West Burdwan: স্বস্তি দিয়ে জল ছাড়ার পরিমাণ কমাল দুর্গাপুর ব্যারাজ
আজ সকালে ১ লক্ষ ৫৪ হাজার ৫০০ কিউসেক করে জল ছাড়া হয়েছে...
মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: ডিভিসি-র ছাড়া জলে রাজ্যের একাধিক জেলায় তৈরি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। এই পরিস্থিতিতে কিছুটা স্বস্তি দিয়ে জল ছাড়ার পরিমাণ কমাল দুর্গাপুর ব্যারাজ।
আজ সকাল ৭টা পর থেকে ১ লক্ষ ৫৪ হাজার ৫০০ কিউসেক করে জল ছাড়া হচ্ছে। খবর সেচ দফতর সূত্রে। গতকাল সন্ধেয় ১ লক্ষ ৮০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছিল দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে। আজ প্রায় ২৫ হাজার কিউসেক কমানো হল জল ছাড়ার পরিমাণ।
গতকাল বৃষ্টি একটু কমার পর দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ার পরিমাণও কমানো হয়। সেচ দফতর সূত্রে খবর, গতকাল সকালে দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে ধাপে ধাপে জল ছাড়ার পরিমাণ কমানো হয়েছে। সকাল ১০টা নাগাদ ১ লক্ষ ৮৯ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছিল।
গতকাল সন্ধে ৬টা পর্যন্ত বাংলা লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের মাইথন থেকে এক লক্ষ ১৫ হাজার কিউসিক এবং পাঞ্চেৎ ৩৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়।
তার আগে, গত পরশু, বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে ২ লক্ষ ৩১ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়। ওইদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত ১ লক্ষ ৪১ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছিল। সেচ দফতর জানায়, বুধবার মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে ৩২ হাজার কিউসেক জল আসে।
পাশাপাশি, প্রতিবেশি ঝাড়খণ্ড রাজ্য ও পশ্চিম বর্ধমান জেলায় গত ২ দিন ধরে লাগাতার বৃষ্টি চলায় দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে ধাপে ধাপে বাড়ানো হয় জল ছাড়ার পরিমাণ।
ডিভিসি-র ছাড়া জলে জেলায় জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় ফের একবার ম্যান মেড বন্যার অভিযোগে সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকালই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যদি বৃষ্টির জন্য আমাদের বন্যা হত, তাহলে আমরা এটা বুঝতাম, যে বৃষ্টি বেশি হচ্ছে। সেটাকে আমরা সামলাচ্ছি। কিন্তু, বন্যা তো আল্টিমেটলি হচ্ছে জল ছাড়ার জন্য। ম্যান মেড ফ্লাড।
মুখ্যমন্ত্রী ডিভিসি’র বিরুদ্ধে আরও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ঝাড়খণ্ড রাজ্য থেকে, ওদের যেহেতু অনেক বৃষ্টি হয়েছে, এবং আসানসোলে বৃষ্টির পরিমাণটা প্রায় ৩৪৫ মিলিমিটার ছিল। কখনও এত বৃষ্টি হয়নি। ঝাড়খণ্ড রাজ্যে যেহেতু অনেক বৃষ্টি হয়েছে, ওরা আমাদের না জানিয়ে, রাত তিনটের সময়, আসানসোলে জল ছেড়ে দেয়। আসানসোল, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া। এবং তারপর কাল আবার ডিভিসি থেকে এক লক্ষ কিউসেকের ওপর জল ছেড়ে দিয়েছে। প্রবলেম হচ্ছে যেটা, ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি হলে, আমাদের ফেস করতে হচ্ছে। বিহারে বৃষ্টি হলে, আমাদের ফেস করতে হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে পাল্টা জবাব দিয়েছেন ডিভিসি-র প্রাক্তন আধিকারিক। সংস্থার প্রাক্তন চিফ ইঞ্জিনিয়র শঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মুখ্যমন্ত্রী যা বলছে ঠিক নয়। রাতের অন্ধকারে ওইভাবে কেউ জল ছাড়ে না। সেচ দফতর তো সাবধানতা নিতে পারত। ম্যান মেড ঠিক নয়। ডিভিসি না বলে ছেড়েছে, এমন নয়।
ডিভিসি’র পাশে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেছে বিজেপি-ও। তাদের দাবি, ডিভিসি আগেই জল ছাড়ার কথা জানিয়েছিল। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, অনেক আগে চিঠি দিয়েছে ডিভিসি, প্রমাণ আছে, দেখাতে পারি।
আরও পড়ুন: ভেঙে পড়েছে ৫ হাজার কাঁচাবাড়ি, বাঁধ ভেঙে জলমগ্ন আরামবাগের ১৬টি ওয়ার্ড