ISL: বাগানের প্রাক্তনী রয় কৃষ্ণই কাঁটা হয়ে উঠলেন, সেমিফাইনালের ওড়িশার বিরুদ্ধে হার সবুজ মেরুনের
MBSG vs Odisha FC: দুটি গোলের সুযোগ তৈরি করেন, দুটির মধ্যে তাঁর একটি শট ছিল গোলে এবং সেটি থেকেই গোল পান। বিপক্ষের বক্সে পাঁচবার বল স্পর্ষ করেন তিনি।
ভুবনেশ্বর: সেমিফাইনালের প্রথম লেগে হেরে ধাক্কা খেল সদ্য লিগশিল্ডজয়ী মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট (Lucknow Super Giants)। মঙ্গলবার ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে ওডিশা এফসি-র (Odisha FC) বিরুদ্ধে তিন মিনিটের গোলে এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত হেরে মাঠ ছাড়ে তারা। ওডিশা এফসি ২-১-এ প্রথম লেগ জিতে এগিয়ে রইল। মোহনবাগানকে ফাইনালে উঠতে গেলে রবিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে অন্তত দু’গোলের ব্যবধানে জিততে হবে। তারা এক গোলের ব্যবধানে জিতলে টাই ব্রেকারে খেলার নিষ্পত্তি হবে।
দুই শক্তিশালী দল ও দুই কৌশলী কোচের লড়াই যে আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে চলেছে, তা বোঝা যায় প্রথম ১১ মিনিটের মধ্যেই, যখন দু’পক্ষই একটি করে গোল করে। প্রথমে মনবীর সিং তৃতীয় মিনিটে গোল করে এগিয়ে দেন মোহনবাগানকে। এর আট মিনিট পরেই সমতা আনেন কার্লোস দেলগাদো। দু’জনেই কর্নার থেকে গোল করেন। আইএসএলের ইতিহাসে দ্বিতীয় দ্রুততম গোল দিয়ে এ দিন ম্যাচ শুরু করেন মনবীর। দু’মিনিট ১৯ সেকেন্ডে দিমিত্রিয়স পেট্রাটসের কর্নারে হেড করে গোল করেন তিনি (১-০)। ছ’গজের বক্সের মধ্যে সম্পুর্ণ অরক্ষিত ছিলেন মনবীর। গোলকিপার অমরিন্দর সিং-কেও কার্যত দর্শকের ভূমিকায় দেখা যায় তখন।
শুরুতেই গোল খাওয়ার ধাক্কা সামলে ঘন ঘন পাল্টা আক্রমণে উঠতে বেশি সময় নেননি রয় কৃষ্ণারা। প্রথম এগারো মিনিটের মধ্যেই ছ-ছ’টি কর্নার হয়ে যায়, যার মধ্যে পাঁচটিই আদায় করে কলিঙ্গবাহিনী। ছ’নম্বর কর্নারটি থেকে গোল করে সমতা এনে ফেলেন দেলগাদো। আহমেদ জাহুর মাপা কর্নারে গোলের সামনে থেকে বাঁ পায়ের টোকায় জালে বল জড়িয়ে দেন তিনি (১-১)। তাঁর কাছে বল পৌঁছনোর আগে অবশ্য উড়ন্ত বল দখলের সুযোগ পেয়েছিলেন বিশাল কয়েথ। কিন্তু তিনি তা করতে না পারায় গোল খেতে হয় সবুজ-মেরুন বাহিনীকে।
প্রাক্তন বাগানি রয় গোল পেয়ে যান ৩৯ মিনিটের মাথায়। তবে পেনাল্টি থেকে নয়, বরং বেশ কষ্টার্জিত গোল ছিল সেটি। মাঝমাঠ থেকে উড়ে আসা বলে হেড করে মোহনবাগানের বক্সের দিকে পাঠান রয় এবং দ্রুত বল তাড়া করে বক্সে ঢুকেও পড়েন। তাঁকে বাধা দিলেও ব্যর্থ হন হেক্টর ইউস্তে। গোল ছেড়ে এগিয়ে আসেন বিশালও। দু’জনকেই ধোঁকা দিয়ে সোজা গোলে শট নেন রয় এবং বল জালে জড়িয়ে দেন (১-২)। এ মরশুমে এটি তাঁর ১৩ নম্বর গোল ও এই গোলের সঙ্গে সর্বোচ্চ গোলদাতাদের তালিকায় এক নম্বরে চলে এলেন তিনি।
সারা মাঠজুড়ে এদিন খেলেন রয়। দুটি গোলের সুযোগ তৈরি করেন, দুটির মধ্যে তাঁর একটি শট ছিল গোলে এবং সেটি থেকেই গোল পান। বিপক্ষের বক্সে পাঁচবার বল স্পর্ষ করেন তিনি। ফাইনাল থার্ডে ১৪টি পাস বাড়ান। তাঁকেই ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় বাছা হয়।
দ্বিতীয় গোল খাওয়ার পর খেলা থেকে ক্রমশ যেন হারিয়ে যায় কলকাতার দল এবং সেই সুযোগে আক্রমণ চালিয়ে যান রয়, জাহুরা। এর পরে একবার সাদিকু প্রতিপক্ষের গোল এরিয়ায় ঢুকে পড়লেও তাঁর ক্রস ব্লক হয়ে যায়। ফলে এক গোলে পিছিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় মোহনবাগান এসজি। প্রথমার্ধে সাতটির মধ্যে চারটি শট গোলে রাখে ওডিশা এবং মোহনবাগানের ছ’টির মধ্যে তিনটি শট ছিল লক্ষ্যে।
নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পাঁচ মিনিট আগে রয় কৃষ্ণাকে তুলে দিয়েগো মরিসিওকে নামান ওডিশার কোচ লোবেরা। তাতে অবশ্য তাদের আক্রমণের তেজ খুব একটা বাড়েনি। বরং মোহনবাগান শেষ দিকে কলকাতার দলই সমতা আনার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। বিশেষ করে যখন কোলাসোর জায়গায় কিয়ান নাসিরি নামেন। তিনি নামার পর মনবীর বাঁ দিকে চলে আসেন। তবে এই পরিবর্তনেও কোনও ভাবে লাভবান হয়নি মোহনবাগান। তথ্য সংগ্রহ: আইএসএল