Partha Chatterjee: ভার্চুয়াল শুনানিতে অসন্তুষ্ট পার্থ, বেফাঁস মন্তব্য আটকানোই উদ্দেশ্য! প্রশ্ন বিরোধীদেরও
SSC Recruitment Scam: গত সপ্তাহে আদালতে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছিলেন তৃণমূলের সদ্য প্রাক্তন মহাসচিব পার্থ। তাঁকে বলতে শোনা যায়, "সময় মতো সব প্রমাণ হবে। কেউ ছাড় পাবে না।"

পার্থপ্রতিম ঘোষ, কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, সমীরণ পাল, কলকাতা: নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে ভার্চুয়াল হাজিরার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন জেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তাতে আপত্তি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (SSC Reruitment Scam) গ্রেফতার হওয়া পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee)। ভার্চুয়াল মাধ্যমে নয়, সশরীরেই আদালতে হাজিরা দিতে চান তিনি। তাঁর আইনজীবী জানিয়েছেন, জেল কর্তৃপক্ষ যেভাবে ভার্চুয়ালি শুনানির আর্জি জানিয়েছে, তাতে রীতিমতো অসন্তুষ্ট প্রাক্তন মন্ত্রী।
ভার্চুয়াল শুনানি নয়, সশরীরে আদালতে হাজিরা দিতে চান পার্থ
স্কুল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর, আপাতত প্রেসিডেন্সি জেলই ঠিকানা প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থর। তাঁকে যাতে সশরীরে আদালতে হাজির না করতে হয়, তিনি যাতে ভার্চুয়াল মাধ্যমে শুনানিতে অংশ নিতে পারেন, তার অনুমতি চেয়ে আদালতে আর্জি জানিয়েছিল রাজ্য কারা দফতরের অধীনস্থ প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষ। তাতে সম্মতি দেয় ব্যাঙ্কশাল কোর্টের বিশেষ CBI আদালত।
কিন্তু, সূত্রের খবর, রাজ্য সরকারের কারা দফতরের অধীনে থাকা জেল কর্তৃপক্ষের আর্জি শুনে রীতিমতো অসন্তুষ্ট পার্থ নিজেই। তাঁর এক আইনজীবীর দাবি, সম্প্রতি জেলের মধ্যেই বিষয়টি পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জানান তিনি। যা শুনে কার্যত অবাক হয়ে গিয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী। তিনি জানতে চান, শুনানিতে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকার আর্জি জানানো হল কেন? কী এমন হল যে, জেল কর্তৃপক্ষ আদালতের কাছে এরকম আর্জি জানালেন?
সূত্রের খবর, নিরাপত্তার কথা ভেবেই জেল কর্তৃপক্ষ এই আর্জি জানিয়েছে বলে জানানো হয় পার্থকে। তাতে পাল্টা পার্থ চট্টোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, "কীসের নিরাপত্তা? জেলে সবাই যা পাচ্ছে, আমিও তাই পাচ্ছি। কেউ তো কোনও অশান্তি করেনি!"
গত সপ্তাহে আদালতে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছিলেন তৃণমূলের সদ্য প্রাক্তন মহাসচিব পার্থ। তাঁকে বলতে শোনা যায়, "সময় মতো সব প্রমাণ হবে। কেউ ছাড় পাবে না।" তার আগে ষড়যন্ত্ররে তত্ত্বও শোনা গিয়েছিল পার্থর মুখে। তাঁকে বলতে শোনা যায়, "আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে।" কে ষড়যন্ত্র করছে জানতে চাইলে বলেন, "দলের সিদ্ধান্ত দেখে নিন।"
সেই আবহেই গত ২২ অগাস্ট প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষের তরফে CBI-এর বিশেষ আদালতে একটি চিঠি দেওয়া হয়। তাতে আর্জি জানানো হয়, নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে, সতর্কতা হিসেবে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ভার্চুয়াল মাধ্যমে জেল থেকেই শুনানিতে অংশ নেওয়ার অনুমতি দিলে ভাল হয়।এই আবেদনে সম্মতি জানিয়ে গত মঙ্গলবার আদালত নির্দেশ দেয়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে আর সশরীরে আদালতে হাজির করাতে হবে না। অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ও সশরীরে হাজিরা না দিলে চলবে বলে জানায় আদালত।
পার্থর ভার্চুয়াল শুনানি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরাও
কিন্তু এই সিদ্ধান্তেই অসন্তুষ্ট পার্থ। তাতেই প্রশ্ন উঠছে, বার বার প্রকাশ্যে মুখ খোলাতেই কি পার্থর ভার্চুয়াল শুনানির আবেদন? এ নিয়ে সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, "কে কী বলেছে জানি না, তবে ভার্চুয়ালি কেন হবে? সাংবাদিকদের সামনে যাতে বেফাঁস কিছু না বলে দেন, সেই জন্য আদালতে নিয়ে যেতে আপত্তি করা হচ্ছে?" যদিও তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, "পার্থকে জেরা করছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। তার সম্পর্কে দল অবস্থান স্পষ্ট করেছে। তার নিরাপত্তার দায়িত্ব এজেন্সি। সেটা তো দেখতে হবে।" কিন্তু পার্থর যেখানে আপত্তি নেই, সেখানে এমন সিদ্ধান্ত কেন? তাহলে কি বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়ার নয়? জবাবে শান্তনু বলেন, " তার আগের দিনের কথাটা তো বলছে না! দলের সঙ্গেই আছেন বলেছিলেন পার্থ।"
পার্থর এই ভার্চুয়াল শুনানি নিয়ে রাজনৈতিক তরজা চরমে উঠেছে। তবে আগামী ৩১ অগাস্ট পার্থ এবং অর্পিতা, দু'জনকেই ভার্চুয়াল মাধ্যমে আদালতে পেশ করা হবে বলে খবর।






















