(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
বাংলায় MA, TET পাস; সংসার চালাতে ভরসা আজ চপের দোকান
সাত বছর আগে পাস করেছেন টেট। এখন রাস্তার ধারে তেলেভাজা আর খাবারের দোকান খুলেছেন পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের বিশ্বজিৎ কর মোদক।
হংসরাজ সিংহ ও সমীরণ পাল, পুরুলিয়া এবং উত্তর ২৪ পরগণা: বাংলায় এমএ (MA)। সাত বছর আগে পাস করেছেন টেট (TET)। এখন রাস্তার ধারে তেলেভাজা আর খাবারের দোকান খুলেছেন পুরুলিয়ার (Purulia) বান্দোয়ানের বিশ্বজিৎ কর মোদক। আর উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Paragana) হাবড়া স্টেশনে (Habra Station) চায়ের স্টল খুলেছেন ইংরেজিতে এমএ পাস করা এক ছাত্রী।
দক্ষিণবঙ্গের দুই জেলার দুটি দোকান। একটি পুরুলিয়ার বান্দোয়ানে। আরেকটি উত্তর ২৪ পরগনার হাবরা স্টেশনের ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে। পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ কর মোদক। সংসার চালাতে এখন তেলেভাজার দোকান খুলেছেন। দোকানের নাম দিয়েছেন চপ শিল্প। বিশ্বজিতের কথায়, "তেলেভাজা করেও রোজগার করা যায়, স্বাবলম্বী হওয়া যায়। চাকরির আশায় না থেকে, আমি এই ব্যবসা শুরু করি। এবং এই ব্যবসায় আমি লাভ দেখতে পাই। সেজন্যই আমি দোকানের নাম রেখেছি চপ শিল্প।"
২০০৮ সালে মানবাজার মানভূম মহাবিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক হন বিশ্বজিৎ। ২০১০ সালে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ করেন। ২০১৪ সালে প্রাইমারি টেটে উত্তীর্ণ হন। কিন্তু চাকরি জোটেনি। শেষে চুক্তিভিত্তিক গ্রামীণ সম্পদ কর্মী বা VRP-কাজে যোগ দেন তিনি। কিন্তু স্বল্প বেতনের চাকরিতে সংসার চালানো সম্ভব হচ্ছিল না। বাধ্য হয়ে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই বান্দোয়ান বন বিভাগের অফিসের সামনে খুলে ফেলেন তেলেভাজা ও খাবারের দোকান। চলতি বছরের অক্টোবরেই এই দোকান দেন তিনি।
আরও পড়ুন, 'গোটা রাজ্যটাই ম্যানহোল হয়ে গিয়েছে', দমদমে ব্যক্তির মৃত্যু ঘিরে তৃণমূলকে নিশানা বিরোধীদের
বিশ্বজিৎ বলেন, "এখানে সকালে মুড়ি, ঘুগনি, চপ, রুটি, ডিমসেদ্ধ, ডিমভাজা এবং বিকালে মাংসের ঘুগনি, আলুর, ব্রেড চপ, এসব পাওয়া যায়। সারাদিনে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকার বিক্রি করি। তার মধ্যে ৫০০-৭০০ টাকা লাভ। আমি বান্দোয়ান পঞ্চায়েতের ভিআরপি। অবসর সময়ে সকালে ও বিকেলে দোকান করি। টেট উত্তীর্ণ হয়েছি। প্রাইমারি পায়নি। ৫-সাড়ে ৫ হাজার টাকা বেতন পাই। সংসার চলছে না বলেই দোকান।"
কিছুদিন আগেই এমনই এক খবরের শিরোনামে এসেছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার হাবরার টুকটুকি দাস। ইংলিশে এমএ পার করে হাবরা স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে খুলেছেন চায়ের দোকান। দোকানের নামের সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতাকে। পয়লা নভেম্বর থেকে চালু হওয়ার পর স্টেশনের ভিড়ে মুখে মুখে ঘুরছে এমএ ইংলিশ, চায়েওয়ালি-র কথা।
টুকটুকি বলেছিলেন, "আজ তেরো দিন। এখন রেসপন্স খুবই ভাল। আপাতত চা আছে। বিকেলে সিঙাড়াটা থাকছে। এরপর মোমো, স্যান্ডউইচ করব।" এলাকার এক মেয়ের জীবনযুদ্ধের কথা শুনে তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। হাবরা শ্রীচৈতন্য কলেজ থেকে ইংরেজিতে স্নাতক। রবীন্দ্রভারতী মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দূরশিক্ষায় ইংরেজিতে এমএ। বাবার সম্বল বলতে বাড়িতে সামান্য একটা মুদির দোকান। ইউটিব থেকে আইডিয়া নিয়ে নানা স্বাদের চায়ের দোকান খুলে ফেলেন টুকটুকি।