Satipith Kalmadhav: তন্ত্রসাধনার জন্য প্রসিদ্ধ এই শক্তিপীঠ, চামুণ্ডারূপে পূজিত হন দেবী
Kalmadhav Temple: পুণ্যভূমি নর্মদা তীরে যুগ যুগ ধরে বহু সাধু সন্ন্যাসীরা এখানে তপস্যা করেছেন। অমরকন্টকে সেই জন্য একদিকে শৈবপীঠ, তন্ত্র পীঠ, এবং অঘোরপীঠ গড়ে উঠেছে
![Satipith Kalmadhav: তন্ত্রসাধনার জন্য প্রসিদ্ধ এই শক্তিপীঠ, চামুণ্ডারূপে পূজিত হন দেবী Kalmadhav Shakti Pith amarkantak madhya pradesh history mythology Satipith Kalmadhav: তন্ত্রসাধনার জন্য প্রসিদ্ধ এই শক্তিপীঠ, চামুণ্ডারূপে পূজিত হন দেবী](https://feeds.abplive.com/onecms/images/uploaded-images/2023/12/10/e293851fa560e3432dc2683ed0d557fb1702188769559223_original.jpg?impolicy=abp_cdn&imwidth=1200&height=675)
কলকাতা: সতী পার্বতীর ছিন্ন বিচ্ছিন্ন দেহ অংশগুলি ৫১ টি খন্ডে বিভক্ত হয়ে পৃথিবীর বুকে যেখানে যেখানে পতিত হয়েছে সেখানে সেখানে গড়ে উঠেছে এক একটি শক্তিপীঠ এবং পবিত্র তীর্থস্থান। তেমনই একটি তীর্থস্থান মধ্যপ্রদেশের অমরকণ্টকের কালমাধব সতীপীঠটি।
লোকবিশ্বাস অনুসারে, শক্তিপীঠ নামাঙ্কিত তীর্থগুলিতে দেবী দাক্ষায়ণী সতীর দেহের নানান অঙ্গ প্রস্তরীভূত অবস্থায় রক্ষিত আছে। সাধারণত ৫১টি শক্তিপীঠের কথা বলা হয়ে থাকলেও, শাস্ত্রভেদে পীঠের সংখ্যা ও অবস্থান নিয়ে মতভেদ আছে। পীঠনির্ণয় তন্ত্র গ্রন্থে শক্তিপীঠের সংখ্যা ৫১। শিবচরিত গ্রন্থে ৫১টি শক্তিপীঠের পাশাপাশি ২৬টি উপপীঠের কথাও বলা হয়েছে। কুব্জিকাতন্ত্র গ্রন্থে এই সংখ্যা ৪২। আবার জ্ঞানার্ণবতন্ত্র গ্রন্থে পীঠের সংখ্যা ৫০।
কালমাধব শক্তিপীঠের কথা পুরাণে লেখা আছে। সেখানে বলা হয়েছে, এই স্থানে দেবীর নিতম্ব পতিত হয়েছিল। এখানে সতীর নাম কালমাধব এবং ভৈরব এখানে অসিতাঙ্গ।
কালমাধব শক্তিপীঠের পৌরাণিক কাহিনী
পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে জানা যায় যে, মাতা সতী বাবার কাছে স্বামীর অপমান সহ্য করতে না পেরে নিজের বাপের বাড়িতেই দেহ ত্যাগ করেছিলেন। মাতা সতীর দেহত্যাগের খবর পেয়ে মহাদেব পাগল হয়ে যান। আর তিনি দেবীর মৃতদেহ দেখে একেবারে ক্রোধে ফেটে পড়েন। সাথে সাথে দক্ষ রাজাকে অর্থাৎ সতীর পিতাকে হত্যা করেন আর দেবীর দেহ কাঁধে করে নিয়ে তাণ্ডব নৃত্য শুরু করেন।মহাদেবের তাণ্ডব নৃত্য তে পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়, তখন কোন উপায় না দেখে শ্রীবিষ্ণু তার সুদর্শন চক্র দ্বারা মাতা সতীর দেহটি ৫১ টি খন্ডে বিভক্ত করে দেন। সেই দেহ খন্ড গুলোই যে যে জায়গায় পড়েছিল সেখানে একটি করে সতীপীঠ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
মধ্যপ্রদেশের অমরকন্টক হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান। এখানে অবস্থিত দুটি সতী পীঠের মধ্যে কালমাধব সতী পীঠটি তুলনামূলক ভাবে কম পরিচিত। নর্মদা নদীর তীরে এই সতীপীঠ তন্ত্রসাধনার জন্য প্রসিদ্ধ। অমরকন্টক থেকেই উৎপত্তি হয়েছে নর্মদা মহানদী ও শ্যোন নদীর।
এই নর্মদা তীরে তপস্যা করলে পুণ্য ফল লাভ করা যায় আর সেই জন্য পুণ্যভূমি নর্মদা তীরে যুগ যুগ ধরে বহু সাধু সন্ন্যাসীরা এখানে তপস্যা করেছেন। অমরকন্টকে সেই জন্য একদিকে শৈবপীঠ, তন্ত্র পীঠ, এবং অঘোরপীঠ গড়ে উঠেছে। তারই মধ্যে অন্যতম হলো এই শক্তিপীঠ কালমাধব।
আবার অনেকেই মনে করেন যে শ্যোন নদীর তীরে পাহাড়ের গুহায় এই মন্দির অবস্থিত। আবার অনেকে মনে করেন যে, পুরীর মন্দির থেকে একটু কাছে কালমাধব শক্তিপীঠের অবস্থান।
নর্মদা মায়ের বিগ্রহই প্রাচীনকালে পীঠ দেবী কালি রূপেই পূজিতা হতেন। কেননা আজও মন্দিরে পাথরের তৈরি ভৈরবী যন্ত্র বিদ্যমান। এছাড়াও দেবীর বিগ্রহের দুই পাশে জয়া ও বিজয়ার মূর্তি আজও প্রতিষ্ঠিতা। তবে মায়ের পূজারী দের কথা শুনে জানা যায় যে, আজও নর্মদা মায়ের পূজা ও ধ্যান মন্ত্র চামুণ্ডার বিধি মতে হয়ে থাকে। মায়ের বাম নিতম্ব এখানে পতিত হওয়ার জন্য কালমাধব শক্তিপীঠ গড়ে উঠেছে। যা কিনা অমরকন্টক এর বর্তমান বিখ্যাত নর্মদা মন্দির। এছাড়া এখানে স্বয়ম্ভু শিব হিসাবে অমরকন্টেশ্বর, পাতালেশ্বর, জলেশ্বর, প্রভৃতি শিবলিঙ্গগুলি খুবই প্রাচীন।
কাল মাধব শক্তি পীঠ অথবা কালমাধব মন্দিরটির নির্মাণ নিয়েও রয়েছে ইতিহাস। মনে করা হয় আনুমানিক ৬০০০ বছর আগে সূর্যবংশীয় সম্রাট মান্ধাতা শোন নদীর তীরে অমরকন্টকে এই কালমাধব মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন। একেবারে পাহাড়ের উপরে শ্বেত- শুভ্র পাথরের তৈরি এই মন্দিরটি, যা দেখতে সত্যিই অসাধারণ। মন্দিরের চারপাশে রয়েছে শ্বেত পাথর দিয়ে বাধানো পুকুর। এছাড়াও মন্দিরের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে শোন নদী, যা এখানকার একটি অন্যতম আকর্ষণও বটে, যার ফলে এখানে পর্যটকদের সমাগম চোখে পড়ার মতো।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/metaverse-mid.png)