Prevention of Wasteful Expenditure: বিয়ে হোক ছিমছাম, খাবার নষ্ট, অপব্যয় হোক বন্ধ, বিল উঠল লোকসভায়
Prevention of Wasteful Expenditure Bill 2020: ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসেই প্রাইভেট মেম্বার্স বিল হিসেবে বিলটি প্রথম লোকসভায় আনা হয়। শুক্রবার ফের সেটি উত্থাপন করেন পঞ্জাবের কংগ্রেস সাংসদ জসবীর সিংহ গিল।
নয়াদিল্লি: গ্রিকদের মতো না হলেও, 'বিগ ফ্যাট ওয়েডিং'-এর চল রয়েছে ভারতেও। কিন্তু দু'জন মানুষ একসঙ্গে থাকবেন, তার জন্য় এত খাওয়ান-দাওয়ানের প্রয়োজন কী, এই প্রশ্নও জোরাল হয়েছে সাম্প্রতিক কালে। সংসদে সকলের সহযোগিতা পেলে এবার বিয়ের জমকালো আয়োজনের উপর এবার পড়তে পারে কোপ। সেই মর্মে বিল উঠল লোকসভায়। বিলটি পাস হলে জমকালো বিয়ের অনুষ্ঠানের খরচ-খরচা, খাবারের পদ এমনকি অতিথির সংখ্যাও বেঁধে দেওয়া হতে পারে। বিয়ের অনুষ্ঠান ঘিরে অপব্যয় রোখাই উদ্দেশ্য এই বিলের। (Prevention of Wasteful Expenditure)
উদ্দেশ্যর সঙ্গে মিল রয়েছে বিলটির নামেও। বিলটির নাম প্রিভেনশন অফ ওয়েস্টফুল এক্সপেনডিচার অন স্পেশাল অকেশন্স বিল ২০২০। নবদম্পতিকে দামি উপহার দেওয়ার পরিবর্তে, সেই টাকা দরিদ্র, দুঃস্থ, অনাথ এবং সমাজের পিছিয়ে পড়া শ্রেণির উন্নয়নের জন্য দান করার প্রস্তাব রয়েছে বিলটিতে। সরকারি অথবা বেসরকারি অলাভজনক সংস্থার মাধ্যমে টাকা দান করা যাবে। (Prevention of Wasteful Expenditure Bill 2020)
২০২০ সালের জানুয়ারি মাসেই প্রাইভেট মেম্বার্স বিল হিসেবে বিলটি প্রথবিয়ে হোক ছিমছাম, খাবার নষ্ট, অপব্যয় হোক বন্ধ, বিল উঠল লোকসভায়ম লোকসভায় আনা হয়। শুক্রবার ফের সেটি উত্থাপন করেন পঞ্জাবের কংগ্রেস সাংসদ জসবীর সিংহ গিল। বিলটি নিয়ে আলোচনা হবে লোকসভায়। জসবীরের কথায়, "জমকালো বিয়ের আয়োজন করতে গিয়ে প্রচুর টাকা খরচ হয়ে যায়। বিশেষ করে কনেপক্ষের পরিবারের উপর চাপ পড়ে বেশি। এমন অনেক ঘটনা সামনে এসেছে, যেখানে জমি, সম্পত্তি বেচে, ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে জমকালো আয়োজন করতে বাধ্য হয়েছেন অনেকে। এই অপব্যয় রোখা গেলে, ভবিষ্যতের জন্য ভাল। সেই টাকায় কন্যাভ্রূণ হত্যা রোখা যাবে। বন্ধ হবে মেয়েদের বোঝা।"
Introduced Private Members Bill "Prevention of Wasteful Expenditure on Special Occasions Bill". HIGHLIGHTS
— Jasbir Singh Gill MP official account (@JasbirGillKSMP) August 4, 2023
Not more that 50 people in Barat
Not more than 10 dishes to be served
Not more than Rs 2500 in Shagan or Gifts
Will help in improving sex ratio
No more foeticide@IYC pic.twitter.com/jyq4wY3rSN
জসবীর জানিয়েছেন, ২০১৯ সালে একটি বিয়েবাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে গিয়ে দেখেন, প্রায় ৩০০ ট্রে ভর্তি খাবার রয়েছে। তার মধ্যে অন্তত ১৩০টি ট্রে-তে হাতও ছোঁয়াননি কেউ। পরে ওই সব খাবার ফেলা যায়। তখনই তাঁর মাথায় বিয়ে এবং অনুষ্ঠানবাড়িতে অপব্যয় রোখার বিষয়টি আসে। বরপক্ষ এবং কনেপক্ষের তরফে ঠিক কত সংখ্যক মানুষকে বিয়েতে ডাকা হবে, তাও বেঁধে দেওয়ার পক্ষে জসবীর। তাঁর মতে, সব মিলিয়ে ১০০-র বেশি অতিথি ডাকা কাম্য নয়। ১০টির বেশি পদ না রাখাই ভাল। উপহারের দামও ২৫০০ টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়। তার পরিবর্তে ওই টাকা সমাজকল্যাণের জন্য দান করা উচিত।
অন্যদের জ্ঞান দেওনার পরিবর্তে নিজের পরিবারে এই নীতি তিনি প্রয়োগ করেছেন বলেও জানিয়েছেন জসবীর। তিনি জানিয়েছেন, এ বছরই নিজের ছেলে এবং মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন তিনি। সব মিলিয়ে ৩০-৪০ জনকেই আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। যদিও জসবীরই প্রথম নন, বিয়ের অনুষ্ঠানে অপব্যয় রুখতে এর আগেও বার বার দাবি উঠেছে। ২০১৭ সালে বিজেপি-র সাংসদ গোপাল চিনায়া শেট্টি একই ভাবে প্রাইভেট মেম্বার্স বিল উত্থাপন করেছিলেন লোকসভায়। বিয়েবাড়ি-সহ সব ধরনের অনুষ্ঠানে খরচ-খরচার সীমা বেঁধে দেওয়ার পক্ষপাতী ছিলেন তিনি। তারও আগে কংগ্রেস সাংসদ রঞ্জিত রঞ্জন ফেব্রুয়ারি মাসে ম্যারেজ (কম্পালসারি রেজিস্ট্রেশন অ্যান্ড প্রিভেনশন অফ ওয়েস্টফুল এক্সপেনডিচার) বিল ২০১৬ পেশ করেন লোকসভায়। তার আওতায় বিয়ের খরচ ৫ লক্ষ টাকা পেরিয়ে গেলে, তার ১০ শতাংশ দরিদ্র পরিবারের কন্যাদের বিয়েতে দান করতে হেব বলে প্রস্তাব রাখেন তিনি।
তবে বার বার এই ধরনের বিল জমনা পড়লেও, আজও সেই মর্মে আইন পাস হয়নি। কারণ লোকসভায় প্রাইভেট মেম্বার্স বিল পাস করানোয় বিস্তর বাধা-বিঘ্ন আসে। কারণ এই ধরনের বিলে সরকারের অনুমোদন থাকে না। কোনও একজন সাংসদ ব্যক্তিগত ভাবে বিল পেশ করেন সংসদে। ১৯৫২ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত দেশে মাত্র ১৪টি প্রাইভেট মেম্বার্স বিল পাস হয়েছে। যদিও বিয়ে এবং অনুষ্ঠানবাড়িতে অপব্যয় রোখার দাবিতে সরব হয়েছে বহু সংগঠনও। রাষ্ট্রপুঞ্জের খাদ্য এবং কৃষি সংগঠনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতি বছর গোটা বিশ্বে ১৭০ কোটি টন খাবার নষ্ট হয়, যা মোট উৎপাদিত খাবারের এক তৃতীয়াংশ। বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ১২১টি দেশের মধ্যে ভারত রয়েছে ১০৭তম স্থানে। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেকই শিশু, দু'বেলা ভরপেট খেতে পায় না যারা, যারা ভোটে অপুষ্টিতে। এমন পরিস্থিতিতে জমকালো বিয়ের আয়োজন, থালা থালা খাবার নষ্ট করা অমানবিকতারি পরিচয় বলে মত সমাজকর্মীদের।