্ছে না যে তাঁরা কাতারে যাচ্ছেন। তিনি বলেন,"আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না স্বপ্নপুরন হচ্ছে।" 10 বছর প্রেম। সল্টলেকের একটি বেসরকারি কলেজ থেকে এমসিএ চলাকালীনই শুরু হয় ভালবাসা। বিয়ে হয়েছে পাঁচ বছর হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কথা দিয়ে কথা তো রাখতেই হবে! আর এভাবেই ইতিহাসের সাক্ষী হতে বিদেশ চললেন বাংলার এই দম্পতি। যুবভারতীর অভ্যাস এবার কাতার দেখবে। দেখবে তিলোত্তমার ফুটবল প্রেম। ঐ যে গান বাজে , "সব খেলার সেরা বাঙালির তুমি ফুটবল!
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপ জিতে হাসিমুখে কোচ তিতেকে বিদায়ী জানাতে আগ্রহী রিচার্লিসন