Pahalgam Satellite Images: হামলার দু’মাস আগে পহেলগাঁওয়ের স্যাটেলাইট ইমেজ চেয়ে পর পর আবেদন, আমেরিকার সংস্থার ভূমিকায় প্রশ্ন
Pahelgam Terror Attack: সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম The Print বিষয়টি সামনে এসেছে।

নয়াদিল্লি: পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ছক কষা হয় কতদিন আগে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন ভারতের গোয়েন্দারাও। আর সেই আবহেই চাঞ্চল্যকর তথ্য় উঠে এল। জানা যাচ্ছে, গত ২২ এপ্রিল হামলার দু’মাস আগে হঠাৎ করে পহেলগাঁওয়ের স্যাটেলাইট ইমেজের চাহিদা বেড়ে গিয়েছিল। উচ্চমানের ছবি স্যাটেলাইট ছবি খোঁজা হচ্ছিল পহেলগাঁও এবং সংলগ্ন এলাকার। (Pahalgam Satellite Images)
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম The Print বিষয়টি সামনে এসেছে। তারা জানিয়েছে, আমেরিকার মহাকাশ প্রযুক্তি সংস্থা Maxar Technology-র ওয়েবসাইটে হঠাৎ করেই পহেলগাঁও এবং সংলগ্ন এলাকার উচ্চমানের ছবির চাহিদা বেড়ে যায়। ২ থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি সবচেয়ে বেশি আবেদন জমা পড়ে। পহেলগাঁওয়ের উচ্চমানের স্যাটেলাইট ইমেজ চেয়ে Maxar Technologies-এর কাছে ওই সময় ১২টি আবেদন জমা পড়ে, যা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। ২০২৪ সালের জুন মাসেও একই ভাবে পহেলগাঁওয়ের স্যাটেলাইট ইমেজের চাহিদা বেড়ে যায়। (Pahelgam Terror Attack)
কিন্তু এই ঘটনা নেহাত কাকতালীয় নয় বলেই জানা যাচ্ছে। কার পাকিস্তানের জিওস্পেশিয়াল সংস্থা Business Systems International Pvt Ltd (BSI), Maxar Technologies সংস্থার অংশীদার হয়ে ওঠার পর পরই পহেলগাঁওয়ের স্য়াটেলাইট ইমেজের চাহিদা বৃদ্ধি পায়. Maxar Technologies-এ BSI-এর অংশীদারিত্ব এবং পহেলগাঁওয়ের স্যাটেলাইট ইমেজের ক্রমবর্ধমান চাহিদার সময়কালের মধ্যে সংযোগ খুঁজে পাচ্ছেন অনেকে। বিষয়টিকে একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না আরও একটি কারণে, যা হল, BSI-এর মালিকের ট্র্যাকরেকর্ড।
পাকিস্তানি সংস্থা BSI-এর মালিক ওবায়দুল্লা সৈয়দ। আমেরিকা থেকে বেআইনি ভাবে পাকিস্তানি সরকারকে কম্পিউটার ইক্যুইপমেন্টস ও সফ্টওয়্যার সলিউশনস সরবরাহের জন্য আগেই তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করে আমেরিকা। আমেরিকার আদালত তাঁকে এক বছরের সাজা শোনায়। তাই ওবায়দুল্লার সংস্থার হাতে Maxar-এর অংশীদারিত্ব ওঠা এবং তার পর পহেলগাঁওয়ের স্যাটেলাইট ইমেজের চাহিদাবৃদ্ধির সময়কালকে ঘিরে প্রশ্ন উঠছে। যদিও BSI-এর Maxar Technologies-এর অংশীদার হয়ে ওঠা এবং পহেলগাঁওয়ের স্যাটেলাইট ইমেজের চাহিদা, দুই ঘটনার মধ্যে প্রত্যক্ষ সংযোগ খুঁজে পাওয়া যায়নি। কিন্তু The Print-এর রিপোর্টটি সামনে আসতেই Maxar Technologies-এর ওয়েবসাইট থেকে পার্টনার হিসেবে BSI-এর নাম সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যদিও গত ৯ মে পর্যন্ত ওয়েবসাইটে তাদের নাম জ্বলজ্বল করছিল।
The Print-এর তরফে বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে Maxar Technologies জানায়, ‘পহেলগাঁও বা তার সংলগ্ন এলাকার স্যাটেলাইট ইমেজ চেয়ে BSI-এর তরফে কোনও আবেদন করা হয়নি’। ওয়েবসাইট থেকে BSI-এর নাম সরানো নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি তারা।
Maxar Technologies-এর স্যাটেলাইট ইমেজের উপর নির্ভরশীল তাবড় কর্পোরেট সংস্থা। তাদের বেসরকারি পার্টনারের সংখ্যাই ১২০-র বেশি। ভারতের একাধিক সংস্থাও তাদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে, যেমন, Antrix Corporation Ltd, CYRAN AI Solutions, Lepton Software, satpalda Geospatial Services. ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO, ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রকও ছবি কেনে তাদের কাছ থেকে। Maxar Technologies থেকে স্যাটেলাইট ইমেজ কিনতে গেলে, ছবিপিছু খরচ পড়ে ৩ লক্ষ টাকার মতো। ছবির গুণমানের উপর দাম নির্ভর করে।
জানা গিয়েছে, ৩০ থেকে ১৫ সেন্টিমিটার রেজলিউশনের স্যাটেলাইট ইমেজ সরবরাহ করে Maxar Technologies. পিক্সেল যত কম, ততই ভাল ছবি। পহেলগাঁওয়ের ছবি চেয়ে আবেদন জমা পড়ে চলতি বছরের ১২, ১৫, ১৮, ২১ এবং ২২ ফেব্রুয়ারি। হামলার ১০ দিন আগে, ১২ এপ্রিলও ছবি চেয়ে আবেদন জমা পড়ে। পাশাপাশি, ২৪ এবং ২৯ এপ্রিলও পহেলগাঁওয়ের স্যাটেলাইট ইমেজ চেয়ে আবেদন যায় Maxar Technologies-এর কাছে। তার পর থেকে আর কোনও আবেদন জমা পড়েনি রিপোর্টি প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত।
কোনও এলাকার উচ্চমানের স্যাটেলাইট ইমেজ কেনা মোটেই সহজ কাজ নয়। কারণ বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারের বিধিনিষেধের মধ্যে পড়ে। নিরাপত্তাজনিত কারণেই এব্যাপারে বিধিনিষেধ রয়েছে। কিন্তু Maxar Technologies-এর ক্লায়েন্ট হলে, সেক্ষেত্রে বিধিনিষেধ নেই। তাই ISRO-র এক বিজ্ঞানীর কথায়, “সমস্যা হল, Maxar একটি ব্য়বসায়িক সংস্থা। টাকার বিনিময়ে তারা যাকে ইচ্ছে ছবি বিক্রি করতে পারে।” উচ্চমানের স্যাটেলাইট ইমেজের জন্য এখনও পর্যন্ত Maxar Technologies-এর মতো বিদেশি সংস্থার উপর নির্ভরশীল ভারত। কারণ এখনও সমমানের প্রযুক্তি তৈরি করা যায়নি।
তথ্যসূত্র: The Print (https://theprint.in/defence/)






















