'ভাঙনের শব্দে রাতে ঘুম আসে না,' ভাঙতে ভাঙতে দ্বারকেশ্বর পৌঁছেছে বাড়ির উঠোনে
ওন্দার বাসিন্দা বরেন দাস জানিয়েছেন, 'ভাঙার এমন শব্দ আসছে যে রাতে ঘুম আসে না, ৪০০-৫০০ বিঘে জমি চলে গেছে জলে।'
পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: ভাঙনের আতঙ্কে ঘুম ছুটেছে বাঁকুড়ার ওন্দার চড়ুইকুঁড়ের বাসিন্দাদের। টানা বৃষ্টিতে দ্বারকেশ্বর নদীর পাড় ভাঙতে ভাঙতে পৌঁছে গিয়েছে প্রায় বাড়ির উঠোনে। এই নিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক। যদিও জেলা পরিষদের আশ্বাস, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওন্দার বাসিন্দা বরেন দাস জানিয়েছেন, 'ভাঙার এমন শব্দ আসছে যে রাতে ঘুম আসে না, ৪০০-৫০০ বিঘে জমি চলে গেছে জলে।' শুধু তীরবর্তী এলাকাতেই নয়, ভাঙনের ভয় এবার বসতি এলাকায়। দ্বারকেশ্বরের এমন ভয়ঙ্কর রূপ দেখেননি বাঁকুড়া ওন্দার চড়ুইকুঁড়ের বাসিন্দারা। কয়েক দিনের নাছোড় বৃষ্টিতে ফুলফেঁপে উঠেছে দ্বারকেশ্বর। একে একে গিলেছে চাষজমি, টিউবওয়েল। তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বাসিন্দারা।
নদীর ধারে বাস, তাই চিন্তা বারো মাস, এটাই বাস্তব ওন্দার চড়ুইকুড় গ্রামে। তবে এবার যেন পরিস্থিতি ভয়াবহ। ওন্দার আরও এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, 'আমরা সবসময় দুঃশ্চিন্তায় আছি, রাতে ঘুম নেই, ছেলেমেয়ে নিয়ে আতঙ্কে আছি।' ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে, প্রশাসনের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগে সরব হয়েছেন এলাকার বিজেপি বিধায়ক।
ওন্দার বিজেপি বিধায়ক অমরনাথ শাখা জানিয়েছেন, 'প্রশাসনকে বারবার বলা হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না ভাঙন রোধে, বিধানসভায় তুলে ধরব, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানাব।' পাশাপাশি বাঁকুড়া জেলা পরিষদ সভাধিপতি মৃত্যুঞ্জয় মুর্মুর দাবি, 'কৃষি ও সেচ দফতর বিষয়টি দেখে, ওদের সঙ্গে কথা বলে যাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া য়ায় সেই ব্যবস্থা করা হবে।' চড়ুইকুঁড়ের বাসিন্দাদের দাবি, 'ইতিমধ্যে অন্তত ৩৫ বিঘে চাষজমি জলে গেছে দ্বারকেশ্বরের গর্ভে। ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নিক প্রশাসন।'
কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির ফলে বাঁকুড়া লাগোয়া দ্বারকেশ্বর এবং গন্ধেশ্বরী নদীর জলস্তর বাড়তে শুরু করেছে। জলের তলায় দুই সেতু। বাঁকুড়ার বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে ইতিমধ্যেই জল জমেছে। সমস্যায় পড়েছেন এলাকাবাসী। পাশাপাশি বিপাকে বাঁকুড়ার মানকানালি ও মিনাপুরের বাসিন্দারা। পরিস্থিতির উপর নজর রয়েছে, দাবি পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রীর।