KMC Election Result 2021: প্রার্থিচয়নে গলদ! শহর জুড়ে সবুজ ঝড়, তবু ১০ ওয়ার্ডে হার তৃণমূলের
KMC Election Result 2021: নতুনদের সুযোগ দেওয়ার দাবি উঠছিল তৃণমূলের অন্দরে। বিধানসভা নির্বাচনের পর ঘোষিত ‘এক নেতা, এক পদ’ নীতিতে জোর দিয়ে সেই পথেই হাঁটেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কলকাতা: বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল সাফল্যের পর পুরভোট (Kolkata municipal Election 2021) ঘিরেও প্রত্যাশা ছিল চরমে। ৯০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে সেই প্রত্যাশা ছাপিয়েই গিয়েছে তৃণমূল (TMC)। কিন্তু কলকাতা জুড়ে সবুজ ঝড়ের দাপটে, ১০ ওয়ার্ডে পরাজয়ের কাঁটা খচখচ করছেই তৃণমূলের অন্দরে। পরাজিত প্রার্থীদের অধিকাংশই নতুন মুখ। অভিজ্ঞদের সেই জায়গায় সুযোগ দিলে বিরোধীরা মাথা তোলার সুযোগই পেতেন না বলে মনে করছেন দলের একাংশ।
মঙ্গলবার কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি আসনের মধ্যে ১৩৪টিতেই জয়ী হয়েছে তৃণমূল। কিন্তু বিজেপি-র কাছে তিনটি, বাম-কংগ্রেসের কাছে দু’টি করে এবং নির্দল প্রার্থীদের কাছে তিনটি আসন হাতছাড়া হয়েছে তাদের। তাই নিয়েই আত্মসমীক্ষা শুরু হয়েছে দলে।
এ বারে পুরভোটের বেশ কিছু দিন আগে থেকেই নতুনদের সুযোগ দেওয়ার দাবি উঠছিল তৃণমূলের অন্দরে। বিধানসভা নির্বাচনের পর ঘোষিত ‘এক নেতা, এক পদ’ নীতিতে জোর দিয়ে সেই পথেই হাঁটেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। নেতা মন্ত্রীদের ছেলেমেয়েদের সুযোগ দেওয়ার পাশাপাশি একঝাঁক নতুন মুখকেও ভোটের ময়দানে সুযোগ করে দেন তিনি।
কিন্তু মঙ্গলবার ভোটের ফলাফল বেরনোর পর দেখা যাচ্ছে, নেতা-মন্ত্রীদের ছেলেমেয়েরা দলকে জয় উপহার দিলেও, নতুন এবং অনভিজ্ঞ প্রার্থীরা তাঁদের কাছে পিছিয়ে রয়েছেন। যেমন ১০৩ নম্বর ওয়ার্ডে সুকুমার দাসকে প্রার্থী করা নিয়ে শুরু থেকেই ক্ষোভ ছিল এলাকায়। গার্হস্থ্য হিংসা-সহ তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগে অভিযুক্ত সুকুমারের নাম ঘোষণা হওয়ার পরই রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা। তার পরেও কেন সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা করে দেখা হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
আরও পড়ুন: KMC Election Result 2021: মমতায় আস্থা, তৃণমূলে যোগ দিতে চান তিন নির্দল প্রার্থীই
অন্য দিকে ভোটের দিন সকালে যখন একের পর এক জায়গা থেকে অশান্তির খবর উঠে আসছে, সেই সময় ২২ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি-র প্রার্থী মীনাদেবী পুরোহিতকে হেনস্থা করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে। আহত অবস্থায় টিভির পর্দায় মীনাদেবীকে দেখা গেলেও, বিষয়টিকে গুরুত্বই দিতে চাননি এলাকার সেখানকার তৃণমূল প্রার্থী শ্যামপ্রকাশ পুরোহিত। উল্টে বিজেপি-র বিরুদ্ধেই আতঙ্ক সৃষ্টির অভিযোগ করেন তাঁর সমর্থকরা। জনমানসে এর প্রভাব পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্য দিকে, ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি-র সন্তোষ পাঠকের কাছে পরাজিত শক্তিপ্রতাপ সিংহ, ১৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে কংগ্রেসের ওয়াসিং আনসারির কাছে পরাজিত রহমত আলম আনসারি, ৯২ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএম-এর মধুছন্দা দেবের কাছে পরাজিত অভিষের মুখোপাধ্যায়, ২১৩ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি-র বিজয় ওঝার কাছে পরাজিত সানোয়ারলাল আগরওয়াল, ৫০ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি-র সজল ঘোষের কাছে পরাজিত মৌসুমি রায়, ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী আয়েশা কানিজের কাছে পরাজিত শাগুফতা পরভীন, ১৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী রুবিনা নাজের কাছে পরাজিত আখতারি নিজামি শাহজাদা এবং ১৪১ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী পূর্বাশা নস্করের কাছে পরাজিত শিবনাথ গায়েনের চয়ন নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। নতুন মুখকে সুযোগ করে দিলেও, তাঁদের জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাঁদের তুলে ধরতে দলের তরফে যথেষ্ট তৎপরতাও চোখে পড়েনি বলে অভিযোগ উঠছে।