Indira Gandhi: পেট থেকে চলকে পড়ছিল রক্ত, শাড়ির ভাঁজ থেকে ঝরছিল গুলি, কেমন ছিল ইন্দিরার শেষ মুহূর্ত, জানা গেল
Indira Gandhi Assassination: ১৯৮৪ সালের ৩১ অক্টোবর নিজের দেহরক্ষীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যান ইন্দিরা।
![Indira Gandhi: পেট থেকে চলকে পড়ছিল রক্ত, শাড়ির ভাঁজ থেকে ঝরছিল গুলি, কেমন ছিল ইন্দিরার শেষ মুহূর্ত, জানা গেল Indira Gandhi Assassination Doctor who operated the late PM reveals how the last few hours were Indira Gandhi: পেট থেকে চলকে পড়ছিল রক্ত, শাড়ির ভাঁজ থেকে ঝরছিল গুলি, কেমন ছিল ইন্দিরার শেষ মুহূর্ত, জানা গেল](https://feeds.abplive.com/onecms/images/uploaded-images/2023/07/12/b5123bb72433dc4a400f6046293aa5821689140190215338_original.jpg?impolicy=abp_cdn&imwidth=1200&height=675)
নয়াদিল্লি: রক্তে ভিজে গিয়েছে শাড়ি। ভাঁজে ভাঁজে তখনও আটকে গুলি। একটু নাড়াচাড়া হলেই ছড়িয়ে পড়ছে মেঝে। দেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীর (Indira Gandhi) জীবনের শেষ মুহূর্তকে এভাবেই বর্ণনা করলেন চিকিৎসক পি বেণুগোপাল (P Venugopal)। মৃত্যুর আগে ইন্দিরা গাঁধীর শরীরে শেষ অস্ত্রোপচার তাঁর হাতেই হয়েছিল। (Indira Gandhi Assassination)
১৯৮৪ সালের ৩১ অক্টোবর নিজের দেহরক্ষীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যান ইন্দিরা। রক্তাক্ত অবস্থায় দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়ন্সেস-এ নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেই সময় হাসাপতালে কর্মরত ছিলেন কার্ডিওলজিস্ট বেণুগোপাল। সম্প্রতি নিজের আত্মজীবনী ‘হার্টফেল্ট: আ কার্ডিয়াক সার্জন্স পায়োনিয়ারিং জার্নি’বইয়ে সেই দিনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন তিনি।
বেণুগোপাল জানিয়েছেন, হাসপাতালে তখন উপচে পড়ছে ভিড়। কান্না, চিৎকারে কান পাতা দায়। সবেমাত্র দায়িত্বগ্রহণ করা ডিরেক্টরের দিশাহারা অবস্থা। তিনিও বুঝে উঠতে পারছেন না কিছুই। গুলিতে ঝাঁঝরা ইন্দিরাকে নিয়ে প্রবেশ করে স্ট্রেচার। সর্বতো ভাবে তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন সকলে। পরিবারের সম্মতির অপেক্ষা না করেই অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয় ইন্দিরাকে। বেণুগোপাল অস্ত্রোপচার করেন নিজে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।
আরও পড়ুন: Congress: রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ ইস্যুতে কংগ্রেসের অস্ত্র 'সত্য়াগ্রহ'
১৯৯৪ সালে ভারতে প্রথম হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনের নজিরও বেণুগোপালেরই। ইন্দিরাহত্যার সময় AIIMS-এ কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের প্রধান ছিলেন। আত্মজীবনীতে তিনি জানিয়েছেন, রক্তে ভিজে গিয়েছিল ইন্দিরার শাড়ি। তার ভাঁজ থেকে মেঝেয় ঝরঝর করে পড়ছিল গুলি। O নেগেটিভ রক্তের জন্য তখন হন্যে হয়ে ঘুরছেন সকলে। তার মধ্যেই ইন্দিরার উত্তরাধীকারী কে হবেন, হাসপাতালে সেই আলোচনাও চলছিল।
ইন্দিরাকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দেখার অভিজ্ঞতা জানিয়ে বেণুগোপাল লেখেন, ‘শীর্ণকায় শরীরটি দেখে শিউড়ে উঠেছিলাম আমি। তলপট থেকে চলকে পড়ছিল রক্ত। নিজের রক্তেই পুরো ভিজে গিয়েছিলেন ইন্দিরা। মুখমণ্ডল ফ্যাকাশে হয়ে গিয়েছিল। মনে হচ্ছিল শরীর যেন রক্তশূন্য। কিন্তু রক্তক্ষরণ বন্ধই হচ্ছিল না। একটা সময় রক্তের স্রোত ঘিরে ফেলে শায়িত ইন্দিরাকে’।
নিজের বাসভবনেই দেহরক্ষীদের হাতে খুন হন ইন্দিরা। তাঁকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি ছোড়া হয়। এর মধ্যে মোট ৩০টি গুলিতে বিদ্ধ হন ইন্দিরা, যার মধ্যে ২৩টি গুলি তাঁর শরীর ফুঁড়ে বেরিয়ে যায়। শরীরে গেঁথে ছিল সাতটি গুলি। সেই অবস্থায় ইন্দিরাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে চার ঘণ্টা ধরে হয় অস্ত্রোপচার। এত রক্ত বেরিয়েছিল যে তিনবার স্ক্রাব পাল্টাতে হয়। কিন্তু তার পরও বাঁচানো যায়নি ইন্দিরাকে।
বেণুগোপাল জানিয়েছেন, অপারেশন থিয়েটার থেকে বেরিয়ে ইন্দিরার মৃত্যুর খবর জানাতে হতো তাঁকে। কিন্তু শক্তি সঞ্চয় করতে পারছিলেন না কোনও ভাবেই। দেশের অন্য প্রান্তে ছিলেন রাজীব গাঁধী। তাঁর আসার অপেক্ষা করছিলেন সকলে। নিজের কর্মজীবনে ৫০ হাজারেরও বেশি অস্ত্রোপচার করেছেন বেণুগোপাল। তাঁর দাবি, কয়েকটি গুলি লাগার পরও কোনও ভাবে যদি ইন্দিরাকে আড়াল করা যেত, বা ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেওয়া যেত, তাহলেও হয়ত বেঁচে যেতে পারতেন তিনি।
আত্মজীবনীতে বেণুগোপাল লেখেন, ‘ইন্দিরার গায়ে প্রথম গুলিটি লাগতেই চারপাশের লোকজন ছত্রখান হয়ে যান। তাঁকে একা ফেলে সকলে নিজেকে বাঁচাতে তৎপর হয়ে ওঠেন। তাতে খুনিরা আরও সাহস পেয়ে যায়। তাই মেশিন গান থেকে এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে শুরু করে। পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকেও গুলি ছোড়া হয়’। ইন্দিরার মৃত্যুর পর রাজীবকে প্রধানমন্ত্রী করা নিয়েও বিস্তর টানাপোড়েন হয় বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে নিজের রাজনৈতিক মতামত তুলে ধরার পরিবর্তে, দর্শক হিসেবেই চারপাশের পরিস্থিতি বর্ণনা করেন।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/metaverse-mid.png)