Malda News: কে পড়াবে বিজ্ঞান ? মালদায় একই স্কুলে চাকরি গেল ৮ জন শিক্ষকের ! চেনা মুখগুলির আর যে দেখা পাবে না পড়ুয়ারা...
Malda SSC Case: বিজ্ঞান পড়ানোর রইল না কেউ, 'সুপ্রিম' নির্দেশের পর, মালদার একই স্কুলে চাকরি গেল ৮ জন শিক্ষকের..

করুণাময় সিংহ, মালদা: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল। একই স্কুলে চাকরি গেল ৮ জন শিক্ষকের। প্রত্যেকের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক। বিজ্ঞান পড়ানোর জন্য আর কোনও শিক্ষক রইল না ওই স্কুলে।
প্রতিদিনই পড়বে স্কুলের ঘণ্টা, পড়াশোনা, করিডোর পেরিয়ে চেনা মাঠ, খেলা সবই হবে, শুধু ক্লাসে চেনা মুখগুলির সঙ্গে আর যে দেখা হবে না। মালদায় একই স্কুলে, ৮ জনের মধ্যে ৬ জন পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক ও দুইজন জীববিজ্ঞানের শিক্ষক। জীববিজ্ঞানের শিক্ষকরাই নিতেন নিউট্রেশনের ক্লাস। এই আটজনের চাকরি যাওয়ায় বিপাকে চাঁচল এর শীতলপুর মোবারকপুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। গ্রামীণ এলাকার ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার্থে স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগ চালু করা হয়েছিল। কিন্তু একসাথে আট জন শিক্ষকের চাকরি যাওয়ায় বিজ্ঞান পড়ানোর আর কোনও শিক্ষক রইল না ওই স্কুলে। পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত প্রধান শিক্ষক।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের পুরো প্য়ানেল বাতিল হওয়ায়, অযোগ্যদের সঙ্গে চাকরি গেছে হাজার হাজার যোগ্য শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর। সংখ্যাটা ২৫ হাজার ৭৫২। এক নিমেষে কষ্টার্জিত চাকরি হারিয়ে কার্যত আকাশ ভেঙে পড়েছে তাঁদের মাথার ওপর! SSC-র চাকরিহারা কৃষ্ণমৃত্তিকা নাথ বলেছেন,কিছুক্ষণ আগেই আমার টিচার-ইন-চার্জের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি বলছেন, কৃষ্ণমৃত্তিকা তুমি আজ স্কুলে আসবে না, এটাও ভাবতে পারছি না।' SSC-র চাকরিহারা রুবি চোঙদার বলেন, 'আমার ৫ বছরের ছোট বাচ্চা। মা-বাবা অসুস্থ। বৃদ্ধ শ্বশুর-শাশুড়ি, এদের নিয়ে কোথায় গিয়ে দাঁড়াব এখন!'কেউ ছিলেন মিউজিকের শিক্ষিকা। বৃহস্পতিবার আদালতের রায়ের পর থেকে তাঁর জীবন থেকে সুর উধাও। কোনও পরিবারে আবার স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে চাকরি খুইয়েছেন। স্কুলে শিক্ষকতার স্থায়ী চাকরি পেয়ে ফেলোশিপ ছেড়েছিলেন যিনি, চাকরি হারিয়ে তিনি আজ দিশেহারা।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২০১৬ সালের SSC-র পুরো প্যানেল বাতিল হওয়ার পর এভাবেই আতান্তরে পড়েছে বহু পরিবার। উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ার বাসিন্দা কৃষ্ণমৃত্তিকা নাথ। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোকাল মিউজিকের গোল্ড মেডেলিস্ট উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের কৈলাসচন্দ্র রাধারানি বিদ্যাপীঠে শিক্ষিকা হিসেবে কাজ করছিলেন। রাতারাতি চাকরি হারিয়ে আতান্তরে পড়েছেন তিনি। তৎকালীন রাজ্যপাল তথা আচার্য এমকে নারায়ণনের কাছ থেকে স্বর্ণপদক নেওয়ার সেই ছবি আঁকড়ে এখন কাঁদছেন তিনি। স্বামী বেসরকারি চাকুরে। বাড়িতে অসুস্থ বাবা-মা। নিজের ২ বছরের সন্তানেরও শ্বাসকষ্টের চিকিৎসা চলছে। এখন কী করবেন, ভেবে কূল পাচ্ছেন না কৃষ্ণমৃত্তিকা।



















