Narendra Modi: মোদির আমেরিকা সফরে বিক্ষোভের ছায়া, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ, বিতর্কিত গুজরাত তথ্যচিত্রের প্রদর্শন
Modi US Visit: আগামী সপ্তাহেই আমেরিকা সফরে যাচ্ছেন মোদি। ২২ জুন মোদিকে হোয়াইট হাউসে স্বাগত জানাবেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
নয়াদিল্লি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) আমেরিকা সফর ঘিরে প্রস্ততি চরমে। সেই আবহেই দিল্লির উদ্বেগ বাড়াচ্ছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন। ভারতে প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে একযোগে সরব হয়েছে একাধিক মানবাধিকার সংগঠন। মোদির আমেরিকা সফর চলাকালীন আগামী সপ্তাহে সেই নিয়ে ওয়াশিংটনে বিক্ষোভ দেখাতে চলেছে তারা। তবে দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্কে এর প্রভাব ততটা পড়বে না, প্রকাশ্যে সেই নিয়ে হোয়াইট হাউস থেকে কোনও বিবৃতিও আসবে না বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা (Modi US Visit)।
আগামী সপ্তাহেই আমেরিকা সফরে যাচ্ছেন মোদি। ২২ জুন মোদিকে হোয়াইট হাউসে স্বাগত জানাবেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সেই নিয়ে চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রস্তুতি চলছে। বিশেষ করে চিনকে নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে ইতিমধ্যেই। কারণ ভারত এবং চিনের মধ্যে ঢের আগে থেকেই সীমান্ত নিয়ে সংঘাত চলছে। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে চিনের সঙ্গে সংঘাত রয়েছে আমেরিকারও।
ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে তাই শত্রুর শত্রু বন্ধু, এই নীতি নিয়েই ভারত এবং আমেরিকা দেশ চলতে চাইছে বলে মত কূটনীতিকদের। যে কারণে ২২ জুন হোয়াইট হাউসের বাইরে মানবাধিক সংগঠনগুলি একজোট হয়ে বিক্ষোভ দেখালেও, তাতে পারস্পরিক আলোচনা এবং সম্পর্ক প্রভাবিত হবে না বলেই মিলছে ইঙ্গিত।
এখনও পর্যন্ত যে খবর মিলেছে, সেই অনুযায়ী মোদি হোয়াইট হাউসে যাবেন যখন, সেই সময় বাইরে বিক্ষোভ দেখাবে দ্য আমেরিকান মুসলিম কাউন্সিল, পিস অ্যাকশন, ভেটরান্স ফর পিস এবং বেথেসডা আফ্রিকান সিমেট্রি কোয়ালিশন প্ল্যানের মতো সংগঠন। হোয়াইট হাউসের বাইরে মোদিকে লক্ষ্য করে 'মোদি নট ওয়েলকাম', 'সেভ ইন্ডিয়া ফ্রম হিন্দু সুপ্রিমেসি'র মতো ধ্বনি তোলা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।
শুধু তাই নয়, মোদির আমেরিকা সফরের বিরোধিতায় 'হাউডি ডেমোক্র্যাসি' নামের একটি নাটকেরও আয়োজন করা হয়েছে নিউ ইয়র্কে। ২০১৯ সালে আমেরিকার টেক্সাসে সে দেশের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আতিথেয়তা গ্রহণ করেছিলেন মোদি। তাঁকে স্বাগত জানাতে আয়োজন করা হয়েছিল 'হাউডি মোদি' অনুষ্ঠান, যা কার্যতই ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারের মঞ্চে পরিণত হয়েছিল বলে সেই সময় মত প্রকাশ করেছিলেন কূটনীতিকরা। সেই অনুষ্ঠানের আদলেই ভারতের গণতন্ত্রের বর্তমান অবস্থা নিয়ে 'হাউডি ডেমোক্র্যাসি' নাটক অনুষ্ঠিত হতে চলেছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।
এর পাশাপাশি, ওয়াশিংটনে আগামী সপ্তাহে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সংগঠনের তরফে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে বিভিন্ন দেশের নীতি নির্ধারণকারী থেকে সাংবাদিক, বিশেষজ্ঞদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ওই অনুষ্ঠানে গুজরাত দাঙ্গায় মোদির ভূমিকা নিয়ে তৈরি বিতর্কিত তথ্যচিত্রের প্রদর্শন রয়েছে।
মোদির সফর নিয়ে ইতিমধ্যেই হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সংগঠনের এশিয়া বিভাগের ডিরেক্টর এলেন পিয়ার্সন বাইডেনকে চিঠি দিয়েছেন। মোদির সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তো বটেই, প্রকাশ্যেই ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি তুলে ধরার আর্জি জানান এলেন। যদিও দিল্লির সঙ্গে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম চুক্তিতেই এই মুহূর্তে আগ্রহী ওয়াশিংটন। শিকারি ড্রোন কেনা নিয়ে এই সাক্ষাতেই চুক্তি হতে পারে। তাই মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তেমন গুরুত্ব নাও পেতে পারে বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা।