Alipurdur News: গুরুদক্ষিণা, অবসরের দিন প্রধান শিক্ষক-কে ঘোড়ার গাড়িতে চাপিয়ে শোভাযাত্রা পড়ুয়াদের
Alipurdur: আলিপুরদুয়ার শহরের ম্যাক-উইলিয়ম হাই স্কুলের ছাত্রদের এমন অভিনব সম্মান জ্ঞাপনের উপভোগ করলেন গোটা শহরের মানুষ। এই ধরনের ঘটনা তাঁরা আগে কোনওদিন দেখেননি বলেও জানান।
অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার: গার্ড-অব-অনার সহ শোভাযাত্রার মাধ্যমে ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে প্রধান শিক্ষক-কে বিদায় সংবর্ধনা জানাল আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) ম্যাক-উইলিয়ম হাই স্কুলের (MC William high school) ছাত্ররা। ভোটের আবহে শহরের বক্সা-ফিডার রোডে এমন অভিনব শোভাযাত্রায় (rally) হতচকিত শহরবাসী।
আলিপুরদুয়ার শহরের ম্যাক-উইলিয়ম হাই স্কুলের ছাত্রদের এমন অভিনব সম্মান জ্ঞাপনের উপভোগ করলেন গোটা শহরের মানুষ। জানা গেছে, শনিবার ছিল স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুধাংশু বিশ্বাসের অবসরের দিন (farewell day)। তাই তাঁর প্রিয় ছাত্ররা অভিনব এই উদ্যোগের মাধ্যমে তাঁকে সম্মান জানিয়ে শোভাযাত্রার মাধ্যমে সংবর্ধনা জ্ঞাপন করল। কর্মজীবনের শেষ দিনে স্কুলে প্রবেশের আগেই তাদের প্রিয় শিক্ষককে ঘোড়ার গাড়িতে বসিয়ে গার্ড-অব-অনার সহযোগে ব্যান্ডের তালে অসংখ্য ছাত্রদের উপস্থিতিতে এই শোভাযাত্রা পরিক্রমা করে শহরজুড়ে। ঘোড়ার গাড়িতে বসে হাত নেড়ে সকলের অভিবাদন গ্রহণ করতেও দেখা যায় প্রধান শিক্ষককে। প্রিয় শিক্ষকের পায়ের কাছে কে বসবে তা নিয়েও হুড়োহুড়ি দেখা যায় খুদে পড়ুয়াদের মধ্যে। স্কুলে প্রবেশের পর ছাত্রদের হাতে ভর করেই প্রবেশ করেন বিদ্যালয়ে। এক সময়ের ছাত্র,আজ সহকর্মী দুই শিক্ষক-কে পাশে রেখে কর্মজীবনের শেষ স্বাক্ষর স্মরণীয় করে রাখলেন সুধাংশু বিশ্বাস। নিজের প্রিয় চেয়ারে বসে পরিবার এবং প্রিয় ছাত্রদের নিয়ে ছবিও তুললেন আবেগঘন মুহূর্তে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৯৮৫ সালের পয়লা অক্টোবর আলিপুরদুয়ার জেলার কামাক্ষাগুড়ি মিশন হাই স্কুলে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন সুধাংশু বিশ্বাস। তারপর ২০০০ সালের ১১ সেপ্টেম্বর মাসে তিনি এই ম্যাক-উইলিয়ম হাই স্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। তারপর এই স্কুলের ২৪ বছরের কর্মজীবন-সহ প্রায় ৩৯ বছরের শিক্ষকতা করেছেন তিনি।
ছাত্রদের এই আয়োজনে আবেগপ্লুত হয়ে পড়া সদ্য অবসর নেওয়া প্রধান শিক্ষক সুধাংশু বিশ্বাসের কথায়, কর্মজীবনে এমন বিদায় সংবর্ধনা আমরাও কাউকে দিতে পারিনি। আমি আপ্লুত ও আনন্দিত। যা যন্ত্রণা ছিল তার উপশম হয়ে গেছে অকৃত্রিম ভালোবাসায়। এটা বিদায় নয়, নতুন জীবনের সূচনা। তবে অবসরের পরেও শিক্ষকতা করবেন কিনা তার উত্তরে তিনি জানান, শিক্ষকতা চালিয়ে যাবেন দুঃস্থ ছাত্রদের মানুষ গড়ার কাজে।
এক সময়ের ছাত্র ও আজকের সহকর্মী অজয় মণ্ডল বলেন, সহ-শিক্ষক হিসেবে তিনি বন্ধু ছিলেন। অভিভাবকত্বে উপকৃত হয়েছি, স্কুল পরিচালনাও তুলনাহীন। সরকারিভাবে বিদায় হলেও হৃদয়ে থাকবেন।
একাদশ শ্রেণির ছাত্র অনির্বান পাল বলে, মনের কোণে কষ্ট হচ্ছে। উনি বাবার মতই আগলে রাখতেন। সবার খোঁজ রাখতেন পড়াশোনার।