Sundarban Situation: বেহাল বাঁধের অবস্থা, দুর্যোগের পূর্বাভাসে আতঙ্কিত সুন্দরবনের নদীপাড়ের বাসিন্দারা
South 24 Parganas: বঙ্গে এখনও বর্ষা আসেনি। কিন্তু প্রাকবর্ষা পর্বেই দানা বাঁধছে আশঙ্কা। বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপে দুর্যোগের সিঁদুরে মেঘ দেখছেন, উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দারা।

গৌতম মণ্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: বর্ষা এলেই শুরু হয় বাঁধের ভাঙন। দুর্যোগের আশঙ্কায়, গেরস্থালীর জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখতে হয়ে নামখানা ব্লকের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের। দুর্যোগ কেটে গেলে ভিটেমাটিতে ফিরে শুরু করতে হয় নতুন করে। ফ্রেজারগঞ্জের বাসিন্দা থেকে বিরোধীদের অভিযোগ, কাটমানির কারণেই বছর বছর উপকূলবর্তী এলাকার মানুষের এই দুর্ভোগ। অভিযোগ অস্বীকার করে প্রশাসনের দাবি, বাঁধ মেরামতির কাজ চলছে দ্রুতগতিতে।
আতঙ্কিত নদীপাড়ের বাসিন্দারা: একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগের ধাক্কায় মাটির বাঁধের কঙ্কালসার চেহারা। জলের ধাক্কায় নডবড়ে সাগরপাড়ের সিমেন্টের স্ল্যাব। চলছে, মাটির বাঁধের ওপরের চটের ঢাকনা সেলাইয়ের কাজ। প্রশাসন সূত্রে খবর, সুন্দরবনের নদী ও সমুদ্র বাঁধের দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কিমি। এরমধ্যে ৫০০ কিমির বেশী মাটির বাঁধ বেহাল৷ আয়লা পরবর্তী সময়ে কংক্রিটের বাঁধ তৈরির কথা হলেও, কাজ এগোয়নি। একাধিক প্রাকৃতিক দুর্যোগের ধাক্কায় বাঁধগুলোর কঙ্কালসার চেহারা। নামখানার হাতানিয়া-দোয়ানিয়া নদীর পাশে দীর্ঘ এক কিমি মাটির বাঁধের একাধিক জায়গায় ধস নিয়েছে। এই মাটির বাঁধই এলাকার মানুষের চলাচলের রাস্তাও। মাটির বস্তা, বাঁশের পাইলিং দিয়ে রক্ষার চেষ্টা করলেও জলোচ্ছ্বাসে ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গিয়েছে। এই দুর্যোগে আতঙ্কিত নদীপাড়ের বাসিন্দারা। নামখানার এক বাসিন্দা অসীম আড়ি বলেন, "এখানে গ্রামের মানুষরা সবাই আতঙ্কে থাকে। আমরা চাইছি যে এই বেহাল দশা থেকে মুক্তি পেতে, পাকাপোক্ত কাজ হোক। এই যে বস্তা দিয়ে সামান্য মাটি ফেলে যে কাজগুলো হয়, ওখানকার মাটি নিয়ে ওখানেই ফেলা হয়, ওটাই আবার নদীতে চলে যায়।''
বর্ষা আসার আগেই ভয়াবহ ভাঙনের মুখে বকখালি, ফ্রেজারগঞ্জ পর্যটন কেন্দ্রের পাশে মৎস্যজীবীদের ২টি গ্রাম, হাতি কর্নার ও লক্ষ্মীপুর। বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী ২টি গ্রামে কংক্রিটের বাঁধের একটা বড় অংশে বছর দুয়েক আগে ধস নামে। তারপর থেকে বাঁধের ওই অংশ দিয়ে নিয়মিত নোনা জল ঢুকছে গ্রামে। জল বাড়লে অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে, বকখালি, ফ্রেজারগঞ্জের হোটেলে আশ্রয় নিতে হয় গ্রামবাসীদের। ভিটেমাটি গিলে খেয়েছে সর্বগ্রাসী সাগর। সেচ দফতর তড়িঘড়ি বাঁধ মেরামতি শুরু করলেও আতঙ্ক তাড়া করে বেড়াচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। সেচ দফতরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তাঁরা। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের জন্য এর আগে বাঁধ মেরামতির কাজও বন্ধ করে দেন গ্রামবাসীরা। ফ্রেজারগঞ্জের বাসিন্দা কুন্তি দাস বলছেন, "আবার যেতে হবে। ওই ভাঙা-গড়ার সংসার। আতঙ্কে তো সব সময় আছি। সব সময়ের জন্য আমরা আতঙ্কে আছি। কী করব, কী না করব, বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে জিনিসপত্র নিয়ে কোথায় যাব।''






















