Kashmir Pahalgam Incident: 'তু বাহার আ যা'... তাঁবু থেকে বের করার পরই সব শেষ, মেয়ের সামনেই করুণ পরিণতি বাবার
Kashmir News: কানে আসে আতঙ্ক ধরিয়ে দেওয়া সেই কণ্ঠস্বর। আদেশের সুরে বলা হয় 'চৌধুরী, তু বাহার আ যা।'

Kashmir Pahalgam Incident: 'তু বাহার আ যা'... তারপরেই সব শেষ। চোখের নিমেষে জঙ্গিদের গুলিতে বাবাকে খুন হতে দেখল মেয়ে। সিনেমার দৃশ্য মনে হচ্ছে? এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে বাস্তবে। তাও আবার ভূ-স্বর্গের মাটিতে। পহেলগাঁওয়ের বৈসরণে গিয়ে গতকাল ২২ এপ্রিল নারকীয় হত্যালীলা সাক্ষী থেকেছেন অনেকেই। পুণের ব্যবসায়ী সন্তোশ জগদলও স্ত্রী-কন্যাকে নিয়ে আর পাঁচজন সাধারণ পর্যটকের মতোই বেড়াতে গিয়েছিলেন কাশ্মীরে। পরিকল্পনা মতো ঘুরতে গিয়েছিলেন বৈসরণেও। আর সেখানেই সব শেষ হল।
চারপাশে যখন এলোপাথাড়ি গুলির শব্দে কান পাতা দায়, তখন প্রাণভয়ে একটা তাঁবুতে লুকিয়ে পড়েছিলেন সন্তোষ, তাঁর স্ত্রী প্রগতি এবং মেয়ে আশাবরী। আচমকাই ভেসে আসে হাড়হিম করা কণ্ঠস্বর। 'চৌধুরী' সম্বোধন করে তাঁবু থেকে বেরিয়ে আসতে বলা হয় ব্যবসায়ী সন্তোষ জগদলকে। আশাবরী জানিয়েছেন, জঙ্গিদের পরনে ছিল স্থানীয় পুলিশের পোশাক। পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নেমে আসছিল তারা। বিপদ বুঝেই বাকি আরও কয়েকজন পর্যটকের সঙ্গে তাঁবুতে আশ্রয়ের জন্য মাথা গোঁজেন তাঁরা। আশাবরী জানিয়েছেন, তাঁরা ভেবেছিলেন হয়তো জঙ্গিদের সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষীদের গুলির লড়াই চলছে। যেহেতু কাছেই একটি তাঁবুতে ঢুকে পড়েছিলেন তাঁরা, তাই ক্রমশ যেন তাঁদের দিকেই এগিয়ে আসছিল গুলির শব্দ।
তারপরেই কানে আসে আতঙ্ক ধরিয়ে দেওয়া সেই কণ্ঠস্বর। আদেশের সুরে বলা হয় 'চৌধুরী, তু বাহার আ যা।' আশাবরীর জানিয়েছেন, তাঁর বাবাকে কার্যত টেনেহিঁচড়ে বের করা হয় তাঁবু থেকে। এরপরের কথোপকথনে পর্যটকদের দোষারোপ করা হয় কারণ তাঁরা নরেন্দ্র মোদিকে সমর্থন করেন। আশাবরী আরও জানিয়েছেন, অনেক পর্যটক থাকা সত্ত্বেও জঙ্গিরা বেছে বেছে পুরুষদেরই নিশানা বানাচ্ছিল। প্রথমে জিজ্ঞেস করা হচ্ছিল তাঁরা 'হিন্দু নাকি মুসলমান'। এরপর আশাবরীর বাবাকে সম্ভবত কলমা পড়তে বলা হয়। সন্তোষ জগদল তা পারেননি। নিমেষের মধ্যে জঙ্গিদের রাইফেল থেকে আসা তিনটি বুলেট ফুঁড়ে দেয় তাঁকে। একটু গুলি লাগে মাথা। একটি কানের পিছনে। অন্যটি পিঠে। মাত্র ২৬ বছর বয়সে চোখের সামনে বাবাকে নৃশংস ভাবে খুন হয়ে দেখেছেন আশাবরী। এরপর আশাবরীর কাকার দিকে বন্দুক তাক করে একের পর এক গুলি চালাতে থাকে এক জঙ্গি। এই ঘটনার ২০ মিনিট পর পুলিশ এবং নিরাপত্তারক্ষীরা আসেন ওই এলাকায়। বাবা, কাকা আদৌ বেঁচে আছেন কিনা, তা জানতেও পারেননি আশাবরী। বিপজ্জনক বৈসরণ উপত্যকা থেকে আশাবরী, প্রগতি এবং অন্যান্যদের উদ্ধার করে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় অন্যত্র। উদ্ধারকাজে নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে সাহায্য করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও।
পরবর্তীতে জানা যায় মৃত্যু হয়েছে সন্তোষ জগদলের। মহারাষ্ট্রের ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে এই জঙ্গি হামলা। এখনও পর্যন্ত মোট ২৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।






















