Jalpaiguri News : পরিযায়ী শ্রমিকের 'গলায় স্পষ্ট আঘাতের দাগ..', মহারাষ্ট্রে বঙ্গসন্তানের রহস্যমৃত্যু !
Jalpaiguri Resident Mysterious Death in Maharashtra : মহারাষ্ট্রে পরিযায়ী শ্রমিকের রহস্যমৃত্যু ! ময়নাতদন্তের পর দেহ শনাক্ত করতে গেল ৩ সদস্যের টিম

রাজা চট্টোপাধ্যায়, বিশ্বজিৎ দাস, উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি : বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালিদের ওপর অত্যাচারের অভিযোগ নিয়ে চারিদিকে চলছে তোলপাড়। গুজরাতের সুরাতেও পিংলার পরিযায়ী শ্রমিককে আটকে রেখে মারধর ও হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে। আর এরই মাঝে এবার বিজেপি শাসিত মহারাষ্ট্রে পরিযায়ী শ্রমিকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর অভিযোগ উঠল।
দেহের ছবি দেখে একে স্বাভাবিক মৃত্যু বলে মানতে নারাজ শ্রমিকের পরিবার। আর ময়নাতদন্তের পর দেহ শনাক্ত করতে মহারাষ্ট্রে গেল ৩ সদস্যের টিম। যে টিমের মধ্য়ে রয়েছেন রাজ্য পুলিশের একজন আধিকারিকও। দলে রয়েছেন ভোরের আলো থানার অ্যাসিস্টান্ট সাব ইনস্পেক্টর বিনোদ রাম, মৃত শ্রমিকের ভাই অপু দাস, ও তাঁদের আত্মীয় গৌরাঙ্গ দাস। জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ ব্লকের বিন্নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা দীপু দাস। ১৫ বছর ধরে ভিন রাজ্যে কাজ করতেন তিনি।
২ মাস আগে পুণেতে শ্রমিকের কাজে যান তিনি। মঙ্গলবার তাঁর পরিবারের কাছে মৃত্যুর খবর দেন ঠিকাদার। বলা হয়, কাজ করতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে দীপু দাসের। তাঁর পরিবারকে পাঠানো হয় মৃতদেহের বেশ কয়েকটি ছবি। যাতে, গলায় স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে আঘাতের দাগ। আর এই নিয়েই ধোঁয়াশায় রয়েছেন নিহত শ্রমিকের ভাইয়েরা। বাবা মারা গেছেন অনেকদিন আগেই। সোমবারই মৃত্যু হয়েছে মায়ের। আর ঠিক তার পর দিন দাদার মৃত্যুর খবর পেয়ে শোকে প্রায় পাথর হয়ে গিয়েছেন বাকি ৩ ভাই।
মহারাষ্ট্রে মৃত পরিযায়ী শ্রমিকের ভাই অপু দাস বলেন, মা গত সোমবার মারা যায়। ওখানে আমরা খবর পাঠাই দাদাকে না পাওয়াতে, দাদা যে ঠিকাদারের আন্ডারে আছে, ওই ঠিকাদারের সূত্রে জানিয়ে দিয়েছি আমরা যে মা আর নেই মা মারা গেছে। ওই যে ঠিকাদার আছে, মঙ্গলবার রাত ৮ টায় আমাদের খবর দেয় দাদাও মারা গেছে। আর এই নিয়ে সোশাল মিডিয়ার তৃণমূলের তরফে পোস্ট করা হয়েছে, এটি আর আটক, হয়রানি বা ফেরত পাঠানোর বিষয় নয়। এটা 'টার্গেটেড এলিমিনেশন'। বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালিদের ভয় দেখানো হচ্ছে, মারধর করা হচ্ছে এবং খুন করা হচ্ছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন চোখ বুজে থাকবে কারণ রাজ্যের মদতে এই হিংসা বিজেপি করাচ্ছে।
এদিন রাজগঞ্জের মৃত শ্রমিকের বাড়িতে গিয়ে তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক। রাজগঞ্জের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক খগেশ্বর রায় বলেন, যেহেতু অলরেডি গতকাল পোস্টমর্টেম হয়ে গেছে, আজকে এই পরিবারের লোকজন, এক ভাই প্লাস পুলিশ প্লাস আরেকজন, তিনজন যাচ্ছে ওখানটায়। ওখানে গিয়ে পোস্টমর্টেম রিপোর্টটা পাবে। পাওয়ার পরে, সেরকম যদি কোনও ব্যাঘাত ঘটে থাকে, তাঁকে যদি মেরে ফেলে, যদি পোস্টমর্টেম রিপোর্টে আমরা জানতে পাই, এটা আমরা আমাদের জলপাইগুড়ি জেলার পক্ষ থেকে বৃহত্তর আন্দোলন করব।
রাজগঞ্জের ঘটনা নিয়ে যখন রাজনৈতিক মহলে চাপানউতোর চলছে,তখন এরাজ্যের আরও এক শ্রমিককে বিজেপি শাসিত রাজ্যে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠল। দিল্লির মধুবিহারের পর এবার গুজরাতের সুরাত। বাংলাদেশি তকমা দিয়ে পিংলার বাসিন্দাকে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠল। ছাতিতে লাথি মেরে, পেটে লাথি মেরে, আমাদের তুলল। তারপর ঠাইঠাই করে মারল, যে তোমরা বাংলাদেশি। তোমরা আতঙ্কবাদী।তবে বৃহস্পতিবার সুরাত থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলার বাড়িতে ফিরে এসেছেন আহত শ্রমিক। ছেলেকে কাছে পেয়েই তাঁকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা।পিংলার পরিযায়ী শ্রমিক বুদ্ধদেব বারিকের মা মিনু বারিকের বলেন, ছেলে বাড়িতে এসেছে ভাল লাগছে, অনেক অনেক চিন্তায় ছিলাম। প্রচুর চিন্তায় ছিলাম। সব মিলিয়ে, ভিনরাজ্যে পরিয়ায়ী শ্রমিকদের ওপর অত্যাচারের অভিযোগে আরও চড়ছে রাজনীতির পারদ।






















