Sandipta Sen Exclusive: '৪৯৮ ধারারও অপব্যবহার হয় প্রতিনিয়ত, তেমনই #Metoo-র ও ভাল-খারাপ দিক রয়েছে'
Actress Sandipta Sen Exclusive:কোনও পুরুষের বিরুদ্ধে এমন হেনস্থার অভিযোগ উঠলে, ঠিক কী পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যায় তার পরিবারের মানুষ, সেই গল্পই তুলে ধরা হবে 'নষ্টনীড়'-এ
কলকাতা: প্রতিবাদ করতে গেলে কি খুব 'প্রতিবাদী' হাবভাব হওয়া জরুরি? চোখা কথা, রোখা মেজাজ.... এ সব বোধহয় সবসময় প্রয়োজন পড়ে না। ঠিক যেমন সংসারকে ভালবাসলেও প্রয়োজন পড়ে না কেরিয়ার বিসর্জন দেওয়ার। 'রমণীর গুণ' না থাকলে সুখী পরিবার কী 'নষ্টনীড়' হয়? নাকি সেই দায় সমানভাবে বর্তায় নারী ও পুরুষের ওপর? অদিতি রায়ের (Aditi Roy)-এর পরিচালনায় অপর্ণার চরিত্রের মোড়কে, এই প্রশ্নগুলোই সমাজের দিকে ছুঁড়ে দেবেন সন্দীপ্তা সেন (Sandipta Sen)।
'হইচই' (Hoichoi) ওয়েব প্ল্যাটফর্মের নতুন ওয়েব সিরিজ 'নষ্টনীড়'-এর মুখ্যভূমিকায় দেখা যাবে সন্দীপ্তাকে। কেন এই সিরিজকে বেছে নিয়েছিলেন অভিনেত্রী? সন্দীপ্তা বলছেন, 'প্রথম কারণ ছিল, এই সিরিজের পরিচালক অদিতিদি। উনি এত সুন্দর করে বিভিন্ন বিষয়গুলো চিত্রনাট্যে রাখেন যে সেটা যে কোনও অভিনেত্রীর কাছেই লোভনীয়। দ্বিতীয় কারণ, এই ছবিতে আমার চরিত্রায়ণ। মানুষ বেশিরভাগ সময়েই আমায় প্রতিবাদী চরিত্রে, ঠোঁটকাটা সংলাপ বলতে দেখে এসেছেন। অপর্ণাও প্রতিবাদী, তারও নিজের কেরিয়ার আছে, আবার সে সংসারটাকেও ভালবাসে। অপর্ণা প্রতিবাদ করে, সংসার বেঁধে রাখার চেষ্টা করে, কিন্তু তার জন্য তার প্রতিবাদী ভাবমূর্তির প্রয়োজন পড়ে না। এই চরিত্রে যেমন অনেকগুলো স্তর আছে, তেমনই সন্দীপ্তা থেকে অপর্ণা হতে গিয়ে আমায় নিজেকে ভাঙতে হয়েছে অনেক। আর তৃতীয় এবং অন্যতম কারণ হল, গল্পের বিষয়। #Metoo নিয়ে আমরা এখন সবাই ওয়াকিবহাল। এই ধারা আমাদের সঙ্গে হওয়া সমস্ত অন্যায়গুলোকে বলার সাহস দিয়েছে। এই ধরনের একটা কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকা সবসময়েই একটা অন্যরকম ভাললাগা, দায়িত্ববোধ তৈরি করে।'
#Metoo প্রতিবাদের ভাষা জুগিয়েছে অনেককে। কিন্তু, কোনও পুরুষের বিরুদ্ধে এমন হেনস্থার অভিযোগ উঠলে, ঠিক কী পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যায় তার পরিবারের মানুষ, সেই গল্পই তুলে ধরা হবে 'নষ্টনীড়'-এ। কিন্তু সবসময় কী সত্যি হয় এই হেনস্থার অভিযোগ? সন্দীপ্তা বলছেন, 'যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এই #Metoo। এই ধারা আমাদের অনেক কিছু বলার, প্রতিবাদ করার সাহস যুগিয়েছে। শুধু নারী হিসেবে নয়, একজন মানুষ হিসেবে আমি সবসময় এই ধারার সমর্থন করি। কিন্তু অনেকে এর অপব্যবহারও করে। সমাজে এখনও অনেক মহিলা রয়েছেন, যাঁরা ৪৯৮-এর মতো ধারারও অপব্যবহার করেন। কিছু মানুষ রয়েছেন যাঁরা এমন অপব্যবহার করেই যাবেন। তবে তাদের জন্য, #Metoo-কে খারাপ বলব না কখনও।'
অভিনেত্রী মানেই তো আবেগকে পর্দায় ফুটিয়ে তোলা। এত গূঢ্য বিষয় নিয়ে অভিনয় করতে গিয়ে কখনও ব্যক্তিগত জীবনে প্রভাব পড়ে না? সন্দীপ্তা বলছেন, 'এই স্যুইচ অন-অফ করাটা আমাদের কাজের মধ্যে পড়ে। আমি মনস্তত্ত্ব নিয়ে পড়াশোনা করেছি। বুঝি যে ব্যক্তিগত জীবন আর অভিনয়ের আবেগটা আলাদা রাখা কতটা জরুরি। না হলে মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি হবে। আর আমার সাইকোল্যজি নিয়ে পড়াশোনা আমার অভিনয়ের কেরিয়ারে প্রত্যেক পদে আমায় সাহায্য করে। পড়াশোনা, প্র্যাকটিস করতে গিয়ে আমায় বহু মানুষের সঙ্গে দেখা করতে হয়, তাঁদের সমস্যার কথা শুনতে হয়। আর অভিনয়ের অন্যতম শর্তই তো মানুষকে নিরীক্ষণ করা। এখন মনে হয়, ভাগ্যিস সাইকোলজিটা পড়েছিলাম....'