লক্ষ্য পড়ুয়াদের মনে আনন্দ দেওয়া, নতুন করে সেজে উঠেছে অশোকনগরের স্কুল
Ashoknagar Vidyasagar Bani Bhaban High School: পড়ুয়ারা যাতে ফের পড়ার আনন্দ খুঁজে পায়, সেটা নিশ্চিত করাই শিক্ষকদের লক্ষ্য।
সমীরণ পাল, অশোকনগর: করোনা আবহে দীর্ঘদিন বাড়িতে বসে থাকার ফলে মানসিকভাবে পিছিয়ে পড়া ছাত্র-ছাত্রীদের মনের জোর বাড়াতে অভিনব উদ্যোগ নিল উত্তর ২৪ পরগনা অশোকনগর বিদ্যাসাগর বাণী ভবন হাইস্কুল। নতুন করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে স্কুল। পাশাপাশি রবীন্দ্রসঙ্গীতেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। করোনা আবহে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল স্কুল। ফলে পড়ুয়াদের স্কুলে আসার অভ্যাস নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তারা যাতে ফের পড়ার আনন্দ খুঁজে পায়, সেটা নিশ্চিত করাই শিক্ষকদের লক্ষ্য।
এ মাসের ১২ তারিখ থেকে চালু হয়েছে স্কুল। অশোকনগর পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের এই স্কুলের গেট থেকে শুরু করে ক্লাসরুম সাজিয়ে তোলা হয়েছে। প্রধান শিক্ষক মনোজ ঘোষ জানিয়েছেন, ‘করোনা আবহে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। এখনও সব ক্লাসের পড়ুয়াদের স্কুলে আসার অনুমতি নেই। এর ফলে মানসিকভাবে পিছিয়ে পড়েছে ছাত্র-ছাত্রীরা, হতাশা বাড়ছে তাদের মনে। ক্লাস নাইন থেকে টুয়েলভ পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীরা ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে কোভিড বিধি মেনে ক্লাস করতে শুরু করেছে। পরে বাকিরাও স্কুলে আসবে। তাই ছাত্র-ছাত্রীদের কথা মাথায় রেখেই আমরা অশোকনগর বিদ্যাসাগর বাণী ভবন হাইস্কুল একটু অন্যরকমভাবে সাজিয়ে তুলেছি। ক্লাসরুমে থাকছে বিভিন্ন মনীষীদের বাণী সহ শিক্ষামূলক ছবি। প্রতিটি ক্লাসরুমে থাকছে সাউন্ড সেকশন। যেখানে টিফিন পিরিয়ড বা স্কুল শুরু হওয়ার আগে চলবে বিভিন্ন ধরনের রবীন্দ্রসঙ্গীত। ছাত্র-ছাত্রীরা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। গতিময় জীবন থেমে থাকে না। তাই দেওয়ালে আঁকা দূরপাল্লার ট্রেন। প্রতি মুহূর্তে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা দেওয়ালে আঁকা মনীষীদের বাণীর মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের মনে দাগ কাটবেন।’
এই স্কুলের সবজি বাগানেও রয়েছে অভিনবত্ব। করোনা আবহে যখন সবকিছু বন্ধ ছিল, তখন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মিলিত প্রচেষ্টায় তৈরি করেছেন সবজি বাগান। যে বাগানে উৎপাদিত সবজি ছাত্র-ছাত্রীদের মিড ডে মিলে ব্যবহার করা হবে।
বিদ্যাসাগর বাণী ভবন হাইস্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকরা ক্লাসের সময়ও বদলে দিয়েছেন। ক্লাসের সময় বাড়িয়ে ৪৫ মিনিটের পরিবর্তে করা হয়েছে এক ঘন্টা। তবে বর্তমানে সারাদিনে ৮টির পরিবর্তে ৬টি করে ক্লাস হচ্ছে। স্কুলগেটে রাখা হয়েছে স্যানিটাইজার। সমস্ত রকম কোভিড বিধি মেনেই ছাত্র-ছাত্রী থেকে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা স্কুলে প্রবেশ করছেন।
এখনও স্কুলে যাওয়ার সুযোগ না পেলেও, নতুন করে সেজে ওঠা স্কুল নিয়ে নিচু ক্লাসের পড়ুয়াদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী গার্গী ভট্টাচার্য, ছাত্র প্রীতম দে জানিয়েছে, ‘উঁচু ক্লাসের দাদা, দিদিদের থেকে শুনেছি নতুন করে স্কুল সাজানো হয়েছে। অধীর আগ্রহে তাই অপেক্ষা করছি কবে আমাদের জন্য উন্মুক্ত হবে ক্লাসরুম।’