Rana Kapoor Update: সনিয়ার চিকিৎসায় ২ কোটি টাকার ছবি কিনতে বাধ্য করেছিল কংগ্রেস, চাঞ্চল্যকর অভিযোগ রানা কপূরের
Yes Bank Co-Founder Accuses Congress: ইউপিএ জমানার পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী মুরলি দেওরা গোটা বিষয়টিতে পৌরহিত্য করেছিলেন বলে দাবি করেছেন রানা।
মুম্বই: দলকে পুনরুজ্জীবত করতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন দলীয় নেতৃত্ব। তার মধ্যেই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ করলেন ইয়েস ব্যাঙ্কের (Yes Bank) অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা রানা কপূর (Rana Kapoor)। জানালেন, প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার (Priyanka Gandhi Vadra) কাছ থেকে ২ কোটি টাকার ছবি কিনতে বাধ্য করা হয়েছিল তাঁকে। নিউ ইয়র্কে কংগ্রেস (Congress) সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর (Sonia Gandhi) চিকিৎসার খরচ চালাতেই গাঁধী পরিবার তাঁকে ওই ছবি কিনতে বাধ্য করে বলে অভিযোগ রানার। আর্থিক তছরুপ মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (Enforcement Directorate/ED) রানার বিরুদ্ধে তদন্ত করছে। বিশেষ আদালতে জমা দেওয়া তদন্তকারীদের চার্জশিটেই এমন তথ্য উঠে এল।
গাঁধী পরিবারের কাছ থেকে ২ কোটি টাকা দিয়ে ছবি কিনেছিলেন রানা!
ইউপিএ জমানার পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী মুরলি দেওরা গোটা বিষয়টিতে পৌরহিত্য করেছিলেন বলে দাবি করেছেন রানা। জানিয়েছেন, ছবিটি ছিল এমএফ হুসেনের আঁকা (M. F. Husain Painting)। সেটি কিনতে তাঁর উপর চাপ সৃষ্টি করেন মুরলি। তাঁকে বলা হয়, ওই ছবি না কিনলে, গাঁধী পরিবারের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি হবে না তাঁর। 'পদ্মভূষণ' সম্মান পাওয়ার ক্ষেত্রেও প্রতিবন্ধকতা তৈরি হবে। উল্লেখ্য, এ যাবৎ 'পদ্মভূষণ' সম্মান পাননি রানা।
আর্থিক তছরুপ মামলায় রানা, তাঁর পরিবার, দিওয়ান হাউজিং ফাইনান্স লিমিটেডের প্রোমোটার কপিল এবং ধীরজ ওয়াধওয়ানের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত তিনটি চার্জশিট জমা দিয়েছে ইডি। অতির্কত যে দু'টি চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে দ্বিতীয়টিতেই গাঁধী পরিবারের কাছ থেকে ছবি কেনার বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে।
তদন্তকারীদের রানা জানিয়েছেন, ছবিটির মূল্য ২ কোটি টাকা দেন তিনি। মুরলিপুত্র তথা প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ মিলিন্দ দেওয়ার হাতে চেকটি তুলে দেন। নিউ ইয়র্কে সনিয়ার চিকিৎসার জন্য গাঁধী পরিবারই ছবি বিক্রিতে উদ্যোগী হয় বলে পরে মিলিন্দই তাঁকে জানান বলে দাবি রানার।
আরও পড়ুন: Reliance-Future Group Deal: ২৪,৭০০ কোটির চুক্তি বাতিল, ফিউচার গ্রুপের হাত ছাড়ল রিলায়্যান্স
এ ব্যাপারে প্রয়াত কংগ্রেস নেতা আহমেদ পটেলের উল্লেখও করেছেন রানা। জানিয়েছেন, সনিয়ার ঘনিষ্ঠ আহমেদও এ নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। দুঃসময়ে গাঁধী পরিবারের পাশে থাকলে, আগামী দিনে তাঁকে 'পদ্মভূষণ' সম্মান দিয়ে পুরস্কৃত করা হবে বলে আহমেদ তাঁকে বোঝান বলেও দাবি করেন রানা। অন্যথায় গাঁধী পরিবারের সঙ্গে সুসম্পর্কও তৈরি হবে না, 'পদ্মভূষণ'ও পাওয়া হবে না বলে তাঁকে বোঝান মুরলি। এমনকি রানা, তার পরিবার এবং ইয়েস ব্যাঙ্ককে তার কড়া মূল্য চোকাতে হতে পারে, রানাকে এমন হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে চার্জশিটে।
২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন রানা। চার্জশিটে তাঁর যে বক্তব্য তুলে ধরেছে ইডি, তা হল, "প্রথমত, ওই ছবি কেনার কোনও ইচ্ছেই ছিল না আমার। জোর করে সেটি আমাকে বিক্রি করা হয়েছিল।" এমনকি ফোন এবং মেসেজের জবাব না পেয়ে, প্রিয়ঙ্কার কাছে থাকা ওই ছবিটি কেনার জন্য তাঁকে রাজি করাতে মুরলিপুত্র মিলিন্দ বেশ বার তাঁর বাড়িতেও হাজির হন বলে দাবি রানার। পরিস্থইতি এমন দাঁড়ায় যে, ছবিটি কিনতে বাধ্য হন বলে দাবি করেছেন তিনি।
লাগাতার চাপের মুখে পড়ে, শেষ মেশ তিনি ছবিটি কিনতে বাধ্য হন, প্রিয়ঙ্কার দফতরে দু'পক্ষের মধ্যে সমঝোতা পাকা হয় বলে তদন্তকারীদের জানিয়েছেন রানা। তাঁর দাবি, এইচএসবিসি ব্যাঙ্কে নিজের অ্যাকাউন্ট থএকে ২ কোটি টাকার চেক দিয়ে তিনি ছবিটি কেনেন।
আর্থিক তছরুপ মামলায় অভিযুক্ত রানা
ভুয়ো সংস্থার মাধ্যমে রানা এবং DHFL ৫ হাজার ৫০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন বলে অভিযোগ ইডি-র। তদন্তকারীদের অভিযোগ, ২০২০-র মার্চে ইডি তদন্ত শুরু করার পর, বিদেশে নিজের যাবতীয় সম্পত্তি বিক্রি করে দিতে রানা তৎপর হন রানা, যাতে সেগুলি বাজেয়াপ্ত না করা যায়। DHFL-এর তরফে রানাকে তথাকথিত ভাবে ৬০০ কোটি টাকা ঋণও দেওয়া হয়, যাতে DUVPL নামের একটি সংস্থায় তা বিনিয়োগ করা যায়। DUVPL সংস্থার ১০০ শতাংশ মালিকানা রানার তিন কন্যা। অথচ ওই ঋণবাবদ কোনও জামানত রাখা হয়নি বলে দাবি তদন্তকারীদের। তাই ঘুরপথে নিজের টাকাই DHFL-এর কাছ থেকে নেওয়া ঋণ হিসেবে রানা দেখিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।