(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
Dilip Kumar Biography: পেশোয়ারের ইউসুফ কীভাবে হলেন দেশের নয়নমণি? দেখব সেই যাত্রাপথ
অবিভক্ত ভারতের পেশোয়ারে জন্ম দিলীপ কুমারের (Dilip Kumar)। বাবা-মা নাম রেখেছিলেন ইউসুফ। ১৯৩০ সালে পরিবার নিয়ে তৎকালীন বম্বে-তে চলে আসেন লালা গুলাম সারওয়ার আলি খান। সেখানেই ইউসুফের বড় হয়ে ওঠা। পড়াশোনা শেষ করেই পুণেয় চলে যান ইউসুফ। সেখানে একটি ক্যান্টিনে কাজ করতে শুরু করেন। প্রায় পাঁচ হাজার টাকা জমিয়ে ফিরে আসেন মুম্বই। সেখানে রোজগারের উপায় খুঁজছিলেন ইউসুফ। রোজগারের এই তাগিদই তাঁকে নিয়ে আসে বম্বে টকিজের দোরগোড়ায়। ইউসুফকে দেখে বেশ পছন্দ হয় দেবিকা রানির। মাসিক ১২৫০ টাকার বিনিময়ে তাঁকে চাকরিতে বহাল করা হয়। সেখানে দিলীপের দেখা হয় শশধর মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। দিলীপ-শশধর দু’জনেই অশোক কুমারকে চিত্রনাট্য লেখার কাজে সাহায্য করতেন। তবে দেবিকা রানি ইউসুফকে অভিনয়ের জোর দিতে বলেন। তিনিই দেন দিলীপ কুমার নাম।
১৯৪৪ সালে মুক্তি পায় দিলীপ কুমারের প্রথম ছবি ‘জোয়ার-ভাটা’। বক্স অফিসে তেমন ব্যবসা করতে পারেনি ছবিটি। সাফল্য দিলীপের ঝুলিতে আসে ১৯৪৭ সালে মুক্তি পাওয়া 'জুগনু' ছবিতে। বলিউডে নয়া ‘আন্দাজ’ নিয়ে এসেছিলেন দিলীপ কুমার। অল্প সময়েই দর্শকদের মন জয় করে নেয়। 'দিদার', 'দাগ', 'দেবদাস' থেকে 'মধুমতী'র মতো ছবি দিলীপকে এনে দেয় বলিউডের ট্র্যাজেডি কিং-এর তকমা। 'কোহিনূর' এবং 'রাম অউর শ্যাম'-এর মতো কমেডি সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন দিলীপ।
১৯৬০ সালে মুক্তি পেয়েছিল 'মুঘল-এ-আজম'। দিলীপ-মধুবালার অফস্ক্রিন-অনস্ক্রিন রসায়ন দর্শকদের মুগ্ধ করেছিল। তরানা ছবি থেকে শুরু হয়েছিল দিলীপ কুমার-মধুবালার সম্পর্ক। এই সম্পর্কে ভাঙন ধরেছিল 'নয়া দউর' সিনেমার সময়। মেয়েকে আউটডোর শ্যুটিংয়ে যেতে দেননি মধুবালার বাবা আতাউল্লা খান। নায়িকা বদলে দেন বি আর চোপড়া। মধুবালার বদলে ছবিতে দিলীপের নায়িকা হন বৈজয়ন্তীমালা। ক্ষুব্ধ আতাউল্লা বিষয়টিকে আদালতে নিয়ে যান। আদালতে চোপড়ার পক্ষ নেন দিলীপ। এর পরই দিলীপ-মধুবালার সম্পর্কে ভাঙন ধরে। এই ভাঙনের পর দীর্ঘদিন অবিবাহিত ছিলেন দিলীপ কুমার। ৪৪ বছর বয়সে ২২ বছরের সায়রা বানুকে বিয়ে করেন তিনি। সোশ্যালাইট আসমা সাহিবাকে বিয়ে করেন ১৯৮১ সালে। তবে দুই বছরের মধ্যেই তা ভেঙে যায়। ফের সায়রার সঙ্গে থাকতে শুরু করেন দিলীপ।
আটের দশকে অমিতাভ বচ্চন, শশী কপূরদের যুগেও দাপটের সঙ্গে ক্রান্তি, বিধাতা, শক্তি, মশাল, কর্মার মতো সিনেমায় অভিনয় করেছেন দিলীপ কুমার। ১৯৯১ সালে 'সওদাগর' সিনেমাতে হয়েছিলেন দাপুটে বীর সিং। তারপর ১৯৯৮ সালে উমেশ মেহরার ছবি ‘কিলা’-তে দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। এটিই দিলীপ কুমার অভিনীত শেষ ছবি।
ভারতীয় অভিনেতা হিসেবে সবচেয়ে বেশি অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার রেকর্ড রয়েছে দিলীপ কুমারের। ২০০০ সালে রাজ্যসভার সদস্য হিসেবে মনোনীত হয়েছিলেন তিনি। পেয়েছেন দাদাসাহেব ফালকে, পদ্ম বিভূষণ সম্মান। সমস্ত কিছু স্মৃতির ভাণ্ডারে রেখে চির বিদায় নিলেন অভিনেতা। রেখে গেলেন ট্র্যাজেডি কিংয়ের চেনা ম্যানারিজম।