(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
Tea Estate: চাঁদের আলোয় পাতা তুলে তা দিয়ে তৈরি বিশেষ চা! নতুন পানীয় তৈরি বাংলায় ?
Tea Business: বাগানের পাশেই চলা আদিবাসী মাদলের তালে শুরু হয় কোজাগরী লক্ষ্মী পূর্ণিমার চাঁদের আলোয় বাগানের প্রায় ১০০ হেক্টর জমিতে পাতা তোলার কাজ।
অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার: চাঁদের আলোয় পাতা তুলে তা দিয়ে তৈরি বিশেষ চা উৎপাদনের লক্ষে এবারও উদ্যোগ নিল আলিপুরদুয়ারের মাঝেরডাবড়ি চা বাগান কর্তৃপক্ষ।
এর নতুন দেওয়া হয়েছে "মুন লাইট সিটিসি টি"। এই চায়ের মাধ্যমে চা শিল্পের আর্থিক মন্দা দূর করার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা নেওয়া যাবে বলে আশা দেখছেন কর্তৃপক্ষরা। পূর্ণিমার মায়াবি জ্যোৎস্নায় চা পাতা তোলার এই দৃশ্য উপভোগ করতে পেরে খুশি স্থানীয় পর্যটকরাও।
আলিপুরদুয়ারের বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গল ভেদ করে যাওয়া ৩১ নং জাতীয় সড়কের পাশেই মাঝেরডাবড়ি চা বাগান। বাগানের ১৩ নং সেকশনে শুক্রবার সন্ধ্যায় যেন এক রোমাঞ্চকর, মায়াবি পরিবেশ গড়ে উঠেছিল। সন্ধ্যা নামতেই ডাবড়ি কর্তৃপক্ষের দেওয়া পোশাক পড়ে, মাথায় নিরাপত্তা বাতি লাগিয়ে একের পর এক মহিলা শ্রমিকরা প্রবেশ করে সবুজ চা বাগিচায়। মশাল হাতে পুরুষ শ্রমিকরাও হাজির হয় নিরাপত্তা দিতে।
বাগানের পাশেই চলা আদিবাসী মাদলের তালে শুরু হয় কোজাগরী লক্ষ্মী পূর্ণিমার চাঁদের আলোয় বাগানের প্রায় ১০০ হেক্টর জমিতে পাতা তোলার কাজ। বিষয়টি স্থানীয় মহলের পাশাপাশি পর্যটকদের কাছেও সমান জনপ্রিয়। শুক্রবারও বাগানে পূর্ণিমার আলোয় চা পাতা তোলার দৃশ্য উপভোগ করেছেন পর্যটকেরা।
জানা যায়, প্রায় ১ মাস আগে থেকে এই বিশেষ দিনটিকে সামনে রেখে প্রস্তুতিও শুরু করেছিল মাঝেরডাবরি কর্তৃপক্ষ। কারণ, বিশেষ পদ্ধতিতে তোলা হয় এই পাতা। হাতে সময় মিলবে বড়জোর ৪ থেকে ৫ ঘন্টা। তার মধ্যেই সম্পূর্ণ করতে হবে চা পাতা সংগ্রহের কাজ। যদিও পূর্ণিমার আলো ছাড়া এ কাজ হবে না বলেই জানান হয়েছে।
তবে একটি কড়ি, দুটি পাতার বিশেষ অংশ তুলে নিলেই কাজ সম্পূর্ণ হচ্ছে না। দ্রুত ওই চা পাতা তুলে পৌঁছে দিতে হবে বাগানের ফ্যাক্টরিতে। সেখানেই ধাপে ধাপে এগোবে চাঁদের আলোয় তোলা চা পাতার প্রসেসিং। নির্দিষ্ট কয়েকটি ঘন্টার মধ্যে কাজটি করতে হবে। আর তাহলেই তৈরি হয়ে যাবে বিশেষ সুগন্ধি যুক্ত চাঁদের আলোয় তোলা সিটিসি চা।
জানা যায়, এই পদ্ধতিতে চায়ের গুণমান যেমন বৃদ্ধি পায় তেমনি তার সুগন্ধও অনেকগুণ বেশি হয়। বাজারে এর চাহিদাও অনেক বেশি। বছরের দোল পূর্ণিমা এবং কোজাগরী পূর্ণিমায় এই ধরনের পাতা তোলার কাজ করা হয় বলে জানিয়েছে বাগান কর্তৃপক্ষ। এই চা পাতার বাজারমূল্য ১৫০০ টাকা প্রতি কেজি। যা সঠিক ভাবে বিক্রি করলে চা-এর বাজারে বড় প্রভাব ফেলবে বলেই আশা বাগান কর্তৃপক্ষের।
উল্লেখ্য, মাঝের ডাবরি চা বাগানে এই চাঁদের আলোয় পাতা তোলা কিন্তু এটাই প্রথম নয়। সূত্রের খবর, দার্জিলিং পাহাড় বাদে উত্তরবঙ্গে ডুয়ার্স কিংবা তরাইয়ের প্রথম কোনও চা বাগান হিসাবে আলিপুরদুয়ার জেলার এই চা বাগানেই পূর্ণিমার চাঁদের আলোয় প্রথম পাতা তোলা শুরু হয়েছিল দুই বছর আগে। তবে শুধু 'মুনলাইট সিটিসি টি' নয়, ‘হোয়াইট টি’ সহ বিভিন্ন ধরণের চা পাতা তৈরি করে এর আগেও নজির গড়েছে আলিপুরদুয়ারের এই চা বাগান।