Gujarat Titans : গতবারের IPL চ্যাম্পিয়ন গুজরাত টাইটান্সের এবারের দল কেমন ? শক্তি-দুর্বলতা কী কী ?
IPL : কোচ আশিস নেহরার কোচিংয়ে খেতাব ধরে রাখার কাজ কি সম্ভব হবে গুজরাত টাইটান্সের পক্ষে ? তাদের দলের ভারসাম্য এবারে ঠিক কেমন ? দেখে নিন কেমন দাঁড়াল দল।
আমদাবাদ : প্রথমবার খেলতে নেমেই বাজিমাত। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (Indian Premier League) গতবারের সংস্করণে প্রথমবার নেমেই খেতাব জিতে নিয়েছিল গুজরাত টাইটান্স (Gujrat Titans)। ফ্র্যাঞ্চাইজি হিসেবে আইপিএলের অভিযানের অভিষেকের মঞ্চেই দুরন্ত ফলাফলের নেপথ্যে টিম তাঁদের দলগত লড়াই। ব্যক্তিগত প্রচেষ্টার পাশাপাশি ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং, সব বিভাগেই দুরন্ত পারফরম্যান্স মেলে ধরেছিল গুজরাত ফ্র্যাঞ্চাইজি। অধিনায়ক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্টিত করেছিলেন হার্দিক পাণ্ড্য (Hardik Pandya)। শুভমন গিল, মহম্মদ শামি থেকে রশিদ খান, ডেভিড মিলার সকলেই লিগের বিভিন্ন সময়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান মেলে ধরেছিলেন দলের হয়ে। এবারেও আইপিএলের খেতাব জেতার পথে অন্যতম ফেভারিট হিসেবেই নামতে চলেছে তারা। কোচ আশিস নেহরার কোচিংয়ে খেতাব ধরে রাখার কাজ কি সম্ভব হবে গুজরাত টাইটান্সের পক্ষে ? তাদের দলের ভারসাম্য এবারে ঠিক কেমন ? দেখে নিন কেমন দাঁড়াল দল।
শক্তি- গুজরাত টাইটান্স শিবিরের সবথেকে বড় শক্তি তাদের দলের ভারসাম্য। অধিনায়ক ও অলরাউন্ডার হিসেবে আরও ক্ষুরধার হয়েছেন হার্দিক পাণ্ড্য। ব্যাটারদের মধ্যে দুরন্ত ছন্দে রয়েছেন শুভমন গিল। গতবারের মতোই এবারেও তার ওপরই ভাল শুরুর জন্য আস্থা রাখছে গুজরাত ফ্র্যাঞ্চাইজি। ২০২২ সালের আইপিএলে ১৬ ম্যাচে ৪৮৩ রান করেছিলেন তিনি। শুভমনের স্ট্রাইক রেট ছিল ১৩২.৩৩। সঙ্গে ওপেন করতে নামতে পারেন বাংলার ঋদ্ধিমান সাহা। যদি তাঁর বদলে ম্যাথু ওয়েড নামলে শুরু থেকেই ডান-বাঁ হাতি কম্বিনেশন পেয়ে যাবে তারা। তিন নম্বরে নামবেন এবারে দলে যোগ হওয়া কেন উইলিয়ামসন। শুরুতে না থাকলেও কয়েক ম্যাচই পরই চলে আসবেন ডেভিড মিলার। রয়েছেন রাহুল তেওয়াতিয়া, পাণ্ড্য-র মতো পিঞ্চহিটার। বোলিং বিভাগে দায়িত্ব থাকবে বাংলার অপর ক্রিকেটার মহম্মদ শামির হাতে। গত আইপিএলে ১৬ ম্যাচে ২০ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন তিনি। তাঁকে সঙ্গ দিতে পারেন আলজারি জোসেফ বা ওডেন স্মিথ। স্পিন বিভাগে তাদের সেরা অস্ত্র রশিদ খান (Rashid Khan)। সদ্য যিনি লাহোর কালান্দারসের হয়ে জিতেছেন পাকিস্তান সুপার লিগ। যেখানে ১১ ম্যাচে ২০ উইকেট নিয়েছেন রশিদ।
দুর্বলতা- গুজরাত শিবিরের খানিক চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে তাদের বোলিং বিভাগ ও বিদেশিদের পারফরম্যান্স। গতবার মহম্মদ শামির পেস বোলিং সঙ্গী ছিলেন লোকি ফার্গুসন। এবার তাঁকে ছেড়ে গুজরাতকে ভরসা রাখতে হচ্ছে আলজারি জোসেফ বা ওডেন স্মিথের ওপর। শামি ছাড়াও অধিনায়ক হার্দিক পাণ্ড্য অবশ্য রয়েছেন। সঙ্গে ভারতীয় পেসার শিবম মাভিকে কখনও সুযোগ দেওয়া যেতেই পারে। বোলিং নিয়ে খানিক চিন্তা থাকলেও গুজরাতকে খানিক বেশি চিন্তায় রাখবে তাদের বিদেশি ক্রিকেটারদের ফর্ম। ওডেন স্মিথ, আলজারি জোসেফরা সেরকম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেননি। আয়ারল্যান্ড পেসার জস লিটল ফিরছেন চোট কাটিয়ে। টি২০ ক্রিকেটে সেভাবে দুরন্ত বলা মুশকিল কেন উইলিয়ামসনের ক্ষেত্রেও। শুরুর দিকে পাওয়া যাবে না ডেভিড মিলারকে। তবে বাকি ফ্র্যাঞ্চাইজিদের ধরে বিচার করলে তুলনামূলক ভাল জায়গাতেই রয়েছে গুজরাত শিবির।
এক্স ফ্যাক্টর- গুজরাত টাইটান্সের এক্স ফ্যাক্টর যদি বাছতে হয়, তাহলে বলতে হয় দুজনের নাম। ব্যাটিংয়ে শুভমন গিল (Shubman Gill) ও বোলিংয়ে রশিদ খান। ৯২ আইপিএল ম্যাচে ১১২ উইকেট রয়েছে রশিদের দখলে। ব্যাট হাতেও ২৩৩৩ রান করেছেন। গত মরসুমে গুজরাতকে চ্যাম্পিয়ন করার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন আফগান এই স্পিনার। ১৬ ম্যাচে ১৯ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন তিনি। সেরা ছিল ২৪ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট তুলে নেওয়া। পাশাপাশি আইপিএলের মঞ্চে ৭৪ ম্যাচে ১৯০০ রান করেছিলেন শুভমন গিল। গতবারের ৪টি সহ আইপিএল কেরিয়ারে রয়েছে মোট ১৪ টি অর্ধশতরান।
গেম চেঞ্জার- গুজরাত দলের গেম চেঞ্জার অবশ্যই হার্দিক পাণ্ড্য। অধিনায়ক হিসেবে তিনি এবারে আরও পোক্ত। পাশাপাশি ব্যাট হোক বা বল হাতে, একার দাপটে ম্যাচের রং বদলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন পাণ্ড্য। এবারে তাঁর হাতে রয়েছে ইনসুইংগারের অস্ত্রও। যাতে ক্রমশ পোক্ত হয়েছেন বোলার হার্দিক। আইপিএলের মঞ্চে ১০৭ ম্যাচে ৫০ উইকেট রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। সঙ্গে ব্যাট হাতে রয়েছে ১৯৬৩ রান। শুধুমাত্র গত মরসুমে ১৫ ম্যাচে ৪৮৭ রান করেছিলেন তিনি, পাশাপাশি নিয়েছিলেন ৮ টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট।
আমদাবাদে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ভক্তদের বিপুল সমর্থনের পাশাপাশি নিজেদের মতো পিচ ব্যবহারের সুযোগ থাকছে গুজরাত টাইটান্সের কাছে। প্রতিপক্ষ দলের শক্তি-দুর্বলতা বিচার করে নিয়ে সেই মতো পিচ বেছে নেওয়ার সুযোগ থাকছে। গতবারের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুবাদে ৩১ মার্চ ঘরের মাঠে চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে এবারের আইপিএল অভিযান শুরু করছে তারা। যদিও এবারের লিগের সূচি দেখলে ক্রমাগত হোম-অ্যাওয়ে ম্যাচ রয়েছে তাদের। যার ফলে খেলার পাশাপাশি ভ্রমণের ঝক্কিও সামলাতে হবে আইপিএলের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের। আইপিএলের হাঁড়ির খবর, সব দলের চুলচেরা বিশ্লেষণ নিয়ে রোজ হাজির হব আমরা। চোখ রাখুন এবিপি লাইভে।
আরও পড়ুন- আইপিএলে মাঠে নামার আগে কেমন দল গড়ল রাজস্থান রয়্যালস?