Rahul Dravid Throwback: আগের রাতে বন্ধুকে বলেছিলেন, "সকালে ১ ঘণ্টা ক্রিজে কাটিয়ে দিতে পারলেই বড় রান আসবে"
Rahul Dravid Throwback: ব্যাট হাতে নিজের জাত ফের চেনানোর জন্য হয়ত এই মঞ্চটাই প্রস্তুত করে রেখেছিলেন। ৪৯৫ বলে ২৭০ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেছিলেন রাহুল দ্রাবিড় (rahul dravid) সেদিন।
মুম্বই: সেই সিরিজের শুরুটা একদমই ভাল হয়নি তাঁর। নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারছিলেন না ভারতীয় ক্রিকেটের দ্য ওয়াল নামে পরিচিত রাহুল দ্রাবিড়। সিরিজের প্রথম ২ ম্যাচে রান যথাক্রমে ৬, ৩৩ ও ০। এই পরিস্থিতিতে রাওয়ালপিণ্ডিতে তৃতীয় টেস্ট খেলতে নেমেছিল ভারত। ব্যাট হাতে নিজের জাত ফের চেনানোর জন্য হয়ত এই মঞ্চটাই প্রস্তুত করে রেখেছিলেন। ৪৯৫ বলে ২৭০ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেছিলেন দ্রাবিড় সেদিন। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম স্মরণীয় একটি ইনিংস যা। আজকে ওস্তাদের মার সিরিজে সেই ইনিংস নিয়েই আমাদের প্রতিবেদন-
সেবার সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পাকিস্তান সফরে গিয়েছিল ভারতীয় দল। ৩ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে প্রথম ২ ম্যাচ শেষে সিরিজের ফল ছিল ১-১। ছন্দে না থাকা দ্রাবিড নয়, সবার নজর ছিল সেই সিরিজে ব্যাট হাতে রাজত্ব করা বীরেন্দ্র সহবাগের দিকেই। ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন সৌরভ। লক্ষ্মীপতি বালাজির ৪ উইকেট ও কুম্বলে, পাঠানদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে পাকিস্তানের ইনিংস শেষ হয়ে যায় ২২৪ রানেই।
ব্যাট করতে নেমেই ফর্মে থাকা সহবাগের উইকেট হারায় ভারত। প্রথম দিনের খেলা শেষে ১ উইকেট হারিয়েছিল ভারত। ১৫ রান করে ক্রিজে অপরাজিত ছিলেন রাহুল। তাঁর সঙ্গী পার্থিব পটেল। সন্ধ্যায় চাপ কমাতে ডিনারে বন্ধুদের সঙ্গে গিয়েছিলেন তৎকালীন সৌরভের ডেপুটি। মাথায় তখন একদিকে সিরিজে ধারাবাহিক খারাপ পারফরম্যান্সের চাপ। ডিনার টেবিলে দ্রাবিড়ের পাশে ছিলেন বেশ কিছু সাংবাদিক বন্ধুও। রাহুল নিজেই অনেক বছর পর রাওয়ালপিণ্ডির ইনিংসের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছিলেন যে, "আমি আমার বন্ধুদের সেই রানে ডিনার টেবিলে বলেছিলাম যে প্রথম দিনের শেষে যখন ক্রিজে ফিরছি নিজের মধ্যে একটা আলাদা আত্মবিশ্বাস পাচ্ছিলাম। ব্যাট-বলে হচ্ছিল ভাল। বলেছিলাম, পরের দিন সকালে যদি ১ ঘণ্টা ক্রিজে কাটিয়ে দিতে পারি, তবে বড় রান আসবেই।"
আর যেমন কথা, তেমনই কাজ। সেই ইনিংসে প্রথমে পার্থিব ও পরে লক্ষ্মণ, সৌরভ ও যুবরাজের সঙ্গে জুটি বেঁধে দলকে ৬০০ রানের গণ্ডি পার করিয়ে দিতে সাহায্য করেছিলেন দ্রাবিড়। দ্রুত রান তোলার তাগিদে রিভার্স স্যুইপ মারতে গিয়ে ইমরান ফারহাতের বলে বোল্ড না হলে কেরিয়ারের একমাত্র ত্রিশতরানও হয়ত সেদিন চলে আসত।
বেশ কয়েক বছর পর এক সাক্ষাৎকারে শোয়েব আখতার জানিয়েছিলেন যে সচিন তেন্ডুলকরের থেকেও তাঁর কাছে সবচেয়ে কঠিন মনে হত রাহুল দ্রাবিড়কে আউট করা, কারণ দ্রাবিড়ের ২২ গজে ঘণ্টার পর ঘণ্টা টিকে থাকার ধৈর্য ও একাগ্রতা ছিল বাকিদের থেকে আলাদা। আলাদা করে দ্রাবিড়ের নিখুঁত ব্যাটিং টেকনিক ও দক্ষতার কথাও বলেছিলেন প্রাক্তন পাক পেসার। সত্যিই তো সেদিন আখতারের ঘরের মাঠেই তাঁর আগুনে পেস আক্রমণ সামলে বুক চিতিয়ে লড়েছিলেন দ্রাবিড়। দেখিয়ে দিয়েছিলেন যে কেন তাঁকে বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটারদের তালিকার প্রথম সারিতে রাখা হয়।
সেই সিরিজে মুলতানে ত্রিশতরানের ইনিংস এসেছিল সহবাগের ব্যাট থেকে। গোটা সিরিজে কুম্বলে, পাঠান, বালাজিদের বোলিং আক্রমণ বারবার প্রশ্নের সামনে দাঁড় করিয়েছিলেন পাক ব্যাটিং লাইন আপকে। কিন্তু শেষ দ্রাবিড়ের ব্যাটে ভর করেই শেষ ম্যাচে ইনিংস ও ১৩১ রানে ম্যাচ জিতে সিরিজ পকেটে পুরে নেয় টিম ইন্ডিয়া। ওস্তাদের মার শেষ রাতে...এর থেকে ভাল উদাহরণ আর কিই বা হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ প্রথম দশে নেই কোহলি, ২০২১ সালে টেস্টে সবচেয়ে বেশি রান করলেন কে?