US Supreme Court: উদারনীতিতে কোপ আমেরিকায়, উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবেন সংখ্যালঘুরা, সুপ্রিম-রায় ঘিরে বিতর্ক
US University Admission: বৃহস্পতিবার আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট এই মর্মে রায় দিয়েছে।
ওয়াশিংটন: মেয়েদের গর্ভপাতের অধিকার খর্ব হয়েছিল আগেই। এবার কোপ উদার শিক্ষানীতিতেও। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে আবেদনপত্রে বর্ণ এবং জাতির উল্লেখ নিষিদ্ধ হল আমেরিকায়। এতে কৃষ্ণাঙ্গ, আফ্রিকান-আমেরিকান এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পড়ুয়ারা শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাপ্ত সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে বলে মত সে দেশের শিক্ষাবিদদের (US Supreme Court)।
বৃহস্পতিবার আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট এই মর্মে রায় দিয়েছে। হার্ভার্ড এবং ইউনিভার্সিটি অফ নর্থ ক্য়ারোলাইনায় বর্ণ এবং জাতির নিরিখে সংখ্যালঘু পড়ুয়ারা যে সুযোগ-সুবিধা পান, সেই সংক্রান্ত একটি মামলার রায়েই এমন নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিগত কয়েক দশক ধরে চলে আসা নীতি-নিয়মকে অবৈধ ঘোষণা করেছে সে দেশের শীর্ষ আদালত (US University Admission)।
বিচারপতি জন রবার্টস জানান, উদারনীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে মহৎ উদ্দেশ্য ছিল হয়ত। ভাল মনেই সেটি হয়ত কার্যকর কার হয়েছিল। কিন্তু চিরকাল এই নীতি চলতে পারে না। বৈষম্যের দুয়ো চলতে পারে না সারা জীবন। ব্যক্তির নিরিখে, অভিজ্ঞতার নিরিখেই গুরুত্ব দিতে হবে সকলকে, বর্ণ বা জাতির নিরিখে নয়।
Affirmative action was never a complete answer in the drive towards a more just society. But for generations of students who had been systematically excluded from most of America’s key institutions—it gave us the chance to show we more than deserved a seat at the table.
— Barack Obama (@BarackObama) June 29, 2023
In the… https://t.co/Kr0ODATEq3
আরও পড়ুন: NASA Lunar Mining: অক্সিজেন থেকে জ্বালানি, বিরল সম্পদে ঠাসা চন্দ্রপৃষ্ঠ, খননকার্য চালাবে NASA
সেই ছয়ের দশক থেকে আমেরিকায় উদার শিক্ষানীতির প্রচলন ছিল, যার নেপথ্যে সমাজের পিছিয়ে পড়া শ্রেণিকে উচ্চশিক্ষার সুযোগ করে দেওয়া, বিশ্বায়নের সঙ্গে পরিচিত করে তোলাই ছিল উদ্দেশ্য। এর ফলে সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া পড়ুয়ারাও উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেতেন। সুযোগ পেতেন বিশ্বের তাবড় সংস্থা, শিক্ষা এবং প্রশাসনিক কাজে অংশ নেওয়ার। সেই উদারনীতিতেই এবার কোপ পড়ল।
সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন দেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা থেকে উদারপন্থী মানুষজন। সোশ্যাল মিডিয়ায় বারাক লেখেন, 'সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সদর্থক পদক্ষেপও কখনও সম্পূর্ণ সমাধান হতে পারে না। কিন্তু প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে আমেরিকার অধিকাংশ সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে যে সমস্ত পড়ুয়াকে বাদ রাখা হয়েছিল, এই উদার শিক্ষানীতি তাঁদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে তুলেছিল। বুঝিয়ে দিয়েছিল, শুধু পাশাপাশি চেয়ার বসার অধিকার ছাড়াও আরও অনেক বেশি কিছু প্রাপ্য় আমাদের।'
I wanted to share some of my thoughts on today's Supreme Court decision on affirmative action: pic.twitter.com/Wa6TGafzHV
— Michelle Obama (@MichelleObama) June 29, 2023
আরও ন্যায়সঙ্গত সমাজের দিকে চালনার ক্ষেত্রে ইতিবাচক পদক্ষেপ কখনই একটি সম্পূর্ণ উত্তর ছিল না। কিন্তু কয়েক প্রজন্মের ছাত্রদের জন্য যারা আমেরিকার বেশিরভাগ মূল প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে বাদ পড়েছিল-এটি আমাদের দেখানোর সুযোগ দিয়েছে যে আমরা টেবিলে একটি আসনের চেয়ে বেশি প্রাপ্য। সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে সেই প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করার সময় এসেছে'।
বারাকের স্ত্রী মিশেল ওবামাও এ বিয়ে নিজের মতামত জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘কলেজে পড়ার সময় ক্যাম্পাসে আমিই একমাত্র কৃষঅণাঙ্গ পড়ুয়া ছিলাম। সেই সম্মানে গর্ববোধ হতো আমার। কারণ তার জন্য অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে আমাকে। তাও মাঝে মধ্যে ভাবি, উদারনীতির জন্যই আমি সেই সুযোগ পেয়েছিলেন বলে কেউ ভাবেন কিনা। এই ভাবনা ছায়ার মতো আজও ঢেকে রয়েছে আমাদের। ঝেড়ে ফেলতে পারিনি...তাই আদালতের রায় আমার মনকে ক্ষতবিক্ষত করে দিয়েছে। এত ছেলেমেয়ের ভবিষ্যতের কী হবে, আদৌ কোনও সুযোগ পাবে কিনা, জানি না... তাই সময় এসেছে, শুধু রাজনীতির স্বার্থে নীতি নির্ধারণ নয়, শিক্ষাক্ষেত্রে কর্মক্ষেত্রে, নিজের চারপাশে যাতে তা কার্যকরও হয়, সেই প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে’।
সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্তে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন দেশের শিক্ষাবিদরাও। তাঁদের মতে, এই নির্দেশের পর স্কুল-কলেজে ভর্তির নিয়ম পাল্টে যাবে। এর ফলে বহুত্ববাদী ধারণারও অবসান ঘটবে। সংখ্যালঘুদের কাজের পরিসর, সুযোগ আরও কমবে। উচ্চশিক্ষা না থাকায় তাঁদের চাকরিতে বহাল করতেও কেউ আগ্রহ দেখাবে না বলে মত তাঁদের।
রক্ষণশীল, গোঁড়া ভাবনার বিরুদ্ধে আমেরিকায় চালু হওয়া একের পর এক উদারনীতির অবসান লক্ষ্য করা গিয়েছে সাম্প্রতিক কালে। গত বছরই সেখানে মেয়েদের গর্ভপাতের অধিকার খর্ব করা হয়। ভারতের মতো আমেরিকাতেও সংরংক্ষণের প্রশ্নে রাজনীতি হয়ে আসছে বহু বছর ধরে। কিন্তু দাসত্বের ভয়াবহ ইতিহাসও উঠে এসেছে তার পাল্টা যুক্তি হয়ে। যদিও সুপ্রিম কোর্টে সেই যুক্তি ধোপে টিকল না।
Education Loan Information:
Calculate Education Loan EMI