Covid Booster Dose Exclusive: শরীরের ইমিউনিটি সক্রিয় রাখার চাবিকাঠি, কেন নেবেন বুস্টার ডোজ?
কীভাবে দেওয়া হবে বুস্টার ডোজ?
কলকাতা: ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে টিকাকরণই একমাত্র পথ। দেশ সহ সারা বিশ্বের চিকিৎসক থেকে বিশেষজ্ঞরা একাধিকবার জানিয়েছেন একথা। সময় যত যাচ্ছে ততই বাড়ছে টিকার চাহিদাও। কিন্তু এই টিকার দুটি ডোজই যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন বুস্টার ডোজও। দিনকয়েক আগে তা জানিয়েছেন এইমস প্রধান রণদীপ গুলেরিয়া।
কিন্তু কী এই বুস্টার ডোজ? কেনই বা প্রয়োজন বুস্টার ডোজের? কীভাবে দেওয়া হবে তা? এইসব প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে সাধারণ মানুষের মনে। উল্লেখ্য, শুধু করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রেই প্রথমবার বুস্টার ডোজের কথা বিশেষজ্ঞরা বলছেন এমনটা নয়। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সোয়াইন ফ্লু, হেপাটাইটিস বি সহ জলাতঙ্ক রোগের ক্ষেত্রেও বুস্টার ডোজ দেওয়া থাকে।
বুস্টার ডোজ কী?
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন শরীরের ইমিউনিটি তথা অনাক্রম্যতা সক্রিয় রাখার কাজই করবে বুস্টার ডোজ। ভাইরোলজিস্ট অমিতাভ নন্দীর কথায়, শরীরে অ্যান্টিজেন প্রবেশ করালে ইমিউন সিস্টেমটা সক্রিয় হয়ে ওঠে। ফলে ভাইরাসকে মেরে ফেলতে তা সক্ষম হবে। এইভাবে ভ্যাকসিন কাজ করে। লেখাপড়ার ক্ষেত্রে যেমন বারবার তা চর্চা করা প্রয়োজন। ঠিক তেমনই ভ্যাকসিন দেওয়ার পর তার কার্যক্ষমতা সক্রিয়তা বজায় রাখাও প্রয়োজন। এই সক্রিয়তা বজায় রাখার কাজ করবে বুস্টার ডোজ। মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস জানাচ্ছেন, ভবিষ্য়তে সংশ্লিষ্ট ভাইরাস আক্রমণ করলেও সে সম্পর্কে শরীর অবগত থাকবে। ফলে তা দ্রুত নিঃশেষ করতে সক্ষম হবে। এই কাজের সক্রিয়তা বজায় রাখবে বুস্টার।
কেন প্রয়োজন বুস্টার ডোজ?
অমিতাভ নন্দীর কথায়, শরীর সংশ্লিষ্ট জীবাণু এবং ইমিউন সিস্টেমের উপর নজরদারি করে। ভ্যাকসিন দেওয়ার একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর ইমিউন সিস্টেমের ধার কমতে পারে। যে মাত্রায় আগে কাজ করতে তা ধীরে ধীরে কমবে। সেই প্রক্রিয়াটা চালু রাখার জন্য বুস্টার ডোজের প্রয়োজন। চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস জানাচ্ছেন, বর্তমানে ইমিউন সিস্টেমটা প্রবল বেগে হচ্ছে। বুস্টার ডোজ প্রয়োগ করলে জীবাণুকে শেষ করার জন্য যতটুকু প্রতিরোধ প্রয়োজন ততটাই করা সম্ভব হবে। অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় থাকবে।
কীভাবে দেওয়া হবে বুস্টার ডোজ?
বিভিন্ন দেশের গবেষণা অনুযায়ী অ্যান্টিবডির স্থায়িত্ব ৮ থেকে ১২ মাস। ফলে অ্যান্টিবডি ফের প্রয়োজন বলে মনে করছেন চিকিৎসক মহলের একাংশ। অরিন্দম বিশ্বাসের কথায়, বিদেশের পরিকাঠামোর সঙ্গে এদেশের পরিকাঠামোর পার্থক্য রয়েছে। আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের উপর ট্রায়ালের ফল এবং অন্য কোনও দেশের মানুষের উপর ট্রায়ালের ফলের পার্থক্য থাকতে পারে। আমদানি করা গবেষণা ভারতের ক্ষেত্রে নাও খাটতে পারে। তাই একটা বা দুটো ডোজের পর কতটা অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে সেই হিসেবে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এই দেশে বুস্টার ডোজের ক্ষেত্রেও পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন আছে বলে মনে করছেন তিনি।
কত দিন অন্তর বুস্টার ডোজ প্রয়োজন?
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন কোনও অ্যান্টিবডিই চিরস্থায়ী নয়। একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর তা কার্যক্ষমতা কমতে থাকে। তবে তা কতটা গতিতে কমে তা পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষ। এপ্রসঙ্গে ডা. অরিন্দম বিশ্বাস বলছেন, একটা ডোজ হলেও কিছুটা অ্যান্টিবডি তৈরি হবে। দ্বিতীয় ডোজ হলে আরেকটু বেশি। নির্দিষ্ট সময়ের পর বুস্টার ডোজ দিলে অ্যান্টিবডির মাত্রা বাড়তে থাকবে। চিকিৎসক অমিতাভ নন্দীর কথায়, ইমিউনিটির কাজ করার ধরণ কোভিডের ক্ষেত্রে ঠিক কী রকম এখনও তা জানা যায়নি। ফলে একটা বুস্টার ডোজ দেওয়ার কত দিন পর আরেকটা দরকার বা আদৌ দরকার কি না, এখনই তা বলা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন তিনি।
ডেল্টার প্রকোপ থেকে দেশবাসীকে বাঁচাতে বুস্টার ডোজ বা তৃতীয় টিকা দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এইমস প্রধান রণদীপ গুলেরিয়া। এইমস অধিকর্তা বলেন, ‘করোনার যে নতুন রূপের হদিশ মিলছে, তার থেকে বাঁচতে বুস্টার টিকা নিতে হতে পারে।’ তাঁর বক্তব্য, ‘দ্বিতীয় ধাপে যেসব টিকা বাজারে আসবে, সেগুলিকেই বুস্টার টিকা হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। সেই সব টিকার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রথম ধাপের টিকার তুলনায় স্বাভাবিক ভাবেই বেশি হবে।‘ এইমস প্রধানের এই বক্তব্যের পরই বুস্টার ডোজ নিয়ে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে সাধারণ মানুষের মনে।
Check out below Health Tools-
Calculate Your Body Mass Index ( BMI )