Panchayat Elections 2023: ভোটে কত সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী, গাইডলাইনও বেঁধে দিল আদালত
Calcutta High Court: আদালত কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানো নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও, নামমাত্র বাহিনী দিয়ে ভোট করানো নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল আগাগোড়া।
সৌভিক মজুমদার, আশাবুল হোসেন, কলকাতা: হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্ট। গত কয়েকদিন ধরে, কেন্দ্রীয় বাহিনী (Central Forces) নিয়ে বিরামহীন আইনি লড়াইয়ের সাক্ষী হয়েছে বাংলা। তবে, কোথাও কোনও সুরাহা পায়নি রাজ্য নির্বাচন কমিশন (WB Elections Commission) ও রাজ্য সরকার (Panchayat Elections 2023)। এবার বাহিনী নিয়ে কমিশনকে কার্যত গাইডলাইন বেঁধে দিল হাইকোর্ট (Calcutta High Court)।
আদালত কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানো নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও, নামমাত্র বাহিনী দিয়ে ভোট করানো নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল আগাগোড়া। এর নেপথ্যে কৌশল দেখছিলেন বিরোধীরা। বুধবার সেই কৌশলেই জল ঢেলে দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের নিরাপত্তায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি করে, কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন শুভেন্দু অধিকারী এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। এই মামলায় গত ১৩ জুন কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতিতে হবে পঞ্চায়েত ভোট।
আরও পড়ুন: Panchayat Poll 2023: রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের জয়েনিং রিপোর্ট গ্রহণ করলেন না রাজ্যপাল
এর পরই, হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে নেওয়ার কথা জানান রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা। তিনি জানান, আদালত যা নির্দেশ দিয়েছে, তা মেনে চলবে কমিশন। এর পর, গত বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েত নির্বাচন সংক্রান্ত রায়ের অংশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার।
এই মামলায়, রাজ্য় নির্বাচন কমিশনের ভূমিকায় অত্য়ন্ত ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি নির্দেশে জানিয়ে দেন, শুধু স্পর্শকাতর জেলায় নয়, আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে সব জেলাতেই মোতায়েন থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। প্রথমে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মানার কথা বলা হলেও, পরে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে রাজীব জানান, এখনও কোনও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি। তবে হবে।
এর পরই, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের বিরোধিতায় সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও রাজ্য সরকার। এই মামলায় মঙ্গলবার, কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশই বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্ট। এর মধ্যেই, রাজ্য নির্বাচন কমিশন কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ না মানায়, আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলে মামলা করেন শুভেন্দু অধিকারী এবং কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরি।
সেই মামলাতেই বুধবার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব জেলার জন্য পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়ার পাশাপাশি, কত সংখ্যক বাহিনী চাইতে হবে, তাও রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দিষ্টভাবে জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বলা হয়েছে, ২০১৩ সালে যে সংখ্য়ক কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন ছিল, এবার তার থেকে কম বাহিনী চাইলে হবে না, বরং তার থেকে বেশি চাইতে হবে, কারণ এখন জেলার সংখ্যা বেশি।
এ নিয়ে অধীরের বক্তব্য, "এক একটি জেলায় এক কোম্পানি করে অর্থাৎ ১০০-১৫০ করে! এ কি ছেলেখেলা হচ্ছে বাংলার মানুষ এবং বিচারপতিদের সঙ্গে?"
সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, "কোর্টে আরও একবার ধাক্কা খেয়েছে নির্বাচন কমিশন, বেহায়ার মতো। ছ্যাবলামো করছে নির্বাচন কমিশন? ওরা তো স্ট্যাটুইটরি বডি। ওদের কাজ সরকারের দালালি করা নয়। তৃণমূল নেতাদের পিছনে ঘোরা কাজ নয় ওদের। কমিশনে যাঁরা বসে রয়েছেন, তাঁরা অপদার্থ, অযোগ্য।"
তার পরই বুধবার কমিশনকে কার্যত গাইডলাইন বেঁধে দিল কমিশন। এবার কি করবে রাজ্য় নির্বাচন কমিশন? সব আদালতে একের পর এক ধাক্কার পর কি নিজেদের দায়িত্ব পালন করবে? প্রশ্ন বিরোধীদের।