Jissu Sengupta Exclusive: পিছন ফিরে পালাতে যাব, সৌমিত্র জ্যেঠু ডাকলেন, 'যীশু, এদিকে আয়'
Jissu Sengupta on Soumitra Chatterjee: 'যাঁরা বাংলায় অভিনয় করেন, সেটা থিয়েটার, ফিল্ম, যাত্রা, ছোটপর্দা.. যে সমস্ত পুরুষ অভিনেতা রয়েছেন বাংলায়, তাঁরা সবাই চাইবেন একবার অন্তত তাঁদের কাছে এই চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ আসবে। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ আমার কাছে সত্যিই আশীর্বাদের মত'
কলকাতা: তিনি শুনেছিলেন, তাঁর জীবন নিয়ে তৈরি করা হবে বায়োপিক। দায়িত্বে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় (Parambrata Chatterjee)। খুশি হয়েছিলেন তিনি। কেবল বলেছিলেন, 'আমার অন্য কিছু নিয়ে কোনও মতামত নেই। কেবল আমার অল্প বয়সের চরিত্রে কে অভিনয় করছেন সেটা নিয়ে সামান্য মতামত রয়েছে।' নিজের পছন্দের তালিকা কিংবদন্তির সামনে রেখেছিলেন পরমব্রত। সেখান থেকেই একটা নাম বেছে নিয়েছিলেন তিনি। কারণ, তাঁর মনে হয়েছিল, অল্প বয়সে তাঁর ভূমিকায় একমাত্র সেই অভিনেতাকেই মানাতে পারে। সেই নামটা যীশু সেনগুপ্ত (Jissu Sengupta)। আর সেই কিংবদন্তির নাম? সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (Soumitra Chatterjee)। ছবির নাম, 'অভিযান' (Abhijaan)।
নিজের চরিত্রে অভিনয় করার জন্য নিজেই যীশু সেনগুপ্তকে বেছে নিয়েছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। এই দায়িত্ব একজন অভিনেতার কাছে কতটা বড়? পাঁচতারা হোটেলের নরম সোফায় এবিপি লাইভের ক্যামেরার সামনে গা এলিয়ে আমেজ করে বসেছিলেন যীশু। প্রশ্ন শুনে সোজা হয়ে বসলেন একবার। একটি গভীর শ্বাস নিয়ে বললেন, 'অবশ্যই একটা ভীষণ বড় দায়িত্ব। কিন্তু এই চরিত্রে অভিনয়ে করার লোভ প্রত্যেক অভিনেতারই থাকবে। যাঁরা বাংলায় অভিনয় করেন, সেটা থিয়েটার, ফিল্ম, যাত্রা, ছোটপর্দা.. যে সমস্ত পুরুষ অভিনেতা রয়েছেন বাংলায়, তাঁরা সবাই চাইবেন একবার অন্তত তাঁদের কাছে এই চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ আসবে। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ আমার কাছে সত্যিই আশীর্বাদের মত। এই ছবিটা আসলে একটা অটোবায়োগ্রাফি। পরম খুব সুন্দর করে গল্পটাকে বেঁধেছে। উনি নিজের মুখে অতীতের যে ঘটনাগুলো বলছেন, তারপর সেগুলো ঘটতে দেখা যাচ্ছে।'
আরও দেখুন: 'অন্ধকার দিক, রেশারেশি থাকলেও অদ্ভুত সুন্দর সম্পর্ক ছিল সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও উত্তমকুমারের'
একটু থামলেন যীশু। স্মিত হেসে আবার বলতে শুরু করলেন, 'সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় নিজে ছবিতে রয়েছেন, আবার আমিই তার ভূমিকায় অভিনয় করছি...এটাকেই বলে কেস খাওয়া। আমি এক্কেবারে কেস খেয়েছিলাম। গোটা শ্যুটিং আমি সৌমিত্র জ্যেঠুর থেকে পালিয়ে বেরিয়েছি। আমার আর ওনার একসঙ্গে সিন ছিল না কখনও। ওনার প্রধমার্ধে শ্যুটিং থাকত আমার দ্বিতীয়ার্ধে। সৌমিত্র জ্যেঠু ফ্লোর ছেড়েছেন খবর নিয়ে তারপর আমি ফ্লোরে ঢুকতাম। কিন্তু একদিন ঠিক ধরা পড়ে গেলাম। দক্ষিণ কলকাতার একটা বাড়িতে শ্যুটিং চলছে, আমি ফ্লোরে ঢুকেই দেখি জ্যেঠু বসে। ঘুরে পালাতে যাব, উনি ডাকলেন.. 'অ্যাই এদিকে আয়.. শুনলাম তুই নাকি পালিয়ে বেরাচ্ছিস আমার থেকে।' মনে মনে ভাবলাম, 'ভগবান পরম এটাও বলে দিয়েছে!' তারপর জ্যেঠুর কাছে গিয়ে বললাম, 'তোমার সামনে আসার সাহস আমার সেই। কারণ আমি নিজেই জানি না কেমন অভিনয় করছি! পালানো ছাড়া আমার আর উপায় নেই। আমায় পরম বলছে ভালো হচ্ছে, নিজের মতো কাজ করার চেষ্টা করছি। কিন্তু আমি জানি না কী হচ্ছে।' জ্যেঠু বললেন, 'না না আমি রাশ দেখেছি। খুব ভালো হচ্ছে। তুই যেমন অভিনয় করছিস করে যা।' সেইদিন উনি আমায় সাহস দিয়েছিলেন। এরপর ছবি মুক্তি পেলে দর্শক বিচার করবেন আমার অভিনয় ঠিক হয়েছে না ভুল..'