Mamata Banerjee: ‘অনশন, আন্দোলন, আঘাত...আমি আসলে জীবন্ত লাশ’, সংগ্রামের কথা তুলে ধরলেন মমতা
Malda News: এ দিন অভিষেকের সেই কর্মসূচিতে যোগ দেন মমতা। ইংরেজবাজারে সভা করেন।
ইংরেজবাজার: জনসভা হোক বা মিটিং, মিছিল, অথবা পদযাত্রা, মানুষের মাঝে গিয়ে, তিনি মানুষের মধ্য়ে একেবারে মিশে যান বলেই জানেন সকলে। বৃহস্পতিবার মালদার সভায় স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে খানিকটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন তৃণমূলনেত্রী (TMC) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। জানালেন, অনেক লড়াই করে, কষ্ট সয়ে দলকে দাঁড় করিয়েছেন তিনি। মানুষ ভাবেন তিনি সুস্থ। ভিতরে ভিতরে আসলে জীবন্ত লাশ ছাড়া আর কিছু নন তিনি।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayat Elections 2023) আগে জেলায় জেলায় জনসংযোগে বেরিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। 'তৃণমূলে নবজোয়ার' কর্মসূচি নিয়ে পৌঁছে যাচ্ছেন মানুষের কাছে। এ দিন অভিষেকের সেই কর্মসূচিতে যোগ দেন মমতা। ইংরেজবাজারে সভা করেন। আর সেখানেই স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগতাড়িত শোনায় মমতাকে।
এ দিন মমতা বলেন, "এখনকার প্রজন্মের এটা জানা দরকার। আপনাদের অনুরোধ করব, দলের ইতিহাস পড়ে দেখতে। না হলে তৃণমূল কংগ্রেস কী সংগ্রাম করেছে, জানবেন কী করে? তৃণমূল কংগ্রেস যে সংগ্রাম করেছে, পৃথিবীতে আর কাউকে তা করতে হয়েছে কিনা, সন্দেহ আছে আমার।"
নিজের লড়াইয়ের কথা তুলে ধরতে গিয়ে মমতার বক্তব্য ছিল, "আমি আদিবাসী মেয়েদের কাছে গল্প করছিলাম। তোমরা দেখছো আমি সুস্থ মানুষ। কিন্তু জানো কি আমি আসলে জীবন্ত লাশ? লোহার ডান্ডা দিয়ে মেরে আমার মাথা ফাটিয়ে চৌচির করে দেওয়া হয়েছিল। মিছিল করছিলাম। লোহার ডান্ডা মারল একদিকে। দেখলাম, গলগল করে রক্ত পড়ছে। আরও একটা পড়ল, রক্ত পড়তে শুরু করল দু'দিকেই। তার পর তৃতীয় বার ডান্ডা পড়ল।"
স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মমতা বলেন, "আমার ডানহাতের আলনাটা দেখছেন, অর্ধেক নেই। থেঁতো করে দিয়েছিল। রটে গিয়েছিল আমি মারা গিয়েছি বলে। সংসদ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। অনেক অত্যাচার সহ্য করেছি। ২১ জুলাই আমার কোমর ভেঙে দেয়। আপনারা জানেন না, আমার শরীরে অনেক পার্টস নেই। এমন এমন জায়গায় মেরেছে। দুই হাতে, চোখে, মাথায়, পেটে অস্ত্রোপচার হয়েছে। পা-ও ভেঙে দিয়েছিল। সুতরাং লড়াই করে, কষ্ট করে এই জায়গায় এসে একটা দল তৈরি করেছিলাম আমি। দিনের পর দিন অনশন করেছি। জল খাইনি ২৬ দিন।"
এ দিন মমতা জানান, ২১ যখন মানবিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছিল, লকআপে প্রতিদিন মৃত্যু হতো, তাঁদের পরিবারকে চাকরি এবং ক্ষতিপূরণ দিতে আন্দোলন করেন তিনি। ভিখারি পাসোয়ানকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। ওখানেও ৭২ ঘণ্টা অনশন করেন। হুদলির দাদপুর, মেমারির করান্দা, সর্বত্র গিয়েছেন। বর্তমান প্রজন্ম হয়ত পুরোটা জানেন না তাঁর এই লড়াইয়ের কথা।