Corona Recovery: করোনা থেকে সেরে ওঠার পরেও ধূমপান ? ক্ষতি কতটা
করোনার পর ধূমপানে বিকল হতে পারে ফুসফুসও ...
কলকাতা: করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা পিছনে ফেলে দিয়েছে প্রথমবারকে। উত্তুঙ্গ গ্রাম। হু হু করে বাড়তে থাকা মৃত্যুর সংখ্যা থেকে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। সবেতেই আতঙ্ক ছড়াচ্ছে করোনার সেকেন্ড ইনিংস। সেই সঙ্গে নতুন করে উঠছে বেশ কিছু প্রশ্ন। কোন কোন ক্ষেত্রে করোনা আঘাত হানে প্রবল ভাবে ? করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে তীব্র হচ্ছে অক্সিজেনের চাহিদা। এক্ষেত্রে ধূমপায়ীদের সমস্যা যে বেশি, এই নিয়ে দ্বিমত প্রায় নেই বললেই চলে।
করোনা থেকে সেরে উঠে ধূমপানে বিকল করতে পারে ফুসফুস :
করোনা ভাইরাস যেহেতু শ্বাসনালী ও রেসপিরেটরি সিস্টেমকে সরাসরি আক্রমণ করে, তাই ধূমপায়ীদের জন্য করোনা প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। মেডিকা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের সিনিয়র চিকিত্সক অর্পন চক্রবর্তী জানালেন, করোনায় রক্ত জমাট বাঁধে শরীরে, বিশেষত ফুসফুসে। কোভিড আক্রান্তদের ফুসফুসের বিভিন্ন আর্টারিতে ক্লট তৈরি হয়। ধূমপানের ফলে এই রক্ত জমে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। তাই ধূমপায়ীরা করোনা থেকে সেরে উঠলে ধূমপান এক্কেবারে ছেড়ে দেওয়া আবশ্যক।নইলে ফল প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে।
কোন রক্তপরীক্ষায় শরীরে রক্ত জমাট বেঁধেছে কি না ধরা পড়ে ?
ডা. অর্পন চক্রবর্তী জানালেন, কোভিডে একেই ফুসফুস বিশেষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপরে যদি ধূমপান চলতে থাকে তাহলে 'লাংস অ্যাটাক' অবধি ঘটতে পারে। করোনা আক্রান্ত হলে কয়েকটি ব্লাড টেস্ট করতে দেওয়া হয়। তার মধ্যে আবশ্যক হল ডি-ডাইমার। ডি-ডাইমার স্বাভাবিকভাবে ৫০০ র নীচে থাকা উচিত। এই টেস্ট করে দেখা হয়, শরীরের কোথাও রক্ত জমাট বাঁধছে কি না। এই পরীক্ষার ফলের উপর ভিত্তি করে কোভিড-পরবর্তী কালে ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ রক্ত পাতলা করার ওষুধও দেওয়া হয়ে থাকে। নইলে ব্লাড ক্লটের সম্ভাবনা বাড়ে। এর উপর যদি কেউ ধূমপান শুরু করেন, তাহলে তা প্রাণঘাতীও হয়ে উঠতে পারে।
ডা. চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, ধূমপায়ীদের ফুসফুস এমনিতেই ক্ষতিগ্রস্ত। তার উপর করোনার কামড়ে তা ঝাঁঝরা হয়। এর উপর যদি আবার ধূমপান চলে তার থেকে খারাপ ফুসফুসের জন্য আর কিছু হতে পারে না।
।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সার্বিকভাবেই কমিয়ে দেয় ধূমপান :
সিনিয়র পালমনোলজিস্ট ডা. ধীমান গঙ্গোপাধ্যায় জানালেন, শুধু করোনা থেকে বাঁচতে নয়, আরও বহু বহু রোগ-জীবাণু থেকে বাঁচতেই সিগারেট ছাড়ার কোনও বিকল্প নেই। ধূমপায়ীদের ফুসফুস এমনিই যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত, তার উপর যদি করোনার মতো ভাইরাস শরীরে ঢোকে, তাহলে তা সহজেই বিপদ ডেকে আনা।
ইনস্টিটিউট পালমো কেয়ার অ্যান্ড রিসার্চ-এর চিকিৎসক ডা. পার্থসারথি ভট্টাচার্য জানালেন, ধূমপান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। মদ্যপানও তাই। তাই তামাক সেবন, ধূমপান ও মদ্যপানে করোনা কেন, অন্য অসুখও করতে পারে। তাই এই মুহূর্তে ছাড়তেই হবে সিগারেট। দরকারে চুইংগাম খেতে পারেন, ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন এই ব্যাপারে, জানালেন ডা. ভট্টাচার্য।
তবে সিগারেট ছাড়লেই যে বিপদ মুক্ত তা নয়, ধীরে ধীরে রেসপিরেটরি ফিজিওলজি ইমপ্রুভ করবে, জানালেন চিকিৎসকরা ।
ধূমপানে কোন বয়সের মানুষরা বেশি ঝুঁকিতে? করোনায় বয়স্কদের আক্রান্ত হওয়ার হার বেশ। কিন্তু ধূমপায়ীদের ক্ষেত্রে কম বয়সেও একই রকম ঝুঁকি। ডা. ধীমান গঙ্গোপাধ্যায় জানালেন, শ্বাসনালীতে সবসময়ই জীবাণু ঢুকছে। শরীরে একটা ব্যবস্থা আছে, যা জীবাণু প্রতিরোধ করে। যখন তার সংখ্যা অনেক বেশি হয়, তখন শরীর তা সামলে উঠতে পারে না। এই নেশাগুলো ইমিউনিটি ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কী করা উচিত? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হঠাৎ করে ইমিউনিটি বাড়ানো যায় না। এর কোনও ম্যাজিক ড্রাগ নেই।
কয়েকটি নিয়ম মেনে চললেই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ইমিউনিটি বাড়ে। যেমন –
• সময়ে খাওয়া ও সুষম খাবার খাওয়া।
• নির্দিষ্ট সময় ভাল ঘুমের প্রয়োজন।
• ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব জরুরি। বিএমআই যেন ২২-২৩ এর বেশি না হয়।
• প্রতিদিন কিছু কায়িক পরিশ্রম দরকার।
করোনা আবহে মদ্যপানের উপকারিতা নিয়ে অনেক ভ্রান্ত ধারণা সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরপাক খাচ্ছে। মদ্যপান নিয়ে সেইসব ভুল ধারণা সরাসরি উড়িয়ে দেন বিশেষজ্ঞরা। পরিমিত মদ্যপান নয়, মদ্যপান ত্যাগের পরামর্শই দিলেন পালমনোলজিস্টরা।
Check out below Health Tools-
Calculate Your Body Mass Index ( BMI )