Russia Ukraine Crisis: ‘ইউক্রেনে কখনও জয়ী হবেন না পুতিন’, রাশিয়ার তেল, গ্যাস নিষিদ্ধ করল আমেরিকা
Russia Ukraine Crisis: মঙ্গলবার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ১৩ দিনে পা রেখেছে। তাতেই রাশিয়াকে হাতে নয়, ভাতে মারার উপক্রম চলছে বলে শোনা যাচ্ছিল।
ওয়াশিংটন: গত দু’সপ্তাহ ধরে যে আশঙ্কা দানা বাঁধছিল, তা-ই এ বার বাস্তবে পরিণত হল। রাশিয়াb (Russia) থেকে তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের আমদানি সম্পূর্ণ ভাবে নিষিদ্ধ (Ban on imports of Russian oil, Gas) করল আমেরিকা (US)। বাইডেন যদিও আমেরিকাতেই রাশিয়ার তেল, গ্যাস নিষিদ্ধ করেছেন। কিন্তু রাশিয়ার উপর নির্ভরশীল ইউরোপ তো বটেই, গোটা বিশ্বে এই নিষেধাজ্ঞার চরম প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে আমেরিকার দাবি রাশিয়ার অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙে দিতে এই পদক্ষেপ প্রয়োজন ছিল।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের (Vladimir Putin) উপর চাপ সৃষ্টি করতে (Russia Ukraine Crisis) এর আগে আমেরিকা এবং ইউরোপের একাধিক দেশের তরফে মস্কোর উপর বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও রাশিয়ার তরফে আগ্রাসনে ইতি পড়েনি বলে অভিযোগ। বরং মঙ্গলবার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ১৩ দিনে পা রেখেছে। তাতেই রাশিয়াকে হাতে নয়, ভাতে মারার উপক্রম চলছে বলে শোনা যাচ্ছিল। তাতেই এ বার সিলমোহর পড়ল।
মঙ্গলবার হোয়াইট হাউস থেকে রাশিয়ার থেকে নিের দেশে তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানিতে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (Joe Biden)। তিনি বলেন, ‘‘রাশিয়ার গ্যাস, তেল এবং সব ধরনের শক্তি আমদানি নিষিদ্ধ করছি আমরা। বহু সহযোগী ইউরোপীয় দেশের পক্ষে হয়ত আমাদের হাতে ধরা সম্ভব নয়, তা বুঝেই এই সিদ্ধান্ত নিয়ে এগোচ্ছি আমরা। ইতিহাসে এমন গুরুতর নিষেধাজ্ঞা কখনও চাপানো হয়নি। এতে রাশিয়ার অর্থনীতির প্রভূত ক্ষতি হবে।’’
আমেরিকার কোও বন্দরে রাশিয়ার তেল, গ্যাস ঢুকবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বাইডেন। তাঁর কথায়, ‘‘ইউক্রেনে কখনও জয়ী হবেন না পুতিন।’’
আরও পড়ুন: Russia Ukraine Crisis: ইউক্রেনে যুদ্ধের ধাক্কায় ঘরছাড়া অন্তত ২০ লক্ষ, প্রবল উদ্বেগে UN
উল্লেখ্য, জ্বালানির জন্য রাশিয়ার উপর সেই অর্থে নির্ভরশীল নয় আমেরিকা। ২০২১ সালে প্রতিদিন গড়ে ২ লক্ষ ৯ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত তেল তারা রাশিয়া থেকে আমদানি করেছে, যা কি না তাদের মোট আমদানিকৃত তেলের মাত্র ৩ শতাংশ। সেই তুলনায় ইউরোপের একাধিক দেশ রাশিয়ার উপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলির ৩৫ শতাংশ প্রাকৃতিক গ্যাসেরই জোগান দেয় রাশিয়া। তাই শুরু থেকেই রাশিয়ার তেল এবং গ্যাসের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানো নিয়ে কিন্তু কিন্তু করছিল তারা। বরং আমদানির হার কমানোর পক্ষে সওয়াল উঠছিল।
তবে রাশিয়া আগে থেকেই জানিয়ে রেখেছে, তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপলে ভুগতে হবে গোটা বিশ্বকে। অপরিশোধিত তেলের দাম আকাশ ছুঁয়ে ফেলবে। এখন যে দাবে প্রতি ব্যারেল তেল বিকোচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজারে, তা একলাফে দ্বিগুণ হয়ে ৩০০ ডলার প্রতি ব্যারেলে গিয়ে ঠেকবে।
তবে শুধু ইউরোপীয় দেশগুলিই নয়, ভারতেও নিষেধাজ্ঞার চরম প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা। কারণ সোমবারই প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম ১৪০ ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছে। ভারতে অপরিশোধিত তেলের ৮৬ শতাংশই বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। তাই আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়লে হাত পুড়বে ভারতের সাধারণ মানুষেরও।
একই সঙ্গে ২০২১ সালে রাশিয়া থেকে ১৮ লক্ষ টন কয়লা আমদানি করেছিল ভারত।তার আগে ২০২০-তে যদিও তার পরিমাণ ছিল ২৫ লক্ষ টন। আবার রাশিয়ার মোট প্রাকৃতিক গ্যাসের ০.০২ শতাংশের ক্রেতা ভারত। গেইল (GAIL)-এর সঙ্গে রাশিয়ার গাজপ্রম সংস্থার ২০ বছরের চুক্তি রয়েছে। তাতে বছরে ২৫ লক্ষ টন লিকুইড প্রাকৃতিক গ্যাস কেনার কথা ভারতের। ২০১৮ সাল থেকে তেমনই চলে আসছে।