Durga Puja 2025: ক্ষুদিরামের নাম জড়িত এই রাজবাড়ির সঙ্গে , চলত বিপ্লবীদের প্রশিক্ষণ, ৪১৪ বছরের দুর্গাপুজো অম্বিকানগরে
Bankura Ambikanagar Raj Bari Durga Puja : রাজা নেই, নেই রাজত্বও, কিন্তু নিয়ম একই রয়েছে বাঁকুড়ার একেবারে দক্ষিণে রানীবাঁধ ব্লকের অম্বিকানগর রাজবাড়ির পুজোতে

পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: রাজা নেই, নেই রাজত্বও। কিন্তু নিয়ম একই রয়েছে বাঁকুড়ার একেবারে দক্ষিণে রানীবাঁধ ব্লকের অম্বিকানগর রাজবাড়ির পুজোতে। প্রায় ৪১৪ বছরের অম্বিকানগর বিপ্লবী রাজবাড়ির প্রাচীন দুর্গাপুজো ।
আরও পড়ুন, মহালয়ার সকালে কলকাতায় চলল গুলি !
অম্বিকানগরের রাজবাড়ি এক সময় ছিল বিপ্লবীদের আস্থানা
অম্বিকানগরের রাজবাড়ি এক সময় ছিল বিপ্লবীদের আস্থানা।রাজ প্রাসাদের ভিতরেই তৈরি হত অগ্নিযুগের বিপ্লবীদের অস্ত্র । রাতের অন্ধকারে কখনও রাজা আবার কখনও বিশ্বস্ত রাজ কর্মচারী সেই অস্ত্র ও রসদ নিয়ে পৌঁছে যেতেন বিপ্লবীদের গোপন ডেরায়। বাঁকুড়ার কুমারী নদীর তীরে অম্বিকানগরের সেই রাজপ্রসাদ আজ পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তুপে। শুধু অগ্নিযুগের মহান বিপ্লবীদের ঐতিহ্যবাহী স্মৃতি নিয়ে অম্বিকানগরের বুকে টিকে রয়েছে প্রায় ৪১৪ বছরের রাজ ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন দুর্গাপুজো।
গোপনে তৈরি হয় বিপ্লবীদের বারুদ ও বোমার কারখানা
অম্বিকানগরে ১৬১১সালে যখন প্রথম রাজা হন খড়গেশ্বর ধবল দেব তখন তিনি এখানেই রাজপ্রাসাদ তৈরি করেন এবং তখন থেকেই জাঁক-জমক করেই অম্বিকানগরে পুজো শুরু করেন তিনি। ১৯০৬/০৮ সালে অম্বিকানগরের ষষ্ঠ রাজা রাইচরন ধবল দেব তিনি প্রত্যক্ষভাবে বিপ্লবী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। স্বাধীনতা আন্দোলনের সাথে তার আমলে অম্বিকানগর রাজত্বের মধ্যে থাকা ছেঁদাপাথরের জঙ্গলে গোপনে তৈরি হয় বিপ্লবীদের বারুদ ও বোমার কারখানা।

পুজো দিয়ে মায়ের নামে শপথ নিয়ে তাদের আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন
কথিত আছে রাজা রাইচরন ধবলদেব প্রায়ই নিজে গভীর রাতে ঘোড়া ছুটিয়ে পৌঁছে যেতেন সেখানে। তিনি নিজের উদ্যোগে অম্বিকানগর ও ছেঁদাপাথর এলাকায় দুটি সশস্ত্র বিপ্লবী বাহিনি গড়ে তুলে ছিলেন তিনি। প্রফুল্ল চাকি, বারীন ঘোষ, নরেন গোস্বামী, ভূপেশ দত্ত সহ ক্ষুদিরাম বসুর মত বিপ্লবীরা গোপনে বৈপ্লবিক কাজকর্ম চালাতে এসেছিলেন রানীবাঁধের জঙ্গলমহলের ছেঁদাপাথরে। সেই সূত্রে রাজা রাইচরণ ধবল দেবের সাথে অম্বিকানগরের রাজবাড়ির পুজোতে অনেক বিপ্লবী এসেছেন, পুজো দিয়ে মায়ের নামে শপথ নিয়ে তাদের আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। তাই এই পুজো বিপ্লবীদের পুজো হিসেবে পরিচিত। রাজা রাইচরন ধবল দেব বিপ্লবী রাজা হিসেবে এলাকায় পরিচিত।

অম্বিকানগর রাজবাড়ির পুজো দেখতে ভীড় জমাতেন গোটা জঙ্গলমহলের মানুষ
ধীরে ধীরে জেল্লা হারিয়েছে অম্বিকানগর রাজ পরিবার। সংস্কারের অভাবে ধীরে ধীরে কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে বিশাল রাজপ্রাসাদ। শুধু ঐতিহ্য ময় বাংলার বিপ্লবীর ইতিহাসে মহান স্মৃতি বুকে আগলে আজও অম্বিকানগর রাজ বাড়িতে প্রাচীন রীতি মেনে চলে আসছে দুর্গা পুজো। এক সময় আশপাশের এলাকার দুর্গা পুজো না থাকায় অম্বিকানগর রাজবাড়ির পুজো দেখতে ভীড় জমাতেন গোটা জঙ্গলমহলের মানুষ। গত দু দশকে এলাকায় বহু নতুন পুজো শুরু হয়েছে। কিন্তুু রাজ বাড়ির দুর্গা পুজোর জনপ্রিয়তা এখনও অটুটই থেকে গিয়েছে।






















