Salman Khan House Firing: সলমনের বাড়িতে গুলি চালানো যুবক লকআপে আত্মঘাতী, পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন, নেপথ্যে কি অর্থযোগ?
Mumbai Police: এই ঘটনায় থানাগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠছে, তেমনই প্রশ্ন উঠছে মুম্বই পুলিশের ভূমিকা নিয়েও।
মুম্বই: সলমন খানের বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন। তদন্ত চলাকালীনই থানার মধ্যেই আত্মঘাতী হলেন অভিযুক্ত যুবক। অনজ থাপান নামের ৩২ বছরের ওই যুবকের মৃত্যুতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। আর এই ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়ছে মুম্বই পুলিশের ভূমিকা। কারণ এই নিয়ে গত ন’মাসে মুম্বইয়ের বিভিন্ন থানার লকআপে হেফাজতে থাকাকালীন তিন জনের মৃত্যুর ঘটনা সামনে এল। অনুজ আত্মঘাতী হননি, তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি করছেন আত্মঘাতী যুবকের পরিবারের লোকজনও। এর সঙ্গে তোলাবাজি, অর্থযোগ রয়েছে কি না, সেই নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। (Salman Khan House Firing)
এই ঘটনায় থানাগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠছে, তেমনই প্রশ্ন উঠছে মুম্বই পুলিশের ভূমিকা নিয়েও। গত সপ্তাহেই পঞ্জাব থেকে অনুজকে গ্রেফতার করে মুম্বই পুলিশের অপরাধ দমন শাখা। বুধবার মুম্বই পুলিশের সদর দফতরে, প্রথম তলার শৌচাগারে অনুজ আত্মঘাতী হন বলে খবর। বিছানার চাদরে ফাঁস লাগিয়ে তিনি ঝুলে পড়েন বলে জানা যায়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসা চলাকালীনই তিনি মারা যান। বিষয়টি সামনে আসতেই, তা নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু হয়েছে। (Mumbai Police)
গত ২৪ এপ্রিল ভোরবেলা সলমনের বাড়ির সামনে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চলে। সলমনের বাড়ির দেওয়ালেও গুলির দাগ স্পষ্ট চোখে পড়ে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, মোটরসাইকেলে চেপে এসে সলমনের বাড়ির সামনে গুলি চালিয়েছিল দুই আততায়ী, যাদের অস্ত্র জোগাড় করে দিয়েছিলেন অনুজ। কিন্তু গ্রেফতারির পর লকআপে কী কারণে আত্মঘাতী হলেন তিনি, কারও চোখে পড়ল না কেন, সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। হেফজতে এই মৃত্যুতে বিশদ তদন্তের দাবি উঠছে।
গুলি চলার পর পরই সলমনের বাড়িতে গিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে। সেখানে সলমনের বাবা সেলিম খানের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। সেই সময় সংবাদমাধ্যমে সেলিম জানিয়েছিলেন, টাকা আদায়ের জন্য সাধারণ এই ধরনের ঘটনা ঘটে। কৃষ্ণসার হরিণ মামলাকে এর নেপথ্য কারণ হিসেবে দেখানো হলে, আসলে টাকা আদায়ের উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে জানিয়েছিলেন সেলিম। তাই এই ঘটনায় টাকার যোগ রয়েছে কি না, সেই প্রশ্নও উঠছে।
এর আগে, ২০২৩ সালের ৮ সেপ্টেম্বর মুম্বইয়ে অন্ধেরি থানায় মৃত্যু হয় ৪০ বছর বয়সি বিক্রম আটওয়ালের। তিনিও লকআপে আত্নঘাতী হয়েছেব বলে জানা যায়। পাওয়াইয়ে একটি আবাসনে নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে কাজ করতেন বিক্রম। গত ৩ সেপ্টেম্বর আবাসবের ফ্ল্যাটে পেশায় বিমানসেবিকা রুপল ওগরেকে তিনি খুন করেন বলে অভিযোগ ওঠে। বিক্রমও লকআপের শৌচাগারে আত্নঘাতী হন বলে জানা যায়। পরিবারের বদনামের কথা ভেবেই তিনি চরম পদক্ষেপ করেন বলে জানায় পুলিশ, কিন্তু ধোঁয়াশা কাটেনি।
বিক্রমের মৃত্যুর মাস দেড়েক আগে, গতবছর ২৮ জুলাই বোরিভালি থানার লকআপে মৃত্যু হয় ২৮ বছর বয়সি দীপক যাদবের। তিনিও আত্নঘাতী হয়েছেন বলে জানা যায়। একটি খুনের মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন দীপক। ইয়েরওয়াড়া জেলে প্রথনে রাখা হয়েছিল দীপককে। শারীরিক অত্যাচারের মামলায় তাঁকে হেফাজতে নেয় বোরিভালি পুলিশ। থানার লকআপেই রাখা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু ২৮ জুলাই আদালতে তোলার আগেই তিনি আত্মঘাতী হন বলে জানা যায়।
এর পরই সলমনের বাড়িতে গুলি চালানোয় অভিযুক্ত যুবক অনুজ লকআপে আত্মঘাতী হলেন। অনুজের বিরুদ্ধে মহারাষ্ট্র কন্ট্রোল অফ অর্গানাইজড ক্রইম আইনে (MCOCA) মামলা দায়ের হয়েছিল। সলমনকে লাগাতার হুমকি দিয়ে আসা গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের সঙ্গে অনুজের কী সম্পর্ক, তা এখনও স্পষ্ট হয়নি। সলমনের বাড়িতে গুলি চলার পর তার দায় স্বীকার করেন লরেন্সের ভাই আনমোল বিষ্ণোই। অনুজ লরেন্সের গ্যাংয়ের সদস্য বলেই জানা গিয়েছে তদন্তে। হাই প্রোফাইল এই মামলায় হেফাজতে বন্দিমৃত্যুতে রহস্য বাড়ছে। আলাদা করে তদন্তের দাবি উঠছে। ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে CID. ঘটনার সময় পাঁচ আধিকারিক ডিউটিতে ছিলেন। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি, থানার সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সলমনের বাড়িতে গুলি চালানোর ঘটনায় অনুজ ছাড়াও সোনুকুমার বিষ্ণোইকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সাগর পাল এবং ভিকি গুপ্তের হাতে তাঁরাই অস্ত্র পৌঁছে দেন বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। ওই দু’জনই সলমনের বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালান। অনুজের ভাই অভিষেক সংবাদমাধ্যনে বলেন, “আত্মঘাতী হওয়ার মতো ছেলে ছিল না অনুজ। ওকে খুন করা হয়েছে। আমরা বিচার চাই।” অনুজের আইনজীবীও এর মধ্যে রহস্য দেখছেন। তাঁর দাবি, লকআপে নিরাপত্তাহীনতার কথা জানিয়েছিলেন অনুজ। তার পর ৪৮ ঘণ্টাও কাটল না, অনুজের মৃত্যু হল। পুলিশের কাজকর্ম নিয়ে তদন্তের দাবি তুলেছেন তিনি।