Ranji Trophy: লড়লেন একা সূরজ, আকাশ-মুকেশদের দাপটে ইডেনে ১৭৩ রানে শেষ ঝাড়খণ্ড
Ben vs Jha: ইডেনে প্রথম দিন বাংলার পেসারদের দাপট।ক্যাচ নিয়ে নেচে মাতালেন মনোজ তিওয়ারি।দুরন্ত ক্যাচে ঋদ্ধিমানকে মনে করালেন উইকেটকিপার অভিষেক পোড়েল।কম আলোয় মাত্র ৬৬.২ ওভার খেলা হল প্রথম দিন।
কলকাতা: ঘরের মাঠে রঞ্জি ট্রফির (Ranji Trophy) কোয়ার্টার ফাইনালে দাপট বাংলার বোলারদের। ঝাড়খণ্ডের প্রথম ইনিংস মাত্র ১৭৩ রানে গুটিয়ে গেল (Bengal vs Jharkhand)। বল হাতে বাংলার নায়ক আকাশ দীপ (Akash Deep) ও মুকেশ কুমার (Mukesh Kumar)। আকাশ নিলেন চার উইকেট। মুকেশ তিনটি।
কলকাতায় এখন শীতের আমেজ। তার ওপর ইডেনের যে পিচে বাংলা বনাম ঝাড়খণ্ড ম্যাচ হচ্ছে, তার ওপর হাল্কা সবুজ আস্তরণ। পেসারদের জন্য স্বর্গরাজ্য মনে করা হচ্ছিল ইডেনের বাইশ গজকে। টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং নিতে তাই দ্বিধা করেননি বাংলার অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি। চার পেসারদের দিয়ে ঝাড়খণ্ডকে ভাঙার কৌশল নিয়েছিলেন অধিনায়ক মনোজ, কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্লরা।
হতাশ করেননি বাংলার পেসাররা। শুরু থেকেই চাপ তৈরি করেন ঝাড়খণ্ডের ব্যাটিংয়ের ওপর। ডানহাতি পেসার আকাশ এমনিতেই রয়েছেন দুরন্ত ছন্দে। ওড়িশার বিরুদ্ধে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে মাথায় চোট পেয়েছিলেন। সম্পূর্ণ ম্যাচ খেলা হয়নি তাঁর। ফিট হয়ে ঝাড়খণ্ডের বিরুদ্ধে মাঠে নামলেন। ৪ উইকেট নিয়ে তিনিই বাংলার সেরা পেসার।
দ্বিতীয় সেরা মুকেশ কুমার। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজের ভারতীয় দলে ছিলেন। প্রথম দুই ম্যাচে প্রথম একাদশে সুযোগ পাননি। তৃতীয় ম্যাচের আগে মুকেশকে জাতীয় শিবির থেকে ছেড়ে দিয়েছিলেন কোচ রাহুল দ্রাবিড়। যাতে তিনি ঘরোয়া ক্রিকেটের সেরা টুর্নামেন্টে রাজ্য দলের প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন। লখনউ থেকে কলকাতায় ফিরেই বল হাতে সফল মুকেশ। নিলেন ৩ উইকেট। একটি করে উইকেট নিয়েছেন ঈশান পোড়েল ও আকাশ ঘটক। ১০টির মধ্যে ৯ উইকেটই পেসারদের ঝুলিতে। একটি রান আউট।
ইডেনে বাংলার বোলারদের দাপটের সামনে বুক চিতিয়ে লড়লেন একমাত্র কুমার সূরজ। মঙ্গলবার সকাল থেকেই আকাশের মুখ ভার। সূর্যের তাপ সেভাবে ছিল না। আর সেই আবহে বাইশ গজে কিরণ ছড়ালেন সূরজ। তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ১৭৫ বলে অপরাজিত ৮৯ রানের ডাকাবুকো ইনিংস খেললেন। তাঁর জন্যই দেড়শো পেরিয়েছে ঝাড়খণ্ডের স্কোর।
বাংলা শিবিরের কাছে আরও দুটি উজ্জ্বল ছবি ধরা রইল ম্যাচের প্রথম দিন। এক, প্রথম স্লিপে দাঁড়িয়ে দুটি ক্যাচ নিলেন মনোজ। এবং দুবারই ক্যাচ নিয়ে কোমর দোলালেন। মনোজকে এভাবে কোনওদিন মাঠে নাচতে দেখা গিয়েছে কি না, কেউ মনে করতে পারছেন না। আত্মবিশ্বাস যেন ঠিকরে বেরচ্ছে রঞ্জি জিততে মরিয়া মনোজের শরীরী ভাষায়।
দ্বিতীয় সেরা ছবিটা হল রাহুল শুক্লর উইকেট। মুকেশ কুমারের বল ডানহাতি ব্যাটার রাহুলের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে উড়ে যাচ্ছিল প্রথম স্লিপের দিকে। মনোজ হয়তো ক্যাচ ধরার জন্য হাতও বাড়িয়ে ফেলেছিলেন। ঠিক সেই সময়ই ডানদিকে শূন্যে শরীর ভাসিয়ে একহাতে দুরন্ত ক্ষিপ্রতায় বল তালুবন্দি করলেন অভিষেক পোড়েল। যা দেখে হতবাক মাঠে উপস্থিত সকলে। অভিষেক যেন মনে পড়িয়ে দিলেন তাঁর পূর্বসূরিকে। যিনি এখন ত্রিপুরার হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেন। এইরকম ক্যাচ হামেশাই ধরতে দেখা যেত। এমনকী, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর নামকরণই হয়ে গিয়েছিল সুপারম্যান। সেই ঋদ্ধিমান সাহাকে মনে করালেন অভিষেক।
বোলারদের পর এবার পরীক্ষা বাংলার ব্যাটসম্যানদের। কম আলোর জন্য ঝাড়খণ্ডের ইনিংস শেষ হওয়ার পর বাংলা ব্যাট করতে নামতে পারেনি। আম্পায়াররা জানিয়ে দেন, ৬৬.২ ওভারেই প্রথম দিনের খেলা শেষ। কাল, বুধবার সকালে বাংলার ব্যাটারদের অগ্নিপরীক্ষা। শীতের সকালের স্যাঁতস্যাঁতে পিচ আর ঝাড়খণ্ড পেসারদের বিষ সামলে প্রথম ইনিংসে লিড এনে দেওয়ার দায়িত্ব এখন অভিমন্যু ঈশ্বরণ-মনোজ-অনুষ্টুপ মজুমদারদের কাঁধে।
আরও পড়ুন: স্মৃতির পাতা উল্টে অনুশীলনে স্বমহিমায় ধোনি, হাঁকালেন একাধিক ছক্কা