Abhijit Gangopadhyay Exclusive: 'এই তালিকা সম্পূর্ণ নয়, একটা ভাঁওতাবাজি', কতজন দুর্নীতি করে চাকরি পেয়েছিলেন ? যা বললেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়
SSC Tainted List: দাগিদের তালিকা প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (School Service Commission)। ১৮০৪ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।

অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কলকাতা : "এটা সম্পূর্ণ তালিকা নয়। যাঁরা দুর্নীতি করে চাকরি কিনেছিলেন, চাকরি পেয়েছিলেন তাঁদের সংখ্যা আরও অনেক বেশি। অন্তত ৬ হাজার তো হবেই।" এমনই মন্তব্য করলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়। এবিপি আনন্দর প্রতিনিধি অর্ণব মুখোপাধ্যায়কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে নিয়োগে বেলাগাম দুর্নীতি নিয়ে নিজের মতামত জানালেন প্রাক্তন বিচারপতি তথা বিজেপি সাংসদ। Abhijit Gangopadhyay on SSC Taited List
এবিপি আনন্দর প্রতিনিধি : তালিকা প্রকাশ হয়েছে, দেখেছেন। পুরো বিষয়টা আপনার থেকে ভাল কেউই জানে না। এই তালিকা নিয়ে কী বলবেন ?
অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় : প্রথমত, এই তালিকা একটি ভাঁওতাবাজি। এই তালিকার মাধ্যমে আসলে কিছুই প্রকাশ করা হয়নি। স্কুল সার্ভিস কমিশন সুপ্রিম কোর্টের আদেশকে অমান্য করেছে। ফলে, তাদের অত্যন্ত কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হওয়া প্রয়োজন। এই যে ১৮০৪ জনের তালিকা প্রকাশ করেছে, এটা সম্পূর্ণ তালিকা নয়। যাঁরা দুর্নীতি করে চাকরি কিনেছিলেন, চাকরি পেয়েছিলেন তাঁদের সংখ্যা আরও অনেক বেশি। অন্তত ৬ হাজার তো হবেই। তাঁদের কারো নামই তো এখনও এল না। এদিকে সামনে পরীক্ষা। স্কুল সার্ভিস কমিশন সব জানে- কারা যোগ্য, কারা অযোগ্য...সেটা জানা সত্ত্বেও তারা এই ব্যবস্থাটা করছে না।
এবিপি আনন্দর প্রতিনিধি : আপনি তো দেখেছেন সেই সময়, কী কী ধরনের অযোগ্য ছিল। কী কী অযোগ্যতা এদের মধ্যে ছিল ?
অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় : অযোগ্যরা ছিলেন তিন-চার রকমের। একটা হচ্ছে, পরীক্ষাতেই বসেননি কিছু ছেলে, তাঁদের নাম চলে এসেছিল প্যানেলে। তাঁদের চাকরিও হয়ে যায়। তারপরে, কিছু প্রার্থী যাঁরা সাদা খাতা জমা দিয়েছিলেন শুধু রোল নম্বর লিখে। তাঁদেরও অনেকের চাকরি হয়ে গিয়েছিল। সকলেরই প্রায়। এরাই তো আসলে টাকা দিয়ে চাকরিটা কিনেছেন। কিছু ক্যান্ডিডেটস..তাঁদের মার্কস...হয়ত তাঁরা পেয়েছিলেন ৩। সেটা করে দেওয়া হয়েছিল ৫৩। এদের কারো নাম এসেছে বলে আমি এখন পর্যন্ত শুনতে পাইনি। যে নামগুলো এসেছে...সবকটারই কিছু কিছু সংমিশ্রণ। এছাড়া একটা অংশ আছে, প্যানেল এক্সপায়ার করেই যাঁদের টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়া হয়েছে। এখন কে কোন সেক্টরে পড়ছেন, সেটা এই তালিকা দেখে বোঝা সম্ভব নয়। আবার এই তালিকা থেকে এটাও বোঝা সম্ভব নয় যে কে কোন স্কুলে চাকরি করতেন। এটাও পাওয়া দরকার। তা না হলে এটা বোঝা মুশকিল যে কোন দাগি প্রার্থী চেষ্টা করছেন আবার কোনওভাবে মাথা গলিয়ে পরীক্ষা দিয়ে দেওয়ার। এটা স্বচ্ছ করার জন্য স্কুল সার্ভিস কমিশনের উচিত, এখনও সময় আছে সব দাগি প্রার্থীর নামের তালিকা প্রকাশ করা।
এবিপি আনন্দর প্রতিনিধি : আপনি বলছেন, এতগুলো ক্যাটেগরি ছিল যারা বিভিন্ন বিষয়ে কারচুপি করে এসেছে, এতগুলো ক্যাটেগরিতে মাত্র এই ক'জন দাগি ? প্রতিফলনটা কি আদৌ আছে ?
অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় : আদৌ নেই। সেইজন্যই তো বললাম, এই লিস্টটা একটা ভাঁওতাবাজি। আমার ধারণা, ৬ হাজারের কাছাকাছি হবেই। বেশিও হতে পারে। যা শুনতে পাচ্ছি তাতে ৬ হাজারের বেশিই হবে। কিন্তু, স্কুল সার্ভিস কমিশন কিছুতেই তাদের সামনে আনছে না।
এবিপি আনন্দর প্রতিনিধি : কী স্বার্থ থাকতে পারে ?
অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় : স্বার্থ একটাই, তাদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা নিয়ে এই যে চাকরি দেওয়া হয়েছে, এতে তো তৃণমূলের নেতারা জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে যে কোনও সময় আন্দোলন শুরু হয়ে যেতে পারে। যদি এদের সামনে আনা হয় বা এদের পরবর্তী সামনের পরীক্ষায় বসার অযোগ্য বলে ঘোষণা করে দেওয়া হয়, যা সুপ্রিম কোর্ট অলরেডি করেছে, তাঁরা বসতে পারবেন না বলে যদি চিহ্নিত করে দেওয়া হয়, তাহলে এঁরা ক্ষুব্ধ হবেন। ক্ষুব্ধ হলে যাঁরা টাকা দিয়েছেন, তাঁদের কাছে গিয়ে হামলা করবেন। চাইবেন, মানুষজন জানতে পেরে যাবেন।
প্রসঙ্গত, দাগিদের তালিকা প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (School Service Commission)। ১৮০৪ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।






















