Job Seekers: প্রশিক্ষণহীন শিক্ষকদের চাকরি বাতিলে স্থগিতাদেশ, আশা ছাড়তে নারাজ আন্দোলনকারীরা
Job Seekers On Stay Order: একদিকে স্বস্তিতে মামলাকারী চাকরিহারারা। অন্যদিকে সামান্য হতাশ হলেও, আশা ছাড়তে নারাজ আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীরা।
সৌভিক মজুমদার ও অনির্বাণ বিশ্বাস, কলকাতা: প্রাথমিকে প্রশিক্ষণহীন ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলে স্থগিতাদেশে দুই শিবিরে দুই ছবি। একদিকে স্বস্তিতে মামলাকারী চাকরিহারারা। অন্যদিকে সামান্য হতাশ হলেও, আশা ছাড়তে নারাজ আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীরা।
আশা ছাড়তে নারাজ চাকরিপ্রার্থীরা: প্রাথমিক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ৩২ হাজার চাকরি বাতিলের নির্দেশের ওপর সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দিয়েছে বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চ। তবে ৩ মাসের মধ্যে ফের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশই বহাল রেখেছে হাইকোর্ট। আর এই নির্দেশের পরই, একদিকে যেমন সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মামলাকারী চাকরিহারাদের একাংশ, অপরদিকে খানিকটা আশাহত হলেও, এখনই হাল ছাড়তে নারাজ আন্দোলনকারী ২০১৪-র টেট পাস নট ইনক্লুডেড চাকরিপ্রার্থীরা। চাকরিহারা এক মামলাকারী বলেন, “আমরা পুরো যোগ্যতার সাথে আমরা পেয়েছিলাম চাকরি ২০১৭ সালে। সেখানে আমি হঠাৎ দেখতে পেলাম শুক্রবার একদম আমাদের চাকরি একদম চলে গেল। আমি জানতাম, আমি নিশ্চয়ই যোগ্য, তাই চাকরিটা পেয়েছি।’’
২০১৪ সালের টেটের ভিত্তিতে ২০১৬ সালে ৪২ হাজার ৫০০ জন প্রার্থীকে প্রাথমিক শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা হয়। সেইসময় ন্য়াশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশনের বিধিতে বলা ছিল নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তারপরও যদি শূন্য়স্থান থাকে, তাহলে প্রশিক্ষণহীন প্রার্থীরা সুযোগ পাবেন। তবে সেই প্রশিক্ষণহীনদের ২ বছরের মধ্য়ে প্রশিক্ষণ শেষ করতে হবে। কিন্তু নিয়োগের পর থেকেই অভিযোগ ওঠে, অনেক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রার্থীই চাকরি পাননি। তার বদলে নিয়ম ভেঙে চাকরি পেয়েছেন বহু প্রশিক্ষণহীন প্রার্থী। এ নিয়ে আন্দোলনে নামেন নিয়োগ না পাওয়া অথচ ১৪'র টেট পাস করা প্রশিক্ষিত এবং নট ইনক্লুডেট প্রার্থীদের একাংশ। সাদা খাতা জমা দিয়ে নিয়োগ-সহ একাধিক দুর্নীতির অভিযোগে এবং যোগ্যদের নিয়োগের দাবিতে শহিদ মিনার চত্বরে সেই আন্দোলন শুক্রবার ২৭০ দিনে পড়ল।
নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নিয়মভঙ্গ, দুর্নীতির পাশাপাশি, প্রশিক্ষণহীনদের নিয়োগের ক্ষেত্রে অ্য়াপ্টিটিউড টেস্ট অবধি হয়নি বলেও মারাত্মক অভিযোগ ওঠে। শেষমেশ ৩০ জন ইন্টারভিউয়ারকে নিজে জিজ্ঞাসাবাদ করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়। তারপরই সামনে আসে চোখ কপালে তোলার মতো তথ্য়!! ইন্টারভিউয়ারদের বয়ানে দেখা যায় কেউ জানান, সেবার কোনও অ্যাপটিটিউড টেস্ট হয়নি। কেউ বলেছেন, টেস্ট নিয়ে কোনও নির্দেশ ছিল না। এই প্রেক্ষাপটে গত শুক্রবার একলপ্তে প্রাথমিকের ৩২ হাজার প্রশিক্ষণহীন শিক্ষকের চাকরি বাতিল করে দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। চলতি সপ্তাহের মঙ্গল ও বুধবার সেই মামলার শুনানি চলে। দু'পক্ষের সওয়াল শোনার পর রায়দান স্থগিত রেখেছিল ডিভিশন বেঞ্চ। এদিন অবশেষে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ দিলেও, অপর নির্দেশ বহাল রাখে ডিভিশন বেঞ্চ।
এক আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থী বলেন, “এই নয় যে এই রায় আমাদের বিপক্ষে চলে যাচ্ছে। আমরা শেষ হয়ে যায়নি। আদালতের ওপর আমাদের পূর্ণ ভরসা রেখে আমরা আশা রেখেছি। পরে সবসময় অন্যায়ের পাশে রয়েছে এবং অন্যায়টাকে সত্য প্রতিষ্ঠিত করার জন্য উঠে পরে লেগে আছেন। সেটা সমস্ত রাজ্যবাসী জানেন। আমরা চাই সেই পর্ষদের সুবুদ্ধি হোক।’’
আরও পড়ুন: Sleep vs Work Performance: রাতভর ঘুম হয়নি! সকালে কাজে মন কীভাবে? রইল সহজ টিপস