IPL 2023: ১০ টা বছর পার, জমা বরফ আজও গলেনি...
Gautam Gambhir vs Virat Kohli: একজন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক ও বর্তমান সময়ের অন্যতম বিশ্বসেরা ব্য়াটার। দ্বিতীয়জন ভারতের ২ বারের বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম নায়ক।
লখনউ: ক্রিকেট নাকি জেন্টালম্য়ান গেম। আদৌ কি? আর যদি তাইই হয়। তবে এই ছবিগুলো তো অন্য কথা বলছে। গতকাল আরসিবি বনাম লখনউ ম্যাচে যাঁরা নজর রেখেছিলেন তাঁরা প্রত্যেকে ইতিমধ্যেই সাক্ষী থেকেছেন এই দৃশ্যের। ম্যাচের পর নিয়ম, ২ দলের ক্রিকেটাররা সৌজন্যমূলক করমর্দন করবেন। মাঠের লড়াই মাঠেই ফেলে ভ্রাতৃত্বের বার্তা দেবেন। কিন্তু একানা স্পোর্টস সিটি সোমবার ম্যাচর পর যেন আরও গরমাগরম হয়ে গেল। হাত মেলাতে গিয়ে রীতিমতো বাদানুবাদে জড়ালেন বিরাট কোহলি ও গৌতম গম্ভীর। একজন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক ও বর্তমান সময়ের অন্যতম বিশ্বসেরা ব্য়াটার। দ্বিতীয়জন ভারতের ২ বারের বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম নায়ক। দেশের ক্রিকেট জগতের ২ তারকার এমন তু তু মে মে..অবশ্য এই প্রথম নয়, এর আগেও উদাহরণ রয়েছে।
আরসিবির হয়ে খেলছেন কোহলি। অন্য়দিকে লখনউ সুপারজায়ান্টস দলের মেন্টর গৌতম। ঘরোয়া ক্রিকেটে ২ জনেই দিল্লির হয়ে খেলছেন। নিজের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কেরিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি যেদিন হাঁকিয়েছিলেন বিরাট, সেদিন ম্যাচের সেরার পুরস্কার নিজে পেয়েও কোহলির হাতেই তুলে দিয়েছিলেন গম্ভীর। গোটা দেশ দেখেছিল অনুজের প্রতি অগ্রজের ভালবাসার নিদর্শন। ২০১১ সালে বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় দলের সদস্যও ছিলেন ২ জন। যদিও গলা বরফ ধীরে ধীরে জমতে শুরু করল। সালটা ২০১৩। আরসিবি বনাম কেকেআর ম্যাচ। সেই ম্যাচেই আউট হওয়ার পর তৎকালীন কেকেআর অধিনায়ক গম্ভীরের দিকে তেড়ে গিয়েছিলেন বিরাট। হাতাহাতি হতে হতেও শেষ পর্যন্ত পরিস্থিত সামাল দিয়েছিলেন মাঠে উপস্থিত কেকেআরের বাকি প্লেয়াররা। এরপর আর বরফ গলেনি। গম্ভীর ঘনিষ্ঠ অনেকের বক্তব্য যে পারফরম্যান্স থাকা সত্ত্বেও বিরাট একটা সময় নিজের কতৃত্ব খাটিয়ে বাঁহাতি ওপেনারকে দলে জায়গা পেতে দেননি। ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর বিভিন্ন সময়ে কোহলির খারাপ পারফরম্যান্স নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন গম্ভীরও। তবে এবারের আইপিএল যেন সবকিছুকে ছাপিয়ে গেল।
চলতি আইপিএলে লখনউ-আরসিবি ম্যাচের প্রথম সাক্ষাতে জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল কে এল রাহুলের দল। সেদিন মুখে আঙুল দিয়ে 'চুপ' করার ইঙ্গিত দেখিয়ে বিরাটকে কিছু বলতে চেয়ছিলেন গম্ভীর। প্রথম পর্বের হারের পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে গতকাল মাঠে নিজের চেনা মেজাজে দেখা দেন প্রাক্তন আরসিবি অধিনায়কও। লখনউয়ের উইকেট যতবার পড়ছিল, ততবার তিনি ডাগ আউটের দিতে তাকিয়ে আঙুল দিয়ে মুখ বন্ধ রাখার ইঙ্গিত দেখান। নিশানা যে গৌতম গম্ভীর, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
এই ঘটনার যদিও অনেকগুলো পার্শ্বচরিত্রও রয়েছেন। লখনউয়ের নবীন উল হক, অমিত মিশ্রার সঙ্গেও মাঠে কথা কাটাকাটি হয় বিরাটের। এরপর কাইল মায়ের্সও কিছু বলার চেষ্টা করেন বিরাটকে ম্যাচের শেষে। পরিস্থিতি ক্রমেই অস্বাভাবিক হয়ে যায়। ২ দলের প্লেয়ারা এগিয়ে আসেন। গম্ভীর ও বিরাট একে অপরের দিকে তেড়ে যান। আত্মপক্ষ সমর্থনে বাকবিতণ্ডায় জড়ান। গোটা ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়া মুহূর্তের মধ্যে ট্রেন্ডিংও হয়ে যায়।
এত বড় টুর্নামেন্টে এভাবে ২ সিনিয়র প্লেয়ারের বাদানুবাদ কোনওভাবেই ক্রিকেটের জন্য ভাল বিজ্ঞাপন হতে পারে না। তাই বিরাট ও গম্ভীর ২ জনকেই শাস্তি দেওয়া হল শেষ পর্যন্ত। আইপিএলের কোড অফ কন্ডাক্ট লঙ্ঘন করার জন্য ম্যাচ ফি-র ১০০ শতাংশ জরিমানা করা হয়েছে ২ জনেরই। পাশাপাশি আফগান ক্রিকেটার নবীন উল হকের ম্যাচ ফি-র ৫০ শতাংশ জরিমানা হয়েছে। সবই তো হল, কিন্তু যা হল তা কি আদৌ কাম্য ছিল?