Rukmini Maitra Exclusive: 'যখন প্রথম অভিনয়ে আসি, সবাই ভেবেছিল রুক্মিণী শুধুই কমার্শিয়াল নায়িকা, সেজেগুজে থাকে'
Rukmini Maitra Exclusive: একের পর এক আইকনিক চরিত্র, আর একটা অপরটার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। যখন 'বিনোদিনী'-র ভূমিকায় অভিনয় করছেন রুক্মিণী, তখন তাঁর কাছে সত্যবতীর অফার আসে, কিন্তু তিনি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।
কলকাতা: কাচের বাইরে তখন বর্ষার মেঘলা আকাশ। যেন আবহাওয়ার মেজাজের সঙ্গে মিলিয়েই একটা গাঢ় নীল পোশাক বেছেছিলেন তিনি। ঢুকতেই টোল পড়া ঝলমলে হাসিমুখে অভিবাদন, তারপরে এক কাপ ক্যাপুচিনো। ক্যামেরার সামনে বসে হালকা লিপস্টিক বুলিয়ে নিতে নিতে গল্প করছিলেন দিব্য। সাক্ষাৎকার শুরু আগে, নিজের গলার জরোয়া হারে হাত দিয়ে বললেন, 'জানেন... এই হারটা আমার মায়ের। ১৪ বছর বয়সে কিনেছিলেন মা।' বাস্তব জীবনে তিনি ঝলমলে, সাবলীল... কিন্তু পর্দার সত্যবতী কেমন? খবর দিলেন রুক্মিণী মৈত্র (Rukmini Maitra)।
একের পর এক আইকনিক চরিত্র, আর একটা অপরটার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। যখন 'বিনোদিনী'-র ভূমিকায় অভিনয় করছেন রুক্মিণী, তখন তাঁর কাছে সত্যবতীর অফার আসে। শুনেই প্রথমে নাকচ করে দিয়েছিলেন তিনি। পরে রাজি হন। আর তারপর থেকে শুরু হয় তিলে তিলে সত্যবতীকে গড়ে তোলার সফর। রুক্মিণী বলছেন, 'এর আগে সোহিনী (সরকার) হোক বা ঋদ্ধিমা (ঘোষ), প্রত্যেকে সত্যবতীর ভূমিকায় দুর্দান্ত ছিলেন। এবার নতুন সত্যবতী আমি। আমাদের সংলাপ থেকে শুরু করে চিত্রনাট্য সাজানো, রূপটান... সবই অন্য কেউ করে। আমাদের অভিনেতা অভিনেত্রীদের একটাই কাজ থাকে, চরিত্রে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করা। আমি খুঁজছিলাম আমার জীবনের সত্যবতী কে যাঁর থেকে আমি কিছু শিখতে পারি? ভাবতে ভাবতে আমার নিজের দিদার কথা মনে হল। তাঁর স্বীকৃতি দরকার নেই কারণ তাঁর কোনও হীনমন্যতা নেই। তিনি তাঁর নিজের পরিবারের জন্য লড়াই করে যান। যেখানে সবাই হেরে যাচ্ছে, তিনি যেন জেতার একটা রাস্তা দেখিয়ে দেন। চিরকাল আমাদের ঠাকুমারা, দিদারা এটাই করে আসছেন। তাঁরা ভালবেসে বুদ্ধি করে পরিবারটাকে এগিয়ে নিয়ে যায়। এভাবেই কিছুটা চিত্রনাট্য থেকে নিয়ে, কিছুটা নিজের জীবন থেকে নিয়ে আমি সত্যবতীকে গড়ে তুলেছি। আমি আমার মতো চেষ্টা করেছি। বাকিটা দর্শকে আর ভগবানের হাতে। আশা করি মানুষের ভাল লাগবে।'
'বিনোদিনী'-র জন্য সত্যবতীকে ফিরিয়ে দিলে আফশোস থাকত? অভিনেত্রী বলছেন, 'যখন বিনোদিনী ছবিটার শ্যুটিং চলছে, তখন মুম্বইয়েরও কয়েকটা কাজের অফার এসেছিল। বাধ্য হয়ে সেটা আমায় ফিরিয়ে দিতে হয়। সেভাবেই প্রথমে ফিরিয়ে দিয়েছিলাম সত্যবতীকেও। কিন্তু দেড় মাস পরে বিরসা (দাশগুপ্ত, পরিচালক) ফের সত্যবতীর অফার নিয়ে এল। আমি ওকে প্রশ্ন করেছিলাম, এর আগে এতজন তো সত্যবতীকে ফুটিয়ে তুলেছে। নতুন আর কি বাকি রয়েছে? বিরসা জানিয়েছিল, এই সত্যবতী অন্তঃসত্ত্বা। সেটা শুনে প্রথম ভাল লেগেছিল আমার। আসলে মূলধারার ছবির নায়িকাদের সাধারণত যে চরিত্রে দেখা যায় না, সেই চ্যালেঞ্জগুলো নিতে আমার ভাল লাগে। কখনও দুই বাচ্চার মা, কখনও সন্ত্রাসবাদী.. চরিত্রে একটু চ্যালেঞ্জ না থাকলে আমিই অভিনয় করে মজা পাব না। প্রথম যখন অভিনয়ে আসি, সবাই ভেবেছিল রুক্মিণী শুধুই কমার্শিয়াল নায়িকা, মেনস্ট্রিম, সেজেগুজে থাকে... আমি কিন্তু একেবারেই তেমন নই। আমার প্রথম ছবি করেছিলাম মেক আপ ছাড়া। তবে সত্য়বতীর চরিত্রকে আমার 'হ্যাঁ' বলার কারণই ছিল এই সাড়ে ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বিনোদিনীর পরে ওজন ঝরিয়েছিলাম আমি। আমায় আবার এই ছবিটার জন্য ওজন বাড়াতে হয়েছিল। সব মিলিয়ে আমি নিজের মতো করে চেষ্টা করেছি, বাকিটা দর্শকের হাতে।'