Humayun Kabir: 'সেই মন্ত্রীদের জিজ্ঞাসা করুন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলন সঠিক ছিল না ?', কসবকাণ্ডে প্রশ্ন খোদ TMC বিধায়কের
TMC News: বিভিন্ন ইস্য়ুতে দলের উল্টোপথে হেঁটে হুমায়ন কবীরের এই অবস্থান কি রাজনৈতিকভাবেও বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ?

উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, পূর্ণেন্দু সিংহ ও সুদীপ্ত আচার্য, কলকাতা : একজন শিক্ষকের ওপর যেভাবে লাথি চালিয়েছে সেটা কখনই সমর্থনযোগ্য নয়। কসবায় DI অফিসের ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন হুমায়ুন কবীর। যেখানে শিক্ষামন্ত্রী থেকে পুরমন্ত্রী শিক্ষকদের DI অফিসে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন, সেখানে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুললেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক। এদিন বিরোধী থাকাকাকালীন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনেও, চাকরিহারাদের পাশে দাঁড়ান তৃণমূল বিধায়ক।
কসবায় DI অফিসে চাকরি চাইতে গিয়ে পুলিশের লাথি জুটেছে চাকরিহারাদের কপালে ! সেইসঙ্গে লাঠির বাড়ি-ধাক্কা! কিন্তু এমন ঘটনা ঘটার পরও শিক্ষামন্ত্রী থেকে শাসকদলের সাংসদ-বিধায়ক পাল্টা চাকরিহারাদের প্রশ্ন করছেন, তাঁরা DI অফিস গেছিলেন কেন।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য় বসু বলেন, "ডিআই অফিসে গেছিলেন কেন?"
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষেরও প্রশ্ন, "DI অফিসে গেছেন কেন?"
পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম আবার বলেন, "শিক্ষা দফতরের DI অফিস দখল করতে যাবেন কেন?"
কিন্তু এই ইস্যুতে দলের উল্টোপথেই হাঁটলেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। বিরোধী থাকাকাকালীন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে, চাকরিহারাদের ডিআই অফিস অভিযানের পাশে দাঁড়ালেন তিনি। হুমায়ুন কবীর বলেন, "এই যে মন্ত্রীরা বলছেন, সেই মন্ত্রীদের জিজ্ঞাসা করুন তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই আন্দোলন সঠিক ছিল না ? যখন কেউ ভিক্টিম হন বা অত্যাচারিত হন, যখন কেউ বঞ্চিত হন, বঞ্চিত মানুষ সবসময় সরকারের নিয়ম মেনে আন্দোলন করবেন...এমন ব্যাপার নয়।"
শিক্ষক পেটানোয় পুলিশের সমালোচনা তো করলেনই, দাবি তুললেন অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও। হুমায়ুন কবীর বলেন, "একজন শিক্ষককে যে আচরণ করেছেন, আমি কলকাতা পুলিশের কমিশনারকে বলব আরও উনি আরও বেশি এই ব্যাপারটাকে দেখা উচিত। যে অফিসার এটা করেছেন তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।"
তবে এই ইস্য়ুতে হুমায়ুন কবীর যে তৃণমূলের মধ্য়ে সংখ্য়ালঘু, তা ফের স্পষ্ট হয়ে গেছে বাঁকুড়ার তৃণমূল সাংসদ অরূপ চক্রবর্তীর কথা থেকে। চাকরিহারাদের একাংশকে সিপিএম বলে দাগিয়ে দিয়েছেন তিনি!
বাঁকুড়ার তৃণমূল সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী বলেন, "বিজেপি ভাবছিল, কিছু সিপিএমের শিক্ষকরা DI অফিসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তারা বাংলায় অশান্তি ছড়াবার চেষ্টা করবেন। কান খুলে শুনে রাখুন, তৃণমূল কংগ্রেসের ধৈর্য আছে। এক দিনে আপনাদের বাংলা ছাড়া করে দেবে। বেশি বাড়াবাড়ি করবেন না। সিপিএম-বিজেপির কথায় আপনারা নাচবেন না। ওরা আপনাদের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করছেন।"
একধাপ এগিয়ে চাকরিহারাদের আন্দোলনের নেপথ্য়ে সিপিএম-বিজেপির সঙ্গে মাওবাদীদেরও জুড়ে দিয়েছেন নারায়ণগড়ের তৃণমূল বিধায়ক সূর্যকান্ত অট্ট। তিনি বলেন, "বাংলার সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলাকে ভেঙে দেওয়া, তাঁদেরই চক্রান্ত। তাঁদের পিছনে বিজেপি ও মাও, সিপিএম।"
যদিও চাকরিহারাদের আন্দোলন প্রসঙ্গে দলের থেকে সম্পূর্ণভিন্ন অবস্থানেই অনড় থাকছেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক। তিনি বলেন, "যদি সর্ষের ভিতরে ভূত না থাকত, যদি এই ধরনের অযোগ্যদের যোগ্য হিসেবে মাপকাঠিতে প্যানেলে না নিয়ে আসত তাহলে তো এই ধরনের ঘটনার কোনও সম্ভাবনাই ছিল না। আর কে দাস নামে এক ভদ্রলোক অনডিউটি একজন শিক্ষককে যেভাবে তার বুট পরা অবস্থায় সজোরে লাথি চালিয়েছে, এটা মোটেই সমর্থনযোগ্য নয়।"
বিভিন্ন ইস্যুতে দলের উল্টোপথে হেঁটে হুমায়ন কবীরের এই অবস্থান কি রাজনৈতিকভাবেও বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ?
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
