Barrackpur News: উর্দিধারী পুলিশকে মারধরের অভিযোগ TMC কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে, সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট কৌস্তভের
Kaustav Bagchi : সোশাল মিডিয়ায় হামলার ভিডিও পোস্ট বিজেপি নেতা ও আইনজীবী কৌস্তভ বাগচীর।
সমীরণ পাল, ব্যারাকপুর : ব্যারাকপুরে উর্দিধারী পুলিশকে মারধরের অভিযোগ উঠল ব্যারাকপুরের তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। সোশাল মিডিয়ায় হামলার ভিডিও পোস্ট বিজেপি নেতা ও আইনজীবী কৌস্তভ বাগচীর। পুলিশের বিরুদ্ধে প্রথমে হামলার পাল্টা অভিযোগ তৃণমূল কাউন্সিলরের।
উর্দিধারী পুলিশকর্মীকে ধাক্কা। তারপর মারধর। প্রথমে লাথি। তারপর ঘুষি। সোশাল মিডিয়ায় এই ভিডিও পোস্ট করে, ব্য়ারাকপুরে গুন্ডারাজের অভিযোগে সরব হলেন বিজেপি নেতা কৌস্তভ বাগচী। তিনি অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল কাউন্সিলর রমেশ সাউয়ের বিরুদ্ধে। সোশাল মিডিয়ায় এই ছবি এবং ভিডিও পোস্ট করে বিজেপি নেতা কৌস্তভ বাগচী লিখেছেন, ব্যারাকপুরে গুন্ডারাজের শিকার পুলিশ। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত সাব ইন্সপেক্টর ওমকার বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ৩০ এপ্রিল ২০২৪, রাত ১১ টা নাগাদ ব্যারাকপুর পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপিতা ও তৃণমূল নেতা রমেশ সাউ ও পুত্র তৃণমূল নেতা বিমল সাউয়ের নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের গুন্ডা বাহিনী, সাব ইন্সপেক্টর ওমকার বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে চড়াও হয়, তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে, উর্দি পরা অবস্থায় রাস্তায় ফেলে তাঁকে মারধর করে।
বিজেপি নেতা ও আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী বলেন, 'ওমকার বন্দ্যোপাধ্যায়কে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে । তাঁকে মারধর করেন। মারধর করার সময় তিনি পুলিশের উর্দি পরেছিলেন। আমরা বারবারই বলেছি, এ রাজ্যে বিরোধীদের, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নেই। এ রাজ্যে স্বয়ং পুলিশেরও নিরাপত্তা নেই।'
ওমকার বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী সুমনা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'আমরা খুব আতঙ্কে আছি। স্বামী থাকেন না। সকালে বেরিয়ে যান। আমাকে ২টো বাচ্চা নিয়ে থাকতে হয়।'
ওমকার বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক প্রতিবেশী বলেন, 'ব্যানার লাগানো নিয়ে গন্ডগোল । এর বেশি বলতে পারব না।'
এই বিতর্কের মধ্য়ে পাল্টা একটি ভিডিও সামনে এনেছেন তৃণমূল কাউন্সিলর রমেশ সাউও। যেখানে উর্দিধারী পুলিশকর্মীর হাতে একটি বঁটি দেখা যাচ্ছে। বিজেপি নেতা কৌস্তভ বাগচী, ভিডিও প্রকাশ করে, পুলিশকে মারধরের যে অভিযোগ তুলেছেন, তা স্বীকার করে নিয়েছেন তৃণমূল কাউন্সিলর রমেশ সাউ। যদিও ওমকার বন্দ্যোপাধ্যায় নামে সাব ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধেই প্রথমে হামলার অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
তৃণমূল নেতা ও ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রমেশ সাউ বলেন, 'আগে বিজেপি করতেন। ওঁর বউ হঠাৎ বলছেন, আমার বাড়ির সামনে ব্যানার লাগাবেন না। তখন আমার ছেলে বলেন কেন ? বলেন, না আমার বাড়ির সামনে লাগাবেন না। ওঁকে বলা হয় যে, আপনার বাড়ির তো ওইদিকে। এটা তো পুরসভার জমি। কাউন্সিলর বলেছেন লাগাতে, তাই লাগালাম। তখন খারাপ কথা বলেন। জিজ্ঞাসা করা হয়, এই ধরনের কথা কেন বলছেন। মহিলা থুতু ফেলতে শুরু করেন। তখন ছেলেরা গালাগালি দেন। তখন ওই অফিসার আসেন। ঘর থেকে বঁটি বের করে আনেন। পাড়ার কারো সঙ্গে আলোচনা না করে হেলমেট চালাতে শুরু করেন। তা আমার ছেলের চোখে লাগে। তখন আমরা ধাক্কা দিই। তখন বউয়ের হাতের বঁটি নিয়ে আমাকে তাড়া করেন। এই সময় ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। মারিনি। '
৩০ এপ্রিলের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কী পদক্ষেপ করা হয়েছে সোশাল মিডিয়ায় সেই প্রশ্নও তুলেছেন কৌস্তভ বাগচী। রমেশ সাউ বলেন,'আমি লিখিত অভিযোগ করেছিলাম পরে পাড়ার লোক বলল মিটিতে নিতে। ভুল স্বীকার করলেন। মিটিয়ে নেওয়া হয়েছে।'
সাব ইন্সপেক্টর ওমকার বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে দাবি, যে পুলিশকর্মীর সঙ্গে ঝামেলা হয়, তিনি উর্দি পরে থাকলেও, কর্তব্যরত ছিলেন না। এটা তাঁর ব্যক্তিগত ঝামেলা। এর সঙ্গে পুলিশের কোনও যোগ নেই। দু'পক্ষ নিজেদের মধ্যে মীমাংসা করে নিয়েছে।