এক্সপ্লোর
Advertisement
India vs Australia, Adelaide Test Result: নেতিবাচক কৌশলে ভরাডুবি, অ্যাডিলেড বিপর্যয়ের পর শাস্ত্রী-কোহলিকে নিয়েই প্রশ্ন প্রাক্তনদের
কোচ হিসাবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত মেয়াদ ছিল শাস্ত্রীর। যদিও করোনা আবহে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ না হওয়ায় তাঁর সঙ্গে নতুন করে চুক্তি করা হয়নি। কাজ চালাচ্ছেন শাস্ত্রীই। যদিও তাঁকে সরানোর দাবি বিভিন্ন মহলে ক্রমশ জোরাল হচ্ছে।
কলকাতা: লর্ডস থেকে অ্যাডিলেড। দূরত্ব প্রায় সাড়ে দশ হাজার মাইল। ১৯৭৪ থেকে ২০২০। ব্যবধান ৪৬ বছরের।
শনিবার অবশ্য মিলেমিশে একাকার হয়ে গেল ভারতীয় ক্রিকেটের দুই কলঙ্কিত অধ্যায়। ১৯৭৪ সালের জুন মাসে লর্ডসে ইংল্যান্ডের কাছে মাত্র ৪২ রানে অল আউট হয়ে গিয়েছিল অজিত ওয়াড়েকর-সুনীল গাওস্করের ভারত। আর শনিবার অ্যাডিলেডে বিরাট কোহলির টিম ইন্ডিয়ার ইনিংস শেষ হল তার চেয়েও ৬ রান কম করে। ৩৬ রানে!
অ্যাডিলেডে বিপর্যয় দেখে ক্ষুব্ধ প্রাক্তন ক্রিকেটারেরা। পাশাপাশি ভারতীয় দলের কোচ রবি শাস্ত্রী ও অধিনায়ক কোহলির স্ট্র্যাটেজির কড়া সমালোচনাও করছেন।
জাতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক দিলীপ বেঙ্গসরকার প্রশ্ন তুলছেন দলের নেতিবাচক মানসিকতা নিয়ে। বলছেন, ‘প্যাট কামিন্স-জশ হ্যাজলউডরা যখন বল হাতে দাপট দেখাচ্ছে, তখন কোনও প্ল্যান বি চোখে পড়ল না। এত শট খেলার ছটফটানি কেন! টেস্ট ক্রিকেটে একটা কথা আছে। বল খেলার চেয়েও বল ছাড়া একজন ব্যাটসম্যানের চারিত্রিক দৃঢ়তার বেশি বড় প্রমাণ। সেটা ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দেখলাম না। কৌশলগত ব্যর্থতা এই বিপর্যয়ের অন্যতম বড় কারণ।’
প্রায় একই সুর গুণ্ডাপ্পা বিশ্বনাথের গলায়। জাতীয় দলের প্রাক্তন তারকা ক্রিকেটার বলছেন, ‘ভয়ঙ্কর ব্যাটিং। ১৯৭৪-এ ৪২ রানে সেই অল আউট হয়ে যাওয়ার অভিশপ্ত অধ্যায় এখনও ভুলতে পারিনি। তবে সেই কলঙ্ককেও ছাপিয়ে গেল শনিবারের লজ্জা। একটা সেশনে ম্যাচ হেরে গেল ভারত, এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না।’ যোগ করলেন, ‘শাস্ত্রী-কোহলি কেন কোনও বিকল্প কৌশল তৈরি রাখতে পারেনি জানি না। ’
প্রাক্তন ক্রিকেটার ও এক সময়কার জাতীয় নির্বাচক সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায় শাস্ত্রী-কোহলির ভূমিকায় চূড়ান্ত হতাশ। বলছেন, ‘অধিনায়ক বিরাট কোহলি ও কোচ রবি শাস্ত্রীকে আমি দশে শূন্য দেব। যশপ্রীত বুমরাকে কেন নাইট ওয়াচম্যান করে পাঠাবে! অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারেরা বলে, প্রধান ব্যাটসম্যানই যদি খেলতে না পারে, তাহলে কোনও বোলার কী করে দিনের খেলার শেষ লগ্নে কঠিন পরিস্থিতিতে ব্যাট করবে! ওরা নৈশপ্রহরী পাঠানোর কৌশলে বিশ্বাসী নয়। আর ভারত যদি কাউকে নৈশপ্রহরী করে পাঠায়ও, তাহলে বুমরা কেন! প্রস্তুতি ম্যাচে হাফসেঞ্চুরি করেছে বলে ও ব্যাটসম্যান হয়ে গেল! কেন আর অশ্বিনকে পাঠানো হবে না। যার ব্যাটের হাত ভাল। কেন হনুমা বিহারীকে পাঠানো হবে না। ওইখানেই তো বিপক্ষ শিবিরে বার্তা পৌঁছে দেওয়া হল যে, আমরা ভয় পাচ্ছি। এই নেতিবাচক মানসিকতা কেন!’
কোচ হিসাবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত মেয়াদ ছিল শাস্ত্রীর। যদিও করোনা আবহে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ না হওয়ায় তাঁর সঙ্গে নতুন করে চুক্তি করা হয়নি। কাজ চালাচ্ছেন শাস্ত্রীই। যদিও তাঁকে সরানোর দাবি বিভিন্ন মহলে ক্রমশ জোরাল হচ্ছে। সম্বরণ বলছেন, ‘কোচ শাস্ত্রীর ভবিষ্যৎ বোর্ড ঠিক করবে। তবে কোচের সঙ্গে সিরিজ থেকে সিরিজ পর্যন্ত চুক্তি করা উচিত। বেশিদিনের চুক্তিতে থাকলে কোচের মধ্যেও আত্মতুষ্টি এসে যায়। অস্ট্রেলিয়াকে দেখুন। জাস্টিন ল্যাঙ্গারের সঙ্গে সিরিজ ধরে ধরে চুক্তি করে।’
সম্বরণ যোগ করছেন, ‘আমরা এতদিন বলতাম, সামার অফ ৪২। এবার তো ৩৬ অল আউট নিয়েও চর্চা হবে। ভারতের ন’জনের মধ্যে সাতজন ব্যাটসম্যান উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা পরিকল্পনামাফিক অফ স্টাম্প করিডরে বল করে গিয়েছে। ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা তা সামলাতে পারেনি। বিরাট যেভাবে আউট হল, সেই বলে ও বাউন্ডারি মারে। কিন্তু এদিন হল না। বিরাট, পূজারা, রাহানের পর বাকিদের কথা না বলাই ভাল। ভারতের এই সিরিজে ঘুরে দাঁড়ানোর আর কোনও সুযোগ রয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। এই ব্যাটিংয়ের কোনও ব্যাখ্যা হয় না। লজ্জা বললে কম বলা হয়। ম্যাচে দুদিন চালকের আসনে ছিল ভারত। তৃতীয় দিন সকালের একটা ৪০ মিনিটের সেশনে সব কিছু তছনছ হয়ে গেল।’
অধিনায়ক কোহলির ভূমিকা নিয়েও হতাশা প্রকাশ করেছেন সম্বরণ। বলেছেন, ‘প্রথম টেস্টের পর কোহলির ফিরে আসার ঘটনা গোটা শিবিরের আত্মবিশ্বাসকে নষ্ট করে দিয়েছে। সন্তান জন্মের জন্য কেউ দেশের প্রতিনিধিত্ব না করে ফিরে আসছে, আমি ক্রিকেট মাঠে এরকম কাউকে দেখেছি বলে মনে করতে পারছি না। রোহন গাওস্করের জন্মের সময় সুনীল গাওস্কর প্রায় আড়াই মাসের সফরে ওয়েস্ট ইন্ডিজে খেলছিল। দেশে ফিরে রোহনকে দেখেছে। ধোনিও তাই করেছে।’
লজ্জাজনক হারের পর শাস্ত্রী-কোহলিদের নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি দলের বাকি ক্রিকেটারদের মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন প্রাক্তন ক্রিকেটার কারসন ঘাউড়ি। তিনি বলছেন, ‘ময়ঙ্ক অগ্রবাল, হনুমা বিহারী, ঋদ্ধিমান সাহাদের সামনে এই ম্যাচেই তো কিছু করে দেখানোর সুযোগ ছিল। একটা হাফসেঞ্চুরি ম্যাচের রং বদলে দিতে পারত। ময়ঙ্ক-ঋদ্ধিরা সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারল না।’
সম্বরণ আবার এই হতশ্রী পারফরম্যান্সের নেপথ্যে আইপিএলের কুপ্রভাব দেখছেন। বলছেন, ‘আইপিএলের কুপ্রভাব স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। ব্যাটসম্যানেরা প্রচুর শট খেলছে। এত শট কেন! টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট খেলতে নামছে। কেন টেস্ট সিরিজের আগে চারদিনের ম্যাচ খেলবে না কোহলিরা!’
রোহিত শর্মার অন্তর্ভুক্তিও ছবিটা খুব একটা বদলাবে না বলেই মত প্রাক্তন ক্রিকেটারদের।
খেলার (Sports) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে
আরও দেখুন
Advertisement
ট্রেন্ডিং
Advertisement
Advertisement
সেরা শিরোনাম
ক্রিকেট
জেলার
জেলার
জেলার
Advertisement