Russia Ukraine War: 'থামুক গোলা-বন্দুকের গর্জন', সাত দিনে ১০ লক্ষ মানুষ ঘরছা়ড়া, ইউরোপের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে শরণার্থী সঙ্কট
Russia Ukraine War: শরণার্থী সঙ্কট থেকে অর্থনৈতিক সঙ্কট, ঝুঁকি জেনেও এখনও পর্যন্ত সমঝোতার কোনও ইঙ্গিত মেলেনি। বরং বৃহস্পতিবার সকালে ইউক্রেনে আক্রমণের তীব্রতা আরও বাড়িয়েছে রাশিয়া।
কিভ: যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতির অঙ্ক কোথায় গিয়ে ঠেকবে, তা নিয়ে প্রমাদ গুনছে গোটা বিশ্ব। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের (Russia Ukraine War) আবহে শরণার্থী সঙ্কট (Ukraine Refugee Crisis) উদ্বেগ বাড়াচ্ছে সকলের। কারণ বিগত এক সপ্তাহে ইতিমধ্যেই ১০ লক্ষ মানুষ ইউক্রেন ছেড়ে পালিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। আগামী দিনে তা আরও বাড়ার সম্ভাবনা। তাই এই বিপুল সংখ্যক শরণার্থীকে কোথায় ঠাঁই দেওয়া হবে তা নিয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে আন্তর্জাতিক শরণার্থী এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলির।
গত বৃহস্পতিবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে সেনা অভিযানের ঘোষণা করার পর থেকে ধ্বংসলীলা এবং হতাহত লাগাতার বেড়েই চলেছে (Russia Ukraine War News)। যুদ্ধ শুরুর তিন দিন পর অর্থাৎ রবিবার পর্যন্ত ৩ লক্ষ ৬৮ হাজার মানুষ ইউক্রেন থেকে পালিয়ে পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি, রোমানিয়া, মলদোভা এবং আশেপাশের দেশগুলিতে আশ্রয় নেন। এক দিনের মধ্যে সেই সংখ্যা বেড়ে হয় ৫ লক্ষ। এ দিন যুদ্ধ যখন অষ্টম দিনে রাখার আগেই ইউক্রেন পালানো শরণার্থীর সংখ্যা ১০ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের শরণার্থী সংগঠনের (The United Nations Refugee Agency) প্রধান ফিলিপো গ্রান্দি। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘মাত্র সাত দিনে ইউক্রেন থেকে দল বেঁধে পড়শি দেশগুলিতে ১০ লক্ষ শরণার্থী প্রবেশের সাক্ষী হলাম। ইউক্রেনের ভিতরে আরও লক্ষ লক্ষ মানুষ আটকে রয়েছেন। বন্দুকের গর্জন এ বার থেমে যাওয়া প্রয়োজন, যাতে প্রাণ বাঁচাতে মানবিক সাহায্যটুকু পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়।’
In just seven days we have witnessed the exodus of one million refugees from Ukraine to neighbouring countries.
— Filippo Grandi (@FilippoGrandi) March 2, 2022
For many millions more, inside Ukraine, it’s time for guns to fall silent, so that life-saving humanitarian assistance can be provided.
আরও পড়ুন: Russia Ukraine War: রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্যে আজ ফের আলোচনায় বসছে রাশিয়া ও ইউক্রেন
২০২০-র শেষ নাগাদ বিশ্বব্যাঙ্কের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ইউক্রেনের মোট জনসংখ্যা ৪ কোটি ৪০ লক্ষ। সেই নিরিখে ফিলিপো যে পরিসংখ্যান দিয়েছেন, তা ইউক্রেনের মোট জনসংখ্যার ২ শতাংশ, যাঁরা মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে দেশ ছেড়েছেন। আগামী কয়েক দিনে আরও ৪০ লক্ষ মানুষ ইউক্রেন থেকে সীমান্ত পেরিয়ে অন্য দেশে ঢোকার চেষ্টা করবেন বলে অনুমান রাষ্ট্রপুঞ্জের। শরণার্থী সংগঠনের মুখপাত্র জুং-আ-গেদিনি-উইলিয়ামস জানিয়েছেন, বুধবার মধ্যরাত পর্যন্তই ১০ লক্ষ ইউক্রেনীয় দেশ ছেড়েছেন।
#UPDATE One million refugees have fled Ukraine in the week since Russia's invasion, UN refugee agency says.
— AFP News Agency (@AFP) March 3, 2022
"In just seven days we have witnessed the exodus of one million refugees from Ukraine to neighbouring countries," UN High Commissioner for Refugees Filippo Grandi tweets pic.twitter.com/HaYysI7EoR
তবে শরণার্থী সঙ্কট থেকে অর্থনৈতিক সঙ্কট, ঝুঁকি জেনেও এখনও পর্যন্ত সমঝোতার কোনও ইঙ্গিত মেলেনি। বরং বৃহস্পতিবার সকালে ইউক্রেনে আক্রমণের তীব্রতা আরও বাড়িয়েছে রাশিয়া। তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছে আন্তর্জাতিক মহল।
এর আগে, ২০১১-র গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত সিরিয়া থেকে ৫৭ লক্ষের মতো শরণার্থী বেরিয়ে আসেন। কিন্তু সে বার শরণার্থীর সংখ্যা ১০ লক্ষে পৌঁছতে সময় লেগেছিল তিন মাস। এ বার তা হতে সময় লেগেছে মাত্র এক সপ্তাহ। এখনও পর্যন্ত ইউক্রেনের প্রতিবেশি দেশগুলি শরণার্থী সঙ্কটে সমব্যথী মনোভাবই দেখিয়েছে। কিন্তু মানুষের ঢল বাড়তে থাকলে তাদের পক্ষেই সকলকে ঠাঁই দেওয়া সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জ।