Science News: প্রাচীন সভ্যতার জন্মদাত্রী, এখন পায়ে হেঁটেই পেরনো যায়, বিলুপ্তির পথে ইরাকের টাইগ্রিস নদী
Tigris River Faces Existential Crisis: ভূগোলের বইয়ে ইরাকের টাইগ্রিস নদীর কথা ঘুরেফিরে এসেছে বার বার।

নয়াদিল্লি: প্রাচীন মেসোপটেমিয়া সভ্যতার জন্ম দিয়েছিল। পশ্চিম এশিয়ার অর্থনীতিতে আজও আবর্তিত হচ্ছে তাকে ঘিরেই। কিন্তু সেই টাইগ্রিস নদীই এখন বিলুপ্তির পথে। গত তিন দশকে নদীর জলপ্রবাহ তলানিতে এসে ঠেকেছে। কোথাও কোথাও নদীর জলপ্রবাহ কমে একধাক্কায় ৩৩ শতাংশ কমে গিয়েছে বলে খবর। (Tigris River Faces Existential Crisis)
ভূগোলের বইয়ে ইরাকের টাইগ্রিস নদীর কথা ঘুরেফিরে এসেছে বার বার। দক্ষিণ পশ্চিম তুরস্ক থেকে উৎপত্তি টাইগ্রিস নদীর। ইরাকের বড় বড় শহর ছুঁয়ে শেষে ইউফ্রেটিসের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। এই টাইগ্রিস নদীকে ঘিরেই একসময় গড়ে উঠেছিল মেসোপটেমিয়া সভ্যতা। আজও প্রায় ২ কোটি ইরাকি নাগরিককে জলের জোগান দেয় টাইগ্রিস, যা পানীয় জল হিসেবে ব্যবহৃত হয়, সেচকার্যও চলে আবার শিল্প-কারখানাও চলে। (Science News)
কিন্তু দশকের পর দশক ধরে চলে আসা যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা, পরিকাঠামোগত বিপর্যয় এবং সর্বোপরি দূষণের কারণে সেই টাইগ্রিস নদীর অস্তিত্বই এখন বিপন্ন। তুরস্কের বাঁধগুলিও সঙ্কট বাড়িয়ে তুলেছে। বাগদাদে আগে যে পরিমাণ জলের সরবরাহ ছিল, এখন তা একধাক্কায় কমে গিয়েছে ৩৩ শতাংশ।
This is what the ancient biblical Tigris river looked like today 😭
— Dr Deema (@withdrdeema) October 23, 2025
Tigris is the bloodline of the Mesopotamian soil and people. The river upon which humanity’s first civilisation rose, and the source of the invention of writing on clay tablets; is dying. pic.twitter.com/W24dwkPkZM
গত এক শতকের হিসেবে এই মুহূর্তে খরা সর্বগ্রাসী আকার ধারণ করেছে ইরাকে। ২০৩৫ সাল আসতে আসতে চাহিদার তুলনায় জলের জোগান কমে যাবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ২০২৫ সালের গ্রীষ্মেই টাইগ্রিসের জল এতটা নেমে গিয়েছিল, দিব্যি হেঁটে পার হচ্ছিলেন মানুষজন। ফলে প্রমাদ গুনতে শুরু করে দিয়েছেন অনেকেই।
টাইগ্রিসের এমন অবস্থার জন্য দূষণকেও দায়ী করা হচ্ছে। নয়ের দশকে যে ভয়ঙ্কর যুদ্ধ শুরু হয় ইরাকের বুকে, তার ক্ষতও বইতে হচ্ছে টাইগ্রিসকে। ওই যুদ্ধের ফলে ইরাকের জল সরবরাহ ও নিকাশি পরিকাঠামো একেবারে গুঁড়িয়ে যায়, যা আজও পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে ইরাকের দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলের শহুরে এলাকার মাত্র ৩০ শতাংশ বাড়িতেই নিকাশি ব্যবস্থা রয়েছে। গ্রামাঞ্চলে এই হার মাত্র ১.৭ শতাংশ।
A grave has appeared inside the Mosul Dam in Iraq after the Tigris River’s water level fell to catastrophic levels. pic.twitter.com/mJx8ry1Eyb
— interestingasfuck (@int_asf) August 28, 2025
২০১৮ সালে দূষিত জলপান করে বসরা অঞ্চলে ১ লক্ষ ১৮ হাজার মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হন। ২০২২ সালের একটি সমীক্ষায় দেখা যায়, বাহদাদের অধিকাংশ এলাকাতেই জলের গুণমান ‘খারাপ’ এবং ‘অতি খারাপ’। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, টাইগ্রিস নদীতে জলপ্রবাহ যেমন কমছে, তেমনই দূষণ বাড়ছে। ফলে সঙ্কট আরও বাড়ছে দিনে দিনে। ইরাকের ২ কোটি মানুষ টাইগ্রিস অববাহিকায় বাস করেন। নদীর জলই পান করেন তাঁরা,ওই জলেই সেচকার্য, শিল্প-কারখানা চলে, বিদ্যুৎও উৎপাদন করা হয়।
ইরাকে সেচব্যবস্থা একেবারেই সংগঠিত নয়। ফলে ভূগর্ভস্থ জলও তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। বিপদ আরও বাড়িয়ে তুলেছে জলবায়ু সঙ্কট। বৃষ্টির পরিমাণ কমে ৩০ শতাংশে এসে ঠেকেছে। এমন খরা আগে দেখেনি ইরাক। তাই যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট যে, টাইগ্রিসের অস্তিত্ব বিপন্ন। এখনই পদক্ষেপ না করলে প্রাচীন সভ্যতার আঁতুড়ঘরকে বাঁচানো যাবে না। রয়ে যাবে ধূ ধূ মরুভূমি।






















