Bankura: বেহাল দশায় বাঁকুড়ার রানিবাঁধে খেজুরিয়া নব প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, পুনরায় চালুর দাবি স্থানীয়দের
১৯৮৫ সালে বামফ্রন্ট সরকারের আমলে তৈরি হয়েছিল এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি...
পুর্ণেন্দু সিংহ, রানিবাঁধ: কয়েক দশক আগে, ১৯৮৫ সালে বামফ্রন্ট সরকারের আমলে তৈরি হয়েছিল বাঁকুড়ার রানিবাঁধে খেজুরিয়া নব প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র।
রানিবাঁধ পঞ্চায়েত সমিতি ও বাঁকুড়া জেলা পরিষদের প্রতিনিধি সহ ওই এলাকার মানুষদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি গঠন করেছিল তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকারের স্বাস্থ্য দফতর।
রাওতোড়া অঞ্চলের খেজুরিয়া ছাড়াও বারিকুল, ঝিলিমিলি সহ আশেপাশের বিভিন্ন গ্রামে বসবাসকারী প্রায় কয়েকশো বাসিন্দা চিকিৎসার জন্য আসতেন রানিবাঁধের খেজুরিয়া নব প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। এমনকী, পার্শ্ববর্তী পুরুলিয়া জেলার বান্দোয়ান এলাকার রোগীরাও আসতেন সেখানে।
কিন্তু, আজ বেহাল, জরাজীর্ণ ও ভগ্ন অবস্থায় পড়ে রয়েছে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। গ্রামবাসীদের চিকিৎসার জন্য আসতে হয় ৮৫ থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে বাঁকুড়া টাউন না হলে খাতড়া মহকুমা হাসপাতাল।
রানিবাঁধ এই একটিই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রয়েছে। তাও দীর্ঘদিন ধরে তা ধুঁকছে। ফলে, বেশিরভাগ মানুষকে উন্নতমানের চিকিৎসার জন্য ছুটে আসতে হয় বাঁকুড়ায়।
এলাকাবাসীদের দাবি, তাঁদের এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি সরকার আবার নতুন করে গঠন করে দিলে তবে এলাকার স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নতি হবে। এলাকার মানুষকে আর চিকিৎসার জন্য ছুটে যেতে হবে না বাঁকুড়া বা খাতরা।
গ্রামবাসী সীমন্ত মুর্মু বলেন, বামফ্রন্ট আমলে হাসপাতালটি চালু হয়েছিল। পঞ্চায়েত সমিতির মাধ্যমে তা পরিচালিত হচ্ছিল। চুক্তির ভিত্তিতে ভালই চিকিৎসা হচ্ছিল। আউটডোর, ইনডোর পরিষেবা ছিল। বেড ছিল। অনেক রোগী ভর্তি থাকতেন।
তাঁর অভিযোগ, এখন সব ভেঙে পড়ছে। বেহাল দশায় পড়ে রয়েছে। তিনি বললেন, জঙ্গলমহলে একটা রাজনীতির যুগ এসেছে। এখন সবাই নিজের চেয়ার দেখতে ব্যস্ত, মানুষের যেটা সুবিধা হয় সেটা কেউ চাইছেন না। এত সুন্দর একটা পরিবেশে এই হাসপাতাল রয়ছে। এই দিকে কেউ নজর দিচ্ছে না। আমরা চাই, এটা চালু হোক। বাড়িঘর সমস্ত কিছুই তো আছে। আবার আমরা চাই এই হাসপাতালটি পুনরায় চালু হোক।
বাঁকুড়া জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামল সরেন বলেন, আমরা খোঁজখবর নিয়ে দেখছি আমাদের রাজ্যের যে গাইডলাইন আছে তার মাধ্যমে যদি কিছু একটা সমাধান করা যায়। একটা ব্লকে কটা বেডের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকবে বা রুরাল হসপিটাল সেগুলি আমরা দেখে নিচ্ছি।
বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি মৃত্যুঞ্জয় মুর্মু বলেন, ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিষয়ে গ্রামবাসীদের কাছ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও আবেদন জেলা প্রশাসন পায়নি। খেজুরিয়া স্বাস্থ্য কেন্দ্রের গুরুত্ব এখন নষ্ট হয়ে গেছে। তবুও গ্রামের মানুষের যদি আবেদন নিবেদন করেন, বিষয়টা খতিয়ে দেখব।
বাঁকুড়া সিপিএম জেলা সম্পাদক অজিত প্রতি জানান, বামফ্রন্ট সরকারের আমলে ওটা করা হয়েছিল উন্নত পরিমাণের মেশিন যন্ত্রপাতিও বসানো হয়েছিল। এলাকার মানুষের পরিষেবা দেওয়ার জন্য একমাত্র একটা জায়গা ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছিল স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। কিন্তু ২০১১ পরে কোনও একটা কারণে বন্ধ হয়ে যায়।