Saswata Chatterjee on Narayan Debnath: আমাদের কয়েক প্রজন্মের ছোটবেলার সঙ্গী নারায়ণ দেবনাথ: শাশ্বত
তিনি আর ছোটবেলা যেন সমার্থক। তাঁর তুলি বা কলমের টানে যেন বার বার রূপ পেয়েছে বাঙালির ছোটবেলা। শিল্পীর প্রয়াণে সোশ্যাল মিডিয়ায় শোকপ্রকাশ করে আবেগে ভাসলেন অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়।
কলকাতা: তিনি আর ছোটবেলা যেন সমার্থক। তাঁর তুলি বা কলমের টানে যেন বার বার রূপ পেয়েছে বাঙালির ছোটবেলা। শিল্পী নারায়ণ দেবনাথের (Narayan Debnath) প্রয়াণে যেন এক মুহূর্তে ধাক্কা খেল কয়েক দশকের শৈশব। শিল্পীর প্রয়াণে সোশ্যাল মিডিয়ায় শোকপ্রকাশ করে আবেগে ভাসলেন অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় (Saswata Chatterjee)।
আজ ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট করেন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। একটি ছবি ভাগ করে নেন তিনি। সেখানে দেখা যায়, টেবিলে বসে লিখছেন নারায়ণ দেবনাথ। আর তার চারদিকে তাঁরই সৃষ্টি করা বিভিন্ন চরিত্রের ছবি। কোথাও হাঁদা ভোঁদা, কোথায় বাঁটুল দি গ্রেট, বেড়াল বাহাদুর বা নন্টে ফন্টে। এই ছবিটি শেয়ার করে শাশ্বত লিখেছেন, 'তিনি ছিলেন আমাদের কয়েক প্রজন্মের ছোটবেলার সঙ্গী। তাঁর সৃষ্টি আমাদের কাছে অমর হয়ে থাকবে। একটি যুগের সমাপ্তি। ওনার আত্মার শান্তি কামনা করি।'
মোবাইল, ট্যাবলেট, কম্পিউটারের এই সময়েও বুক ফুলিয়ে রাস্তায় হাঁটে ‘বাঁটুল দি গ্রেট’৷ ‘হাঁদা ভোঁদা’ বা ‘নন্টে ফন্টে’র দুষ্টুমিতে হেসে লুটোপুটি খায় আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা৷ সেই হাসিকেই কান্নায় বদলে দিলেন স্রষ্টা স্বয়ং। প্রয়াত বাংলা কমিকসের প্রবাদপ্রতিম স্রষ্টা নারায়ণ দেবনাথ।
আরও পড়ুন: আশা করি ওঁর কাজ আরও অনেক প্রজন্মের শিশুদের আনন্দ দেবে: শুভাপ্রসন্ন
নারায়ণ দেবনাথের সঙ্গে ব্যক্তিগত পরিচয় ছিল সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের (Shirshendu Mukhopadhyay)। নারায়ণ দেবনাথের স্মৃতিচারণা করে বলেন, 'আমার সঙ্গে ওঁর ব্যক্তিগত পরিচয় ছিল। তবে উনি কখনওই বেশি কথা বলতেন না। খুব বিনয়ী মানুষ ছিলেন। নিজের কথা প্রায় বলতেনই না। আমার সঙ্গে বেশ কয়েকবার তাঁর দেখা হয়েছে। তবে কখনওই যে খুব আড্ডার পরিবেশ তৈরি হয়েছিল এমন নয়। ওই যে বললাম, একটু লাজুক মানুষ ছিলেন, কুণ্ঠা ছিল কথা বলায়।'
নারায়ণ দেবনাথের কাজের জায়গা সম্পর্কে তিনি বলেন, 'তাঁর কৃতিত্বের জায়গা সম্পর্কে আমি অবহিত এই কারণেই যে বাংলায় এই ধরণের কাজ খুব কম হয়েছে। নারায়ণ দেবনাথ দীর্ঘদিন ধরে একনিষ্ঠভাবে এই মাধ্যমটিতে কাজ করে গেছেন। ৯৬ বছর বয়সে প্রয়াত হওয়ার কিছুদিন আগে একটু অসুস্থ হয়েছিলেন। রাত পর্যন্ত তিনি কাজ করেছেন। এটিই একটি অসাধারণ ব্যাপার। দীর্ঘদিন ধরে একটাই মাধ্যমে তিনি কাজ করে গেছেন। তাঁর 'হাঁদা ভোঁদা', তাঁর 'বাঁটুল দি গ্রেট' তো বলতে গেলে প্রায় কিংবদন্তির মতো হয়ে গেছে, এত জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। সব মিলিয়ে তাঁর ঐকান্তিকতা, তাঁর নিষ্ঠার কোনও তুলনা নেই। ৯৬ বছর বয়সে তিনি চলে গেলেন, পরিণত বয়সেই গেলেন। তবে একটাই সন্তোষের কথা, তিনি সারাজীবন অবিশ্রাম কাজ করে যেতে পেরেছেন। তাঁকে বাঙালি বহুদিন মনে রাখবে।'