RG Kar Doctor Death:'পুলিশের পায়ে ধরে কেঁদেছি তবু দেখতে দেয়নি, শেষকৃত্যের চাপ ছিল' মন্তব্য আরজি কর কাণ্ডে নির্যাতিতার মা-বাবার
RG Kar News: এবিপি আনন্দের ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন অনুষ্ঠানে এদিন নির্যাতিতার বাবা-মা স্পষ্ট জানালেন সুবিচার দাবিতে অনড় তাঁরা।
কলকাতা: তিলোত্তমার মৃত্যুর ২ মাস পার। হত্যার দু'মাস পর কী চাইছে পরিবার? ক্রমশ পিছনে সরে যাচ্ছে তিলোত্তমার ন্যায়বিচারের দাবি? কী মত CBI-এর ভূমিকায়? কী বলছেন ডাক্তারদের অনশন নিয়ে? এবিপি আনন্দের ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন অনুষ্ঠানে এদিন নির্যাতিতার বাবা-মা স্পষ্ট জানালেন সুবিচার দাবিতে অনড় তাঁরা।
প্রশ্ন: সিবিআই প্রথম চার্জশিট জমা দিয়েছে, তদন্ত যতদূর এগিয়েছে বলে জানতে পেরেছেন, তাতে সন্তুষ্ট?
উত্তর: সিবিআইয়ের উপরে আমাদের ১০০ শতাংশ ভরসা আছে। সুপ্রিম কোর্ট যেরকম মনিটর করছে, আশা করছি আমরা বিচার পাব।
প্রশ্ন: এর আগে যুক্তি তক্কো বলেছিলেন সিবিআইকে আরও সময় দিতে হবে,
উত্তর: হ্যাঁ দিচ্ছি এখন বাধ্য হয়ে। ধৈর্য্য ধরছি। ধীরে ধীরে যদি বিচারটা চলে আসে। তথ্যপ্রমাণ তো কিছুটা নষ্ট হয়েছে। অবশ্যই সিবিআইয়ের উপরে ভরসা রাখছি।
প্রশ্ন: যোগাযোগ রাখছে সিবিআই?
উত্তর: যোগাযোগ ঠিকই রাখা হচ্ছে। কিন্তু ওঁরা বলছেন বলা বারণ আছে। আমরা কিছু জানতে পারছি না। আমার মেয়েকে দেখে মনে হয়েছে অপরাধী একজন না, অনেকজন। আমার মেয়ের এরকম নৃশংস হত্যাকাণ্ড যাঁরা ঘটিয়েছে তাঁরা যেন ধরা পড়ে এবং দোষীরা যেন কঠোর থেকে কঠোরতম সাজা পায়।
প্রশ্ন: অর্থাৎ অগ্রগতির কথা আপনাদের জানানো হচ্ছে না?
উত্তর: না সেটা হচ্ছে না। আমাদের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রাখছেন। চার্জশিট আমাদের পড়ে দেখতে বলেছেন কী আছে।
প্রশ্ন: আপনারা বলেছেন সন্দেহের কথা? কারণ চার্জশিটে এখনও পর্যন্ত কিন্তু নির্দিষ্ট একজনের নামই আছে
উত্তর: প্রথম চার্জশিটটা তো ওর (সঞ্জয় রায়) বিরুদ্ধেই জমা পড়েছে। সেই জন্য ওর নামটাই দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীকালে যে কী কী দেখা হবে এবং আস্তে আস্তে চেষ্টা হবে সমাধান করার এবং বিচার যাতে আমরা পাই তা নিশ্চিত করা হবে বলে ওরা জানিয়েছেন।
প্রশ্ন: অভয়ার বিচার চাই, ঘটনার ২ মাস ৯ দিন পর কি সেই দাবি ক্রমশ পিছনে চলে যাচ্ছে?
উত্তর: সেটা তো সেদিন সুপ্রিম কোর্টে দেখলাম, আমার মেয়ের বিচার সম্পর্কে ৫ মিনিটের কথা হল। তারপরে তো কলেজের সুরক্ষার বিষয়ে কথা হচ্ছিল। টিভির দিকে তাকিয়ে দেখি খালি। প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাই না।
প্রশ্ন: অভয়ার বিচার নিয়ে আপনারা মনে করেছন সুপ্রিম কোর্টে যতটা আলোচনা চেয়েছিলেন, ততটা হয়নি।
উত্তর: তারিখটা অনেক দেরিতে পড়ছে, সেদিকেই তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে। অভয়ার বিচার সবাই চাইছে। বিচারে যে কী অগ্রগতি এটাও আমরা জানতে পারছি না।
প্রশ্ন: আপনাদের পুত্র-কন্যা সম জুনিয়র ডাক্তারদের অনশন ১৪ দিনে পড়ল। বরফ গলার ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে না। কোনও সমাধান সূত্র দেখতে পাচ্ছেন?
উত্তর: না, সমাধান সূত্র দেখতে পাচ্ছি না। যাঁদের কাছে ওঁদের দাবি, তাঁরা তো শুনছেন না। কেন জানি না বিষয়টাকে নির্দিষ্ট চোখ দিয়ে দেখতে পারছেন না।
প্রশ্ন: সারিফ হাসান বলেছিলেন দিদি (নির্যাতিতা) বেশি কাজ করত বলে ক্ষুব্ধ ছিল সবাই, কর্মস্থলে কি কোথাও সমস্যা হচ্ছিল?
উত্তর: সারিফ হাসান মিথ্যে কথা বলছিল। আমাদের ৯ তারিখ সারাদিন পাহারায় রেখেছিল। যাতে একসঙ্গে থাকতে না দেওয়া হয়। আমার পাশে বসেছিল, যাতে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারি। তখন নামটা জানতাম না। দুদিন পরে টিভিতে জানতে পারি। ওর সঙ্গে আরও ৪-৫ জন ছিল। যাতে সিদ্ধান্ত নিতে না পারি। সব কিছুই ও সামলেছি। সারিফ হাসান যেটা করছিল সেটা মলম লাগাচ্ছিল। বলেই ফেলেছিলাম এত উপকার করছে, বাড়িতে আসবে।
প্রশ্ন: কখন বুঝলেন এটা নিস্বার্থ উপকার নয়?
উত্তর: আমার বাড়ির লোক আমার পাশে ছিল না। কারণ ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এমনকী ও উঠলে কাউকে বসিয়ে দিচ্ছে। বলছে জল খান। দুদিনের মধ্যেই ভুল ভাঙে। আমি ওর নামটা খুঁজতে থাকি। তারপর ওর নাম সিবিআইকে জানিয়েছি।
আমার কর্মস্থলে মেয়েকে খুন হয়েছে। এখানে ময়নাতদন্ত করাব না বলেছিলাম। বলেছিলাম দরকার হলে বডি রেখে দেব। কিন্তু এত চাপ ছিল, আমাদের কোনও কথা গ্রাহ্য হয়নি। আমরা যখন গেট থেকে বেরোচ্ছি হঠাৎ দেখি কোথায় নিয়ে চলে গেল। আমাদের বলা হয়নি কোথায় মেয়েকে নিয়ে যাচ্ছি। তখন টালা থানায় যাই। পুলিশ আমাদের গাড়িতে উঠে বোঝায় যে ময়নাতদন্ত ঠিকঠাক হয়েছে। আমরা দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত করতে চেয়েছিলাম। অনেক পুলিশ আমাদের ঘিরে ধরেছিল। সোমনাথ দে মেয়ের দেহ নিয়ে চলে গিয়েছিল। আমরা পরিস্থিতির শিকার।
প্রশ্ন: সেমিনার রুমে ঢুকতে দেওয়া হয়েছিল?
উত্তর: ওই ৯ তারিখ যেন কোনও বাবা-মায়ের জীবনে না আসে। তিন বার ফোনে কথা হয়েছে। মনে হচ্ছিল মাথার উপর আকাশ ভেঙে পড়েছে। ৩ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। রীতিমতো পুলিশের পায়ে ধরে কেঁদেছি। আমাকে দেখতে দেওয়া হয়নি।
প্রশ্ন: দ্রুত শেষকৃত্য করার চাপ কোথা থেকে এসেছিল?
উত্তর: আমার মেয়ের দেহ প্রায় ২ ঘণ্টা আগে পৌঁছে গিয়েছিল বাড়িতে। আমরা যখন পৌঁছই দেখি এদিক ওদিক পুলিশ দিয়ে ঘেরা। পুলিশে প্রচুর চাপ ছিল। প্রশাসনের চাপ ছিল। দেহ যখন নিয়ে চলে যাচ্ছে, তখন ওঁর বান্ধবী বারণ করে যে কাকিমা নিতে দিও না। আমি আটকাতে পারিনি।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।