Adenovirus: মর্জিমাফিক ওষুধ বা সময়নষ্ট নয়, আস্থা রাখুন কাছের হাসপাতালেই, অ্যাডিনো আবহে কী কী পরামর্শ স্বাস্থ্য অধিকর্তার?
তাহলে কোথায় ভুল হচ্ছে? সচেতনার অভাব? নাকি শিশুর খেয়াল রাখার ক্ষেত্রে অভিভাবকদের মর্জিমাফিক আচরণ? এই নিয়েই এবিপি লাইভের সঙ্গে একান্তে কথা বললেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ সিদ্ধার্থ নিয়োগী।
কলকাতা: অ্যাডিনো-আতঙ্কে কার্যত থরহরিকম্প রাজ্য (West Bengal)। বেসরকারি হিসেব বলছে, গত ২ মাসে অ্যাডিনো ভাইারাসে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছে শতাধিক শিশু। খালি হয়েছে একের পর এক মায়ের কোল। একদিকে প্রশাসন যখন বলছে ভয়ের কারণ নেই, তখনও হাসপাতালের বাইরের ছবিটা ভয় ধরাচ্ছে সাধারণ মানুষের মনে। যদিও সরকারি তরফের বক্তব্যে বলা হয়েছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শিশু মৃত্যুর কারণ কো-মর্বিডিটি। তবু পরিস্থিতি সামাল দিতে কার্যত হিমশিম খেতে হচ্ছে সকলকেই।
তাহলে কোথায় ভুল হচ্ছে? সচেতনার অভাব? নাকি শিশুর খেয়াল রাখার ক্ষেত্রে অভিভাবকদের মর্জিমাফিক আচরণ? সমস্যার গোড়া কোথায়? এই নিয়েই এবিপি লাইভের সঙ্গে একান্তে কথা বললেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ সিদ্ধার্থ নিয়োগী।
অ্যাডিনোয় (Adenovirus) মৃত্যু প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলছেন, 'বড়দের মধ্যে দিয়েই সংক্রমিত হচ্ছে শিশুরা। বাইরে থেকে ফিরে বাড়ির বড়রা শিশুদের সংস্পর্শে আসছেন। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলক কম হওয়ায় বড়দের থেকে দ্রুত সংক্রমিত হচ্ছে শিশুরা। যার প্রভাব পরবর্তী ক্ষেত্রে ভয়াবহ আকার নিচ্ছে। কাজেই এই সময়ে পরিস্থিতি থেকে বাঁচার প্রথম ধাপ বড়দের সচেতন হওয়া। প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে ভিড়ে বের করবেন না আপনার খুদেকে। পাশাপাশি যে শিশুর অন্যান্য সমস্যা যেমন হার্টের অসুখ, ফুসফুসের সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে বিশেষ যত্নশীল হতে হবে অভিভাবকদের।
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই বিসি রায় হাসপাতালে একাধিক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। পর্যাপ্ত বেড না থাকারও অভিযোগ উঠেছে। এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিকর্তা বলছেন, 'রাজ্যের সমস্ত শিশুকেই যদি বিসি রায় হাসপাতালে ভর্তি করতে চাওয়া হয় সে ক্ষেত্রে চাপ বাড়বেই। তাহলে করনীয়? সমাধান হিসেবে ডাঃ সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলছেন, 'কোনও উপসর্গ দেখা মাত্রই শিশুকে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যান। কোনও উপসর্গ দেখা দিলে বাড়িতে নিজের মতো ওষুধ দিয়ে সময় নষ্ট করেই বাড়ছে সমস্যা। কাজেই বাড়িতে নিজের মর্জিমাফিক ওষুধ না দিয়ে কাছাকাছি যে কোনও হাসপাতালে নিয়ে যান'। তাঁর কথায়, 'গোটা রাজ্যের সমস্ত হাসপাতালে বাচ্চাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। পর্যাপ্ত বেডেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে। শিশু বিশেষজ্ঞরা পরিষেবায় রয়েছেন সারাদিন। কাজেই সচেতন হলে ভয়ের কারণ যে একেবারেই নেই সে কথা ফের একবার স্পষ্ট করেছেন তিনি।
আর কীভাবে সচেতনতা? স্বাস্থ্যকর্তার পরামর্শ, 'কোনও শিশুর জ্বর-সর্দি-কাশির মতো কোনও উপসর্গ থাকলে তাঁকে স্কুলে পাঠাবেন না। কারণ এক বাচ্চা থেকে অন্য বাচ্চার মধ্যে দ্রুত সংক্রমিত হয় এই বায়ুবাহিত রোগ'।
উল্লেখ্য, পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবং সচেতনতা বৃদ্ধিতে ইতিমধ্যেই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে।
স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকা
- ভিড় থেকে শিশুকে দূরে রাখুন।
- শিশুদের মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহার করার পরামর্শ
- হাসপাতালের সুপারের অনুমতি ছাড়া জেলা থেকে রেফার নয়
- ২৪ ঘণ্টার জন্য খোলা হেল্পলাইন (1800-313444-222) এবং টেলি মেডিসিন পরিষেবা। যে কোনও সমস্যায় যোগাযোগ করুন সেখানেই
আর কী বলছে গাইডলাইন
- শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাসে অস্বস্তি থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
- খাওয়াদাওয়া বা প্রস্রাবের পরিমাণ কমে গেলেও যেতে হবে চিকিৎসকের কাছে।
- জ্বর-সর্দি থাকলে, শিশুদের স্কুলে না পাঠানোরও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
- ৩ থেকে ৫ দিন টানা জ্বর থাকলে বা রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ৯২ শতাংশের কম থাকলে শিশুদের ভর্তি করতে হবে হাসপাতালে।
আরও পড়ুন: Adenovirus Pneumonia : নিউমোনিয়া মানেই কি অ্যাডিনো সংক্রমণ? বুঝবেন কীভাবে? কখন লক্ষণ ভয়ানক?
Check out below Health Tools-
Calculate Your Body Mass Index ( BMI )